একটা এপ ইন্সটল করার সময় টার্মস এন্ড কন্ডিশন থাকে, সেখানে “I agree” দিলেই কেবল আপনাকে এপটি ইন্সটল করার অনুমতি দেওয়া হবে। অন্যথায় আপনি যেই হোন না কেন, এপটি আপনাকে প্রবেশাধিকার দেবে না। একটা কোম্পানীতে জয়েন করার সময়ও চুক্তিপত্রে টার্মস এন্ড কন্ডিশন থাকে, যার কোনোটি অমান্য করলে কতৃপক্ষ্য আপনাকে চাকরি থেকে বের করে দেওয়ার এখতিয়ার রাখে।
এই পৃথিবী আর এর বিশালত্বের তুলনায় এই পুচকে পৃথিবীর অতি নগণ্য মানুষের বানানো এই এপ, একটা চাকরি, এসব অতি সামান্য বিষয়। অথচ সেখানেও কত কড়া নিয়ম দেখুন। তাই এই পুরো পৃথিবী, এর মধ্যে যা কিছু আছে, সমস্ত কিছুর যিনি স্রষ্টা তার মনোনীত যে ধর্ম বা দ্বীন, সেটা এত ঠুনকো হবে, এতটা আশা করাটা বোকামি। এখানেও টার্মস এন্ড কন্ডিশন আছে, যেগুলো না মানলে কারো সেই দ্বীন বা ধর্মের গণ্ডীতে থাকার সুযোগ নেই। এই ধর্ম বা দ্বীন স্রেফ কিছু আচার অনুষ্ঠান, স্রষ্টারে তো মানি, কিছু জায়গায় ধর্ম মানি, কিছু জায়গায় আমি ধর্মের চেয়ে বেশি বুঝি, এভাবে জগাখিচুড়ি পাকানোর সুযোগ নেই। এই ধর্ম কোনো মানুষ বানায়নি, যদি কারো বিশ্বাস হয় মানুষ বানিয়েছে, তাহলে তার ব্যাসিকে সমস্যা আছে, আগে ব্যাসিক ঠিক করা জরুরি। ব্যাসিকটা হলো একজন মানুষ জন্ম নিয়েছে, তার একজন স্রষ্টা আছেন, সেই মানুষটা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সময়টাতে কীভাবে জীবনযাপন করবে তার একটা প্রেসক্রিপশন আছে, এই প্রেসক্রিপশনটাই ধর্ম বা দ্বীন। এই ধর্ম পায়খানায় কোন সাইডে ভর দিয়ে বসবেন, পানি কীভাবে পান করবেন, বেচাকেনা কীভাবে করবেন, স্ত্রীর সাথে সহবাস কীভাবে করবেন সেখান থেকে শুরু করে একটা রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে, সবকিছু একেবারে খুঁটিনাটি বর্ণনা করেছে, একেবারে পাই পাই করে। কোনো অস্পষ্টতা নেই। যে কেউ চাইলেই বুঝতে পারবে, এটা কোনো রকেট সাইন্স না। আর এই সবকিছুই সেই ধর্মের প্রিন্সিপল, টার্মস এন্ড কন্ডিশন, এগুলো না মানলে কিংবা এসব মেনে দুনিয়াতে চলা যায় নাকি, ধর্ম এই যুগে চলে নাকি, এমন বেশি বুঝলে সেই ধর্মের গণ্ডীতে থাকার সুযোগ নেই। তখন তাকে মুরতাদ বলা হয়।
আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই আছে, যারা মুসলিম পরিবারে জন্ম নিয়েছে, নামও মুসলিম, কিন্তু তারা মুরতাদ। মানে দ্বীন থেকে বের হয়ে গেছে। দিনে তিনবেলা চেতনা খেতে খেতে এদের বিশ্বাসে আর ধর্ম বা দ্বীন নেই।
শেষ জামানার একটা নিদর্শন হলো রিদ্দা বা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাওয়া মহামারি আকার ধারণ করবে। মানুষ জানতেও পারবে না সে আর মুসলিম নেই, অথচ সে নিজেকে মুসলিম দাবি করবে। আমাদের চারপাশেই এরা ঘুরবে, ফিরবে, একই টেবিলে বসে খাবে, আমাদের মেয়ে, বোনেদের সাথে এদের বিয়ে হবে, অথচ এরা মুসলিম নয়।
“নিশ্চয় তোমাদের পরবর্তী যুগে ফিতনা হবে গভীর অন্ধকার রাতের ন্যায়৷ মানুষ সে সময় সকালে মুমিন থাকবে, সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। সন্ধ্যায় মুমিন থাকবে, সকালে কাফির হয়ে যাবে।” (মুসান্নাফে ইবনু আবি শাইবাহ: ১৩/৩৮৫, যুহদ লি ইমাম আহমাদ: ১৯৯।)
@সাজিদ ভাই থেকে