মসজিদে নববি। নবিজি ﷺ এর খুতবাহ শােনার জন্যে অপেক্ষা করছেন সাহাবিরা। নবি ﷺ এলেন। খুতবাহ দেওয়ার জন্যে দাঁড়ালেন। খুতবাহ আরম্ভ করতে যাবেন এমন সময় এক আনসারি মহিলা বলল, হে আল্লাহর রাসূল ﷺ! আপনার জন্যে একটি মিম্বর তৈরি করে দিই?’
তিনি বললেন, “তােমাদের ইচ্ছে হলে দিতে পারাে।”
পরবর্তী সময়ে একটি মিম্বর তৈরি করা হলাে। মসজিদে নববিতে একটি খেজুর গাছের গুড়ি ছিল, ক্লান্ত হলে নবিজি ﷺ গুড়িটির সাথে হেলান দিয়ে খুতবাহ দিতেন। গুড়িটি সরিয়ে সে জায়গায় বসানাে হলাে নতুন মিম্বর। তিনি খুতবাহ দেওয়ার জন্যে নতুন মিম্বরে দাঁড়ালেন। এমন সময় সাহাবিরা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলেন। কিন্তু সাহাবাদের কেউই তাে কাঁদছে না, তা হলে কে? কে কাঁদছে?
কাঁদছিল ওই গুড়িটি, যার ওপর ভর দিয়ে এত দিন নবিজি ﷺ খুতবাহ দিতেন। গুঁড়িটি এত জোরে কাঁদছিল যে, সাহাবিরা সে শব্দ শুনতে পাচ্ছিলেন। কান্না শুনে নবি ﷺ নেমে এলেন মিম্বর থেকে। জড়িয়ে ধরলেন গুঁড়িটিকে। আবেগাপ্লুত হয়ে সেটি ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল। গুড়িটিকে হাত বুলিয়ে আদর করলেন তিনি। কান্না বন্ধ হলাে তার।[বুখারি, আস-সহীহ, অধ্যায় : আম্বিয়া কিরাম, হাদীস : ৩৩৩০-৩৩৩২]
গুড়িটি কেন কাঁদছিল জানাে?
নবিজির ﷺ বিরহে।
নবিজির বিরহে সেটি বাচ্চা শিশুর মতাে কাঁদছিল। এতদিন নবি ﷺ, তার ওপর ভর দিয়ে খুতবাহ দিয়েছেন, কিন্তু আজ তিনি তার কাছ থেকে সরে গেছেন দূরে— এ বিরহে সে কাঁদছিল। সামান্য গুড়ি, যে নবিজিকে ﷺ ভালােবাসতে বাধ্য নয়; সেও নবিজির ﷺ বিরহে কাঁদে। আবগাপ্লুত হয় তাঁর জন্যে। আর তুমি?
বলাে তাে, শেষ কবে তাঁর জন্যে চোখের জল ফেলেছিলে?
আমি জানি না, আর কত ইতিহাস শুনলে তােমার বােধােদয় হবে।