**মর্মরে বাজে তাওহিদের আজান
** MPHS01
? আপনি বলে দিন, হে কিতাবিরা, তােমরা এমন এক কালিমার দিকে এসে যাও, যা আমাদের ও তােমাদের মধ্যে অভিন্ন। [সুরা আলে ইমরানঃ ৬৪]
➡ হে ইসরাইলের সন্তানেরা, তােমরা বিশ্বাস করাে উজাইর আলাইহিস সালাম ছিলেন আল্লাহ তাআলার সন্তান। আর এ কথাও স্বীকার করাে, তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। কখনাে কি তােমরা ভেবে দেখেছ, আল্লাহ তাআলার সত্তা চিরঞ্জীব, সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। তাঁর সন্তানের মধ্যেও এ বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত। তাহলে উজাইর আঃ এর কাছে মৃত্যু কীভাবে এলাে! আর যিনি মৃত্যুবরণ করেন, তিনি কীভাবে আল্লাহর সন্তান হতে পারেন?
➡ হে মরিয়ম-তনয় ইসা আ.-এর হাওয়ারিরা, তােমরা বিশ্বাস করাে ইসা আ. ছিলেন আল্লাহ তাআলার সন্তান। আর এ কথাও নির্দিধায় স্বীকার করাে, তাঁকে শূলিতে চড়ানাে হয়েছে। কখনাে কি তােমরা ভেবে দেখেছ, আল্লাহ তাআলা তাে মহা পরাক্রমশালী, সবকিছুর ওপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। তাহলে তাঁর সন্তান কীভাবে এতটা দুর্বল এবং অসহায় হয়ে গেল যে, শেষাবধি তাঁকে শূলিতে চড়ানাে হলাে! যাকে শূলিতে চড়ানাে হয়, সে কীভাবে আল্লাহ তাআলার সন্তান হতে পারে!
➡ হে সনাতন (হিন্দু) ধর্মমতের অনুসারীরা, তােমরা বিশ্বাস করাে পৃথিবীতে ৩৩ কোটি ভগবান রয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তি তার ভগবানকে আলাদা করে রাখে। প্রত্যেকের যেন রয়েছে স্বতন্ত্র ভগবান; যে কিনা তার প্রয়ােজন এবং আকাক্ষা পূর্ণ করার সক্ষমতা রাখে। আর অবশিষ্ট ৩২ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৯ জন তার প্রয়ােজন পূর্ণ করতে অক্ষম। কখনাে কি তােমরা ভেবে দেখেছ, যখন ৩২ কোটি ৯৯ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৯ জনই অক্ষম এবং অসহায়, তখন তাদের শ্রেণিভুক্ত একজনই-বা কীভাবে প্রয়োজন এবং আকাক্ষা পূর্ণ করার সক্ষমতার অধিকারী হলাে?
➡ হে বৌদ্ধধর্মের অনুসারীরা, তােমরা বিশ্বাস করাে গৌতম বুদ্ধ মহা সত্যের সন্ধানে বছরের পর বছর কত শত প্রান্তর, বন আর মরুভূমিতে ঘুরে ফিরেছেন। কখনাে কি তােমরা ভেবে দেখেছি, যে ব্যক্তি নিজে মহা সত্যের সন্ধানে বছরের পর বছর ঘুরে বেড়ালেন, তিনি নিজেই কীভাবে আবার মহাসত্য হতে পারেন?
➡ হে ইমামগণের নিস্পাপত্বে বিশ্বাসীরা, তােমরা শিয়ারা বিশ্বাস করাে পৃথিবীর অণু-পরমাণু পর্যন্ত সবকিছু ইমামদের নির্দেশ এবং ক্ষমতার সামনে আজ্ঞাবহ। তােমরা এ-ও দাবি করাে যে, আহলে বাইতের ওপর যে দুঃখ-দুর্দশা, বিপদাপদ এসেছে, তা আবু বকর এবং উমর রা.-এর কারণে এসেছে। কখনাে কি তােমরা ভেবে দেখেছ, যার নির্দেশের সামনে পৃথিবীর অণু-পরমাণু পর্যন্ত আজ্ঞাবহ, তাঁর ওপর কীভাবে দুঃখ-দুর্দশা, বিপদাপন আপতিত হতে পারে! আর যার ওপর বিপদাপদ আপতিত হতে পারে, তিনি কীভাবে পৃথিবীর সবকিছুর নিয়ন্ত্রক এবং মহাপরিচালক হতে পারেন?
➡ হে সুফিবাদের অনুসারীরা, তােমরা বিশ্বাস করাে আলি হাজওয়েরি রাহ. মানুষকে ধনভান্ডার দান করেন। খাজা মইনুদ্দিন চিশতি রাহ. ঝড় থেকে মুক্তি দেন। আবদুল কাদির জিলানি রাহ. বালা-মুসিবত দূর করেন। ইমাম বরি রাহ. দুর্ভাগ্যবানকে সৌভাগ্যবানে পরিণত করেন। সুলতান বাহু রাহ. সন্তান দান করেন। কখনাে কি তােমরা ভেবেছ, যখন আলি হাজওয়েরি ছিলেন না, তখন কে ধনভান্ডার দান করত? যখন খাজা মইনুদ্দিন চিশতি ছিলেন না, তখন কে ঝড় থেকে মুক্তি দিত? যখন আবদুল কাদির জিলানি ছিলেন না, তখন কে বালা-মুসিবত দূর করত? যখন ইমাম বরি ছিলেন না, তখন কে দুর্ভাগ্যবানকে সৌভাগ্যবান করত? যখন সুলতান বাহু ছিলেন না, তখন কে সন্তান দান
➡ হে পৃথিবীবাসী, আমার কথাগুলাে মনােযােগ দিয়ে শােনাে। আল্লাহ তাআলার অবতরণকৃত শিক্ষায় কখনাে বৈপরীত্য থাকতে পারে না; কিন্তু তােমাদের বিশ্বাস ও চিন্তাধারায় বিদ্যমান স্ববিরােধিতা এ কথারই প্রমাণ বহন করে যে, এসব বিশ্বাস ও চিন্তাধারা আল্লাহ তাআলার অবতরণকৃত নয়।
➡ তাই হে পৃথিবীবাসী, এসাে এমন এক কালিমার দিকে।
• যার শিক্ষায় স্ববিরােধিতা নেই।
• যা মানুষের আত্মাকে করে প্রশান্ত এবং শরীরকে করে স্বাধীন
• যা মানুষকে সম্মান, মর্যাদা এবং গৌরব দান করে;
• যা মানুষকে নিরাপত্তা ও শান্তি, ন্যায় ও ইনসাফ, সাম্য ও ভ্রাতৃত্ব এবং ভালােবাসার মতাে সুউচ্চ মানবীয় গুণাবলির নিশ্চয়তা দেয়;
• যা মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দেয়। তা হলাে এক কালিমা
لا إله إلا الله
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
আল্লাহ ব্যতীত কোনাে ইলাহ নেই।