নারীরা একটুকরো সুখের জন্য সন্তানদেরকে সালাহুদ্দীন আইয়ুবি না বানিয়ে বিল গেটস বানানোর স্বপ্ন দেখে।

নারীরা একটুকরো সুখের জন্য সন্তানদেরকে সালাহুদ্দীন আইয়ুবি না বানিয়ে বিল গেটস বানানোর স্বপ্ন দেখে। একটা সমাজের অধিকাংশ নারীই যখন এমন হয়ে যায় আর এর প্রভাবে তাদের সমাজে হাল ধরার লোকের অভাবে মাজলুম ফরজ মরে যায়, তখন তাদের ওপর নেমে আসে খোদায়ি পরাক্রম। জালিমরা যখন তাদের এলাকা দখল করে তাদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালাতে থাকে, মা-মেয়েকে একসঙ্গে গণধর্ষণ করে বিবস্ত্র অবস্থায় কারাগারে ফেলে রাখে বা বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে মারে, তখন এ নারীরাই কিন্তু চিৎকার করে সালাহুদ্দীনদের ডাকতে থাকে। আরে ভগ্নি, সালাহুদ্দীন আসবে কোত্থেকে! তোমরা তো চিরকাল জন্ম দিয়েছ মীর জাফরদের। তারাই বরং তোমাদের সতীচ্ছদ হতে দেখে হরহরিয়ে হাসতে থাকবে। বিলাতি পতিতা নিয়ে সুখশয্যায় জৈবিক ক্রিয়ায় মেতে থাকবে। সামান্য পার্থিব স্বার্থের জন্য তারা গোটা মুসলিম বিশ্বকেই কুফফারের হাতে তুলে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করবে না। কারণ, এই তুমিই তো তাদেরকে গড়ে তুলেছ অর্থ, খ্যাতি ও সুখের পূজারী করে।

সালাহুদ্দীনরা আকাশ থেকে আসে না। জমিন থেকেও উদগত হয় না। তারা জন্মগ্রহণ করে পবিত্র নারীদের পবিত্র গর্ভ থেকে। তারা বেড়ে ওঠে যুগের খানসাদের কোলে। মা যদি হয় মারয়াম, সন্তান ঈসার মতো হওয়ার প্রত্যাশা করা যায়। মা যদি হয় পর্নোগ্রাফির ফ্যান, সন্তান তাহলে কুকুরস্বভাবী হওয়াই তো স্বাভাবিক ব্যাপার। সবাই মাসিহা খোঁজে; কিন্তু কেউ নিজে মাসিহা হতে চায় না। কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে।’

আজকালকার অধিকাংশ দীনি সিসও তো অঘোষিতভাবে কথিত ইসলামিক ফেমিনিজমে আক্রান্ত। এদের বড় একটা অংশের তো তাওহিদই ঠিক নেই। ইমান ভঙের কারণ পাওয়া যায় অধিকাংশের মধ্যে। তো এই যখন অবস্থা, কীভাবে ভাবো, এদের কোল থেকেই বেড়ে উঠবে ত্রস্ত যুগের ত্রাতা! যাদের নিজেদের জীবনীতে কোনো কুরবানি নেই, ইসলামের জন্য যারা সর্বস্ব উজাড় করার মানসিকতা রাখে না, এ সকল মিসকিনের কোলে সাধারণভাবে মিল্লাতে ইবরাহিমের আদর্শবাহী বেড়ে ওঠার প্রত্যাশা করা যায় না।

প্রত্যেক নবজাতক শিশু জন্মগ্রহণ করে স্বভাবধর্মের ওপরে। তাওহিদ ও মিল্লাতে ইবরাহিম মিশে থাকে তার পুরো অস্তিত্বজুড়ে। এরপর তার বাবা-মা তার সেই স্বভাবজাত আদর্শ বিকৃত করে। প্রতিটি শিশুর মধ্যে রয়েছে আল্লাহর তরবারি হবার যোগ্যতা। বাবা-মা, ভাই-বোন, পাড়াপড়শি, শিক্ষকসম্প্রদায়, ফ্রেন্ড সার্কেল থেকে শুরু করে জাহিলি সমাজ ও পরিবেশ তাদেরকে সেই আদর্শ থেকে বিচ্যুত করে। সিংহের জাতিকে পুরোদস্তুর শিয়ালে পরিণত করে ছাড়ে।

@আলি হাসান উসামা

মুসলিম উম্মাহর কোনো আমিরুল মুমিনিন নেই। এ জন্য গোটা উম্মাহই অপরাধী। তবে যারা আহলুল হাল্লি ওয়াল আকদ তথা মুসলিম বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্ব, এই পাপ বিশেষভাবে তাদের ওপর বর্তাবে। কারণ, আমিরুল মুমিনিন নির্বাচনের দায়িত্ব তাদের। নেতৃস্থানীয় আলিম হোক, সুফি হোক, দাঈ হোক বা আন্তর্জাতিক শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী হোক—এরা কেউই এই দায় এড়াতে পারবে না। নিশ্চয়ই তারা এর জন্য মহান রবের দরবারে জিজ্ঞাসিত হবে। এর জন্য প্রত্যক্ষভাবে কী চেষ্টা করেছিল, তাও তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। নবির লাশ কবরে রাখার চাইতে আমির নির্ধারণ অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল সাহাবিদের চোখে। আর এক শতাব্দী পেরিয়ে যাচ্ছে; কিন্তু কার্যকর প্রচেষ্টা উল্লেখযোগ্য হারে চোখে পড়ছে না। জনসাধারণ পারে এসব নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে; কিন্তু তাদের এহেন সৎসাহসও চোখে পড়ে না।

পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে ইসলামি ইমারাহ প্রতিষ্ঠিত হলে তা সুদৃঢ়, সুসংহত ও শক্তিশালী করা সব মুসলমানের ওপর আবশ্যিক দায়িত্ব। যদি তারা এই দায়িত্ব পালন না করে, তবে এর জন্যও অপরাধী হবে। আর যারা ইসলামি ইমারাহর বিরোধিতা করবে, এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে ও অপপ্রচার চালাবে, তারা মহা পাপী বলে সাব্যস্ত হবে। তাদের ইমানের পরিশুদ্ধি প্রয়োজন। অন্যথায় নিফাকের ওপর মৃত্যুবরণ করার আশঙ্কা রয়েছে।

কুফফারের ক্রোধ সঞ্চার করা স্বতন্ত্র ইবাদত। খোদ কুরআনেই এই ইবাদতের কথা উল্লেখিত হয়েছে সুরা তাওবা ও ফাতহে। তাদের ভেতরে গৃহযুদ্ধ লাগিয়ে দেওয়ার কথাও বর্ণিত হয়েছে সিরাতে। সুতরাং অসহায় আমেরিকার এই ক্রান্তিকালে তাদের ক্রোধ জাগানো এবং তাদের জ্বলন্ত আগুনে ঘি ঢালা এক মহান ইবাদত। তবে এই ইবাদত সিংহদের জন্য; যুগের হোবলপূজারী শৃগালদের জন্য নয়।

@আলি হাসান উসামা

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *