যারাই কিয়ামত, আখিরাত, কবর ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, তাদের অধিকাংশের মুখেই এ কথাটি শুনতে পাওয়া যায় যে, হাদিসে এসেছে, কবর প্রতিদিন মানুষকে ডেকে বলে, আমি হলাম নির্জন ঘর, আমি পোকা-মাকড়ের ঘর, আমি মাটির ঘর। এভাবে বিভিন্ন বক্তা, পির ও আলোচকরা শ্রোতাদের অন্তরে কবর ও আখিরাতের ভয় ঢুকানোর চেষ্টা করেন। কবরের ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা অবশ্যই ভালো, তবে আলোচনায় লক্ষ্য রাখতে হবে, এতে যেন কোনো জাল বা মারাত্মক দুর্বল হাদিস এসে না যায়। নচেৎ উপকারের চাইতে ক্ষতিই বেশি হবে। কবরের আহবান বা কথা বলা-সংক্রান্ত যে সকল হাদিস বলা হয়ে থাকে, তার সবগুলোই জাল কিংবা অত্যধিক দুর্বল, যা কোনো ক্ষেত্রে এবং কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ব্যাপারে হাদিসের সুবিশাল ভাণ্ডারে গ্রহণযোগ্য ও বিশুদ্ধ কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। আমরা এসংক্রান্ত তুলনামূলক ভালো ও প্রসিদ্ধ তিনটি হাদিস উল্লেখ করে তার প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরছি। এতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর অন্যান্য হাদিসগুলোর অবস্থা তো আরও ভয়াবহ। ১ নং হাদিস : حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ وَهُوَ ابْنُ مَدُّوَيْهِ، قَالَ: حَدَّثَنَا القَاسِمُ بْنُ الحَكَمِ العُرَنِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ الوَلِيدِ الوَصَّافِيُّ، عَنْ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ: دَخَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُصَلاَّهُ فَرَأَى نَاسًا كَأَنَّهُمْ يَكْتَشِرُونَ قَالَ: أَمَا إِنَّكُمْ لَوْ أَكْثَرْتُمْ ذِكْرَ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ لَشَغَلَكُمْ عَمَّا أَرَى، فَأَكْثِرُوا مِنْ ذِكْرِ هَاذِمِ اللَّذَّاتِ الْمَوْتِ، فَإِنَّهُ لَمْ يَأْتِ عَلَى القَبْرِ يَوْمٌ إِلاَّ تَكَلَّمَ فِيهِ فَيَقُولُ: أَنَا بَيْتُ الغُرْبَةِ وَأَنَا بَيْتُ الوَحْدَةِ، وَأَنَا بَيْتُ التُّرَابِ، وَأَنَا بَيْتُ الدُّودِ. ‘আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, (একদা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে এসে দেখতে পেলেন, কিছু লোক হাসাহাসি করছে। তিনি বললেন, ওহে! তোমরা যদি জীবনের স্বাদ ছিন্নকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করতে তাহলে আমি তোমাদেরকে যে অবস্থায় দেখছি তা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে। তোমরা জীবনের স্বাদ ছিন্নকারী মৃত্যুকে খুব বেশি করে স্মরণ করো। কেননা, কবর প্রতিদিন দুনিয়াবাসীকে সম্বোধন করে বলতে থাকে, আমি নির্জন কুটির, আমি প্রবাসী মুসাফিরের বাড়ী, আমি মাটির ঘর, আমি পোকা-মাকড় ও কীট-প্রতঙ্গের আস্তানা।’ (সুনানুত তিরমিজি : ৪/২২০, হা. নং ২৪৬০) এ হাদিসটি জইফ জিদ্দান বা অত্যধিক দুর্বল। কেননা, এ হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে উবাইদুল্লাহ বিন অলিদ ওসসাফি নামক একজন পরিত্যক্ত ও দুর্বল বর্ণনাকারী আছে। এছাড়াও আতিয়্যা নামক বর্ণনাকারীটি দুর্বল এবং মুদাল্লিস। তাই মুহদ্দিসদের নিকট এ হাদিসটি অত্যাধিক দুর্বল, যা কোনো ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য নয়। বিস্তারিত দেখুন- তাহজিবুত তাহজিব : ৭/৫৫, তাখরিজুল ইহইয়া : ১/৪০০, আল মাকাসিদুল হাসানা : পৃ. নং ৩৫৯, আল-ফাওয়ায়িদুল মাজমুআ : পৃ. নং ২৬৯, আস-সিলসিলাতুজ জইফা ওয়াল-মওজুআ : পৃ. নং ১০/৭৪৯ ২ নং হাদিস : حَدَّثَنَا مَسْعُودُ بْنُ مُحَمَّدٍ الرَّمْلِيُّ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَيُّوبَ بْنِ سُوَيْدٍ، نا أَبِي، نا الْأَوْزَاعِيُّ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي جَنَازَةٍ، فَجَلَسَ إِلَى قَبْرٍ مِنْهَا، فَقَالَ: مَا يَأْتِي عَلَى هَذَا الْقَبْرِ مِنْ يَوْمٍ إِلَّا وَهُوَ يُنَادِي بِصَوْتٍ طَلْقٍ ذَلْقٍ: يَا ابْنَ آدَمَ، كَيْفَ نَسِيتَنِي؟ أَلَمْ تَعْلَمْ أَنِّي بَيْتُ الْوَحْدَةِ، وَبَيْتُ الْغُرْبَةِ، وَبَيْتُ الْوَحْشَةِ، وَبَيْتُ الدُّودِ، وَبَيْتُ الضِّيقِ، إِلَّا مَنْ وَسَّعَنِي اللَّهُ عَلَيْهِ. ‘আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে একটি জানাজায় বের হলাম। অতঃপর তিনি একটি কবরের পাশে বসে বললেন, এমন কোনো দিন যায় না, যেদিন কবর স্পষ্ট ও তীক্ষ্ম কন্ঠে এ আওয়াজ দেয় না যে, হে আদম সন্তান, তুমি কিভাবে আমাকে ভুলে গেলে? তুমি কি জানো না যে, আমি নির্জন ঘর, আমি প্রবাসী মুসাফিরের ঘর, আমি ভয় ও আতঙ্কের ঘর, আমি পোকা-মাকড় ও কীট-প্রতঙ্গের ঘর, আমি সঙ্কীর্ণ ঘর? তবে আল্লাহ যার জন্য আমাকে প্রশস্ত করে দেবেন, সে ব্যতীত। (আল-মুজামুল আওসাত, তাবারানি : ৮/২৭২, হা. নং ৮৬১৩) এ হাদিসটিও অত্যধিক দুর্বল। কেননা, এ হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে মুহাম্মাদ বিন আইয়ুব বিন সুওয়াইদ নামক একজন জাল হাদিস তৈরিকারী ও মারাত্মক দুর্বল বর্ণনাকারী আছে। অতএব, মুহদ্দিসদের নিকট এ হাদিসটিও পুরোপুরিভাবে পরিত্যক্ত। বিস্তারিত দেখুন- মিজানুল ইতিদাল : ৩/৪৮৭, কিতাবুল মাজরুহিন, ইবনু হিব্বান : ২/২৯৯, মাজমাউজ জাওয়ায়িদ : ৩/১৬৫, আল-ফাওয়ায়িদুল মাজমূআ : পৃ. নং ২৬৯, আল মাকাসিদুল হাসানা : পৃ. নং ৩৫৯, আস-সিলসিলাতুজ জইফা ওয়াল-মওজুআ : হা. নং ৪৯৯০ ৩ নং হাদিস: حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ الْبَغْدَادِيُّ – لَيْسَ بِالزَّهْرَانِيِّ – حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنِ الْهَيْثَمِ بْنِ مَالِكٍ الطَّائِيِّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَائِذٍ الْأَزْدِيِّ، عَنْ أَبِي الْحَجَّاجِ الثُّمَالِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَقُولُ الْقَبْرُ لِلْمَيِّتِ حِينَ يُوضَعُ فِيهِ: وَيْحَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا غَرَّكَ بِي؟ أَلَمْ تَعْلَمْ أَنِّي بَيْتُ الْفِتْنَةِ، وَبَيْتُ الظُّلْمَةِ مَا غَرَّكَ إِذْ كُنْتَ تَمُرُّ بِي فَدَّادًا؟ فَإِنْ كَانَ مُصْلِحًا، أَجَابَ عَنْهُ مُجِيبٌ لِلْقَبْرِ: أَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ يَأْمُرُ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَى عَنِ الْمُنْكَرِ؟ قَالَ: فَيَقُولُ الْقَبْرُ: إِنِّي إِذًا أَعُودُ عَلَيْهِ خَضِرًا، وَيَعُودُ جَسَدُهُ نُورًا، وَتَصْعَدُ رُوحُهُ إِلَى رَبِّ الْعَالَمِينَ. ‘আবুল হাজ্জাজ সুমালি রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন মাইয়িতকে কবরে রাখা হয় তখন কবর বলে, তুমি ধ্বংস হও! আমার ব্যাপারে তোমাকে কে ধোঁকায় নিপতিত করেছিল? তুমি কি জানো না যে, আমি পরীক্ষার ঘর, আমি অন্ধকার ঘর? তোমাকে কে ধোঁকা দিলো, যখন তুমি আমার উপর দিয়ে স্বশব্দে হেঁটে যেতে? সে যদি নেককার হয় তখন তার পক্ষ থেকে একজন উত্তরদাতা (ফেরেশতা) কবরকে উত্তর দেয়, তুমি কি দেখোনি, সে সৎকাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করত? তিনি বলেন, তখন কবর বলে, তাহলে আমি তার জন্য সবুজ শ্যামলে রূপান্তরিত হয়ে যাব। আর তার দেহ নূরে রূপান্তরিত হয়ে যাবে এবং তাঁর রুহ আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নিকট চলে যাবে। (মুসনাদু আবি ইয়ালা : ১২/২৮৫, হা. নং ৬৮৭০) এ হাদিসটিও অত্যধিক দুর্বল। কেননা, এ হাদিসের বর্ণনাকারীদের মধ্যে আবু বকর বিন আব্দুল্লাহ বিন আবু মারইয়াম নামক একজন মুনকার (প্রত্যাখ্যাত) ও মারাত্মক দুর্বল বর্ণনাকারী আছে। এজন্য হাদিসটিও প্রত্যাখ্যাত ও পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। বিস্তারিত দেখুন- তাহজিবুত তাহজিব : ১২/২৯, মাজমাউজ জাওয়ায়িদ : ৩/১৬৪, তাখরিজুল ইহইয়া : ৫/২৫২, আল উলবু : পৃ. নং ২৯ এ তিনটি হাদিসই এসংক্রান্ত সবচেয়ে ভালো হাদিস ছিল। কিন্তু উপরিউক্ত তিনটি হাদিসের অবস্থা থেকেই অনুমান করা যায় যে, বাকি হাদিসগুলোর কী অবস্থা? মোটকথা, কবরের কথা বলা বা আহবান করা-সংক্রান্ত কোনো হাদিস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হয়নি। মুহাদ্দিসদের নিকট এসংক্রান্ত সব হাদিসই জাল বা অত্যধিক দুর্বল বলে বিবেচিত হয়েছে। আর এ ধরনের হাদিস দ্বারা না কোনো আকিদা, না কোনো বিধান, আর না কোনো ফজিলত-কিছুই সাব্যস্ত হয় না। শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ বলেন : الخلاصة : أنه لم يصح عن النبي صلى الله عليه وسلم في نداء القبر شيء ، والأحاديث التي جاءت بذلك منكرة شديدة الضعف. ‘সারকথা হলো, কবরের আহবান-সংক্রান্ত বিশুদ্ধ সূত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে কোনো কিছু বর্ণিত হয়নি। এ ব্যাপারে যেসব হাদিস বর্ণিত হয়েছে তার সবই প্রত্যাখ্যাত ও অত্যন্ত দু্র্বল।’ (আল ইসলাম, সুওয়াল ও জওয়াব : ফাতওয়া নং ১০০৪৮৫) সুতরাং মানুষকে মৃত্যুর ভয় দেখানো ও মৃত্যুকে স্মরণ করানোর অযুহাতে এসব অগ্রহণযোগ্য বর্ণনাগুলো প্রচার করার কোনো অবকাশ নেই। কুরআন-সুন্নাহয় এ ব্যাপারে অসংখ্য আয়াত ও সহিহ হাদিস রয়েছে। তাই আমাদেরকে এ থেকে সর্বাত্মকভাবে বেঁচে থাকতে হবে। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা বলেননি তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামে প্রচার করা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ। যেমন সহিহ বুখারিতে বর্ণিত হয়েছে : حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الجَعْدِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، قَالَ: أَخْبَرَنِي مَنْصُورٌ، قَالَ: سَمِعْتُ رِبْعِيَّ بْنَ حِرَاشٍ، يَقُولُ: سَمِعْتُ عَلِيًّا، يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تَكْذِبُوا عَلَيَّ، فَإِنَّهُ مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ فَلْيَلِجِ النَّارَ. ‘আলি রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা আমার ব্যাপারে মিথ্যা বলো না। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ব্যাপারে মিথ্যা বলবে সে যেন জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (সহিহুল বুখারি : ১/৩৩, হা. নং ১০৬) অনুরূপ সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে : وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدٍ الْغُبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا، فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنَ النَّارِ. ‘আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার ব্যাপারে মিথ্যা বলল সে যেন জাহান্নামকে তার আবাসস্থল বানিয়ে নিল। (সহিহু মুসলিম : ১/১০, হা. নং ৩) আল্লাহ আমাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নামে মিথ্যা, জাল ও অত্যধিক দুর্বল হাদিস বর্ণনা ও প্রচার করা থেকে বিরত রাখুন এবং দ্বীনকে সঠিকভাবে জেনে ও মুহাক্কিক আলিমদের মাধ্যমে তাহকিক করে তদানুসারে আমল করার তাওফিক দান করুন। আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এমন হাজারো জাল হাদিস, দ্বীনের ভুল ব্যাখ্যা ও অগ্রহণযোগ্য নানা ফিকহি মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এখন তো জনগণের কাছে আলিমদের চাইতে মাঠে-ময়দানে আওয়াজকারীদেরই মূল্যায়ন বেশি। আবার মুহাক্কিক ও প্রাজ্ঞ আলিমদের চাইতে সাধারণ আলিমদের সাথেই জনগণের উঠাবসা বেশি। তাই সামগ্রিকভাবে দেশে সীমিত পরিসরে মুহাক্কিক আলিম তৈরি হলেও এখনো এর সুফল সমাজের প্রতিটি স্তরে পৌঁছতে পারেনি। এ বিষয়ে সবারই সচেতন ও সজাগ হওয়া জরুরি। যখন জানার সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সোর্স বিদ্যমান, তখন অজ্ঞতার অজুহাতে মাফ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন।