ঐতিহাসিকদের মতে পরাশক্তি হিসাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পিছনে দুইটি মুখ্য কারণ ছিল। প্রথমটি হল, ১৯৮৬ সালে চেরোনোবিলের আণবিক কেন্দ্র বিস্ফোরণ। দ্বিতীয়টি হল, আফগানিস্তানে মুসলিমদের কাছে পরাজয়। এই দুই ঘটনার পর পরাশক্তি হিসাবে দুনিয়ার মানুষের অন্তরে রাশিয়াকে নিয়ে যে ভয় আর সমীহ ছিল, তা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ২০২০ এর প্রথম ছয় মাসের মধ্যে এমন তিনটি ঘটনা ঘটেছে যা আমেরিকার অজেয় ভাবমূর্তিকে ভেঙ্গে দিয়েছে –
.
১) ১৯ বছরের যুদ্ধের পর আফগানিস্তানে মুসলিমদের কাছে পরাজিত হয়ে সুপারপাওয়ার আমেরিকা রণেভঙ্গ দিতে বাধ্য হয়েছে
.
২) প্রবল পরাক্রমশালী বলে দাবি করা আমেরিকা, তুচ্ছ করোনা ভাইরাসের আক্রমণ সামাল দিতে ব্যর্থ। এক লক্ষের উপর মানুষ মারা গেছে। এতো সভ্যতা, এতো প্রযুক্তি নিয়েও সে আল্লাহ্র ক্ষুদ্র এক সৃষ্টির কাছে সে অসহায়।
.
৩) শান্তি, গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা বলা আমেরিকা নিজের ঘরেই শান্তি বজায় রাখতে পারে না। নিজের জনগণকেই অধিকার দিতে পারে না। নিজেই সভ্যতা বজায় রাখতে পারে না।
.
নিঃসন্দেহে আল্লাহ মুমিনদের সামনে বাস্তবতা স্পষ্ট করে দিচ্ছেন। আমেরিকা যা নিয়ে গর্ব করে, তার প্রত্যেকটি দিকে সে মার খেয়েছে। সে সামরিক শক্তি নিয়ে গর্ব করতো। সামরিকভাবে সে পরাজিত হয়েছে। সে প্রযুক্তি আর দক্ষতা নিয়ে গর্ব করতো। চোখে দেখা যায়না এমন করোনা ভাইরাসের সামনে সেই গর্ব উড়ে গেছে। আমেরিকা তার রাজনৈতিক আদর্শ, সামাজিক বোঝাপড়া, সভ্যতা আর তথাকথিত মানবতা নিয়ে গর্ব করতো। দাঙ্গার কারণে স্পষ্ট হয়ে গেছে, এগুলো অন্তসারহীন বুলিমাত্র।
মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের মনে আমেরিকার ব্যাপারে যে অতিরঞ্জিত ধারণা তৈরি হয়েছিল তা আজ দূর হয়ে গেছে। মিডিয়ার এই মায়াজাল পরাশক্তিগুলোর ক্ষপতার অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক।
.
আজ মিডিয়ার সেই মায়াজাল ছিড়ে গেছে। বাস্তবতা পরিস্কার হয়ে গেছে। যারা চক্ষুষ্মান তাদের জন্য আজ দেখার অনেক কিছুই আছে। তাদের উচিত এই প্রেক্ষাপটগুলো ব্যবহার করে সুপারপাওয়ার হিসাবে আমেরিকার ভাবমূর্তিকে বারবার আঘাত করা। মানুষের মনে আমেরিকার যে মূর্তি গড়ে উঠেছে তা ভেঙ্গে দেওয়া। এনিয়ে বেশি বেশি লিখা, ছবি তৈরি করা, আমেরিকাকে ট্রল করা, ভিডিও বানানো। ইনশাআল্লাহ এই প্রেক্ষাপট অনেক মানুষের চোখ খুলার উপলক্ষ হবে।