নারীবাদ নিচ্ছেন , এর ফল নিতে প্রস্তুত আছেন তো?- ০৬/১
“সুগার ড্যাডি ও টীনেজ পর্ন”
(জ্ঞাতব্যঃ এই লেখার ভাষা ও বিষয়বস্তু অত্যন্ত সংবেদনশীল।)
শুরু করছি একটা জাপানী সিনেমার গল্প দিয়ে। জাপানের রাজধানী টোকিওর একটা স্কুলে পড়ে তিন বান্ধবী। একটা নতুন মেয়ে আসে তাদের দলে। সেই মেয়েটা একদিন তাদের লীডার মেয়েটার বাসায় গিয়ে অবাক হয়। এটা ছিলো শহরের মাঝখানের একটা বহুতল ভবনের স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট। জিজ্ঞেস করায় তাদের একজন জানায় ‘পাপা’ এটা কিনে দিয়েছে। নতুন মেয়েটা বলে, তোমার পাপা নিশ্চয় বড় কেউ হবে। পরে আস্তে আস্তে পরিস্কার হয়, এই ‘পাপা’ আসলে বাবা নয়। গল্প শেষ।
সিরিজের চতুর্থ পর্বে বলেছিলাম, ষাট বছরের বৃদ্ধার সাথে পয়সা দিলেও কেউ শুতে চায় না, কিন্তু পয়সাওয়ালা ষাট বছরের বৃদ্ধের জন্য মেয়ের অভাব নেই। পয়সা থাকলেই পিজ্জা অর্ডার করার মতো বেডরুমে মেয়ে পাওয়া যায়, তাতে পুরুষের বয়স যতই হোক না কেন। এই ব্যাপারটার আধুনিক নাম সুগার ড্যাডি। এই সুগার ড্যাডি কী, তারসাথে নারীবাদের সম্পর্কই বা কী – এই নিয়ে আলোচনা করবো লেখার প্রথম অংশে। দ্বিতীয় অংশে থাকবে টীনেজ পর্ন ও তার সাথে নারীবাদের সম্পর্ক নিয়ে।
মূল আলোচনা শুরু করা যাক।
১। সুগার ড্যাডি ও সুগার বেবী কী?
ফর্মাল ভাষায় বলতে গেলে, সুগার ড্যাডি হচ্ছেন একজন বৃদ্ধ ব্যক্তি যিনি টাকা বা কোনো গিফটের বিনিময়ে কোনো অল্পবয়সী মেয়ের কাছ থেকে সেক্সুয়াল সুবিধা নিয়ে থাকেন। এরকম মেয়েকে বলা হয় সুগার বেবী। অনেকটা বাংলা রক্ষিতার মতো, তবে পার্থক্য হলো এখানে মেয়েটা অল্পবয়সি হয়ে থাকে। অধিকাংশ সুগার বেবী স্কুল বা কলেজের ছাত্রী হয়ে থাকেন।
জাপানে একে বলে Enjo-kōsai. এটা জাপানের বেশ পুরোনো কালচার। বহু জাপানী সিনেমা ও অ্যানিমে এর উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করা হয়েছে।
এটি একটি অত্যন্ত শর্ট টার্ম রিলেশনশিপ, কারণ সুগার ড্যাডিরা প্রচুর পয়সাওয়ালা হওয়ায় নিয়মিত সুগার বেবী চেঞ্জ করে থাকেন।
এটি বেশ্যাবৃত্তিরই একটি ধরণ, যাকে বলা হচ্ছে ‘সফট প্রস্টিটিউশন’।
২। পশ্চিমা সমাজে সুগার বেবী
সুগার ড্যাডি ও সুগার বেবী মিট করিয়ে দেওয়ার জন্য অনেক মাধ্যম রয়েছে। যেমন, বন্ধু বা পরিচিত কারো মাধ্যমে, ক্লাবে ইত্যাদি। তবে এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ইন্টারনেট। বহু অ্যাপ ও ওয়েবসাইট রয়েছে সুগার ড্যাডি খোজার জন্য। এরমধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো সিকিং ডটকম। এই সাইট থেকে কিছু তথ্য-উপাত্ত পেশ করবো, এতে কিছুটা আইডিয়া পেয়ে যাবেন।
২০১৮ সালের ডাটা অনুযায়ী, তাদের সাইটে মোট ৪৭ লাখ ছাত্রী সুগার বেবী হবার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে, যার মধ্যে শুধু আমেরিকারই ২৭ লাখ। এরমধ্যে শীর্ষে রয়েছে জর্জিয়া স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানকার প্রতি ১০ জনের একজন ছাত্রী সুগার বেবী হতে চায়।
এটি মাত্র একটি সাইটের ডাটা। এর বাইরে আরো কত নামে বেনামে এই চর্চা চলছে তার হিসেব কারো কাছেই নেই। এই লেখার সাথে সুগার বেবী হবার তালিকায় শীর্ষে থাকা আমেরিকার ২০ টি কলেজের তালিকা দিয়েছি।
কিন্তু কী এমন ঘটে গেলো যে বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রীরা এভাবে স্বেচ্ছায় বেশ্যা হবার জন্য লাইন লাগিয়ে দিলো? এর পিছনে নারীবাদের ভূমিকাই বা কতখানি? এটাই আজকের লেখার মূল বিষয়বস্তু।
৩। স্টুডেন্ট লোন ও টিনেজ ড্রিম
আমেরিকাতে গত জানুয়ারী মাসের হিসেব অনুযায়ী মোট স্টুডেন্ট লোনের পরিমাণ ছিলো ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার বা ১,৩৬,১৩,৩৫৫ কোটি টাকা। একজন ছাত্র/ছাত্রী যখন গ্রাজুয়েশন শেষ করে বের হয় তখন গড়ে তার উপর ৩৭,০০০ ডলার বা ৩০ লাখ টাকার লোন থাকে। এই টাকা চক্রবৃদ্ধি সুদে বাড়তে বাড়তে কয়েক কোটিতে পৌছায় কারো কারো, জীবন শেষ হয়ে যায় লোন শোধ হয় না। বুড়ো বয়স পর্যন্ত লোনের টাকা শোধ করে যেতে হয়। এই লোনের টাকা শোধ করতে তার কাছে অল্প কিছু অপশন থাকে। পার্টটাইম জব যেমন ম্যাকডোনাল্ডসে অ্যাাভারেজ স্যালারি ঘন্টায় ১০ ডলারে নিজের চলার খরচই ওঠে না। আর ঘাড়ের উপর অর্ধকোটি টাকার লোন ঝুলতে থাকা মেয়ের দায়িত্ব কে নেবে? এই পর্যন্ত সুগার বেবী হবার পিছনের লজিকগুলো মোটামুটি ঠিক আছে, পয়সার অভাবে দেহ বিক্রি। কিন্তু যখন এরকম একটা কাজকে ফেমিনিজম দিয়ে জাস্টিফাই ও গ্লোরিফাই করা হয় তখন এটা হিপোক্রেসির একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ‘সুগার বেবী ও ফেমিনিজম’ পয়েন্টটাতে এই ব্যাপারে বিস্তারিত বলেছি।
আরেকটা পয়েন্ট হলো টিনেজ বয়সে দামী জিনিসের অবসেশন। সোজা বাংলায় বললে লোভ। একটা মধ্যবিত্ত ঘর থেকে আসা মেয়ের সামর্থ্য আর কতটুকু থাকতে পারে? অনেক জিনিসের ইচ্ছে থাকলেও পাওয়া হয় না পয়সার অভাবে। এর বিপরীতে একটা সুগার ড্যাডি খোজার সাইটে অ্যাকাউন্ট খুললে , সেরকম কোনো ‘ড্যাডি’ মিলে গেলে মুহুর্তেই হাতে একগাদা টাকা, লেটেস্ট ফ্লাগশীপ ফোন, নামকরা ডিজাইনারের ফ্যাশনারি, নামী ব্র্যান্ডের শপিং আর হলিডে তে ইয়াটে করে সমুদ্রবিলাস। এসব কিছুই একটা লোয়ার বা মিডল ক্লাস ফ্যামিলি থেকে আসা মেয়ের কাছে স্বপ্নের মত। স্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝে পার্থক্য কেবল ‘ড্যাডির’ সাথে কাটানো কিছু সময়।
এবার আসুন, এখন টিনেজ মেয়েদের মধ্যে নারীবাদ গ্রহণ করার প্রবণতা সবচেয়ে বেশী। একইসাথে, নারী কারো দয়ার পাত্র নয়, পুরুষমাত্রই ধর্ষক, নারীর কোনো পুরুষের দরকার নেই, আমরা পুরুষের চেয়ে শক্তিশালী এই টাইপের বক্তব্য এই বয়সীদের থেকেই বেশী যায়। আবার এরাই সবচেয়ে বেশী সুগার বেবী হচ্ছে। দিনরাত পুরুষকে গালাগাল করে ওদের ভাষার কুৎসিত, ধর্ষক পুরুষের কাছেই শরীর বেচতে যাওয়া। পয়সাওয়ালা সুগার ড্যাডি পেলে নারীবাদি আদর্শ একেবারে ভূলে যায়। এইসব সুগার বেবীরা আবার জোর গলায় ফেমিনিজম প্রচার করছে। গুগলে Feminist Sugar Baby লিখে সার্চ দিলে একেবারে হতবাক হয়ে যাবেন এদের হিপোক্রেসি দেখে।
৪। ভার্জিনিটি ফর সেল
২০১১ সালের দিকে চায়নার একটা মেয়ে আইফোন ফোরের বিনিময়ে ভার্জিনিটি বিক্রি করতে চেয়েছিলো। একটা হৈ চৈ পড়ে গিয়েছিলো, বাংলাদেশের দৈনিক পত্রিকাগুলো ঘটা করে এই খবর ছেপেছিলো।(রেফারেন্স-১) এখন ২০২০ সালে এসে দেখতে পাচ্ছি এটা রীতিমত একটা ইন্ডাস্ট্রি। বোস্টক্লাব বা ফার্স্টনাইট ডটকমের মতো সাইটগুলোতে নিলামের মাধ্যমে একেকজনের ভার্জিনিটি বিক্রি হচ্ছে কোটি টাকা থেকে শত কোটি টাকায়, লোকে কিনছেও। যদিও ডীপ ওয়েবে অনেক আগে থেকেই বিক্রি হয়, তবে সেখানকার মেয়েরা প্রায় সবাই পাচারের শিকার। কিন্তু স্বেচ্ছায় ঢাকঢোল পিটিয়ে ভার্জিনিটি বিক্রি করার ট্রেন্ড মাত্র কয়েক বছরের।
তবে এই লেখায় এই টপিক আনার কারণ আছে। একদিকে নারীবাদিরা বলছে, “আমরা ওই পতিতালয়ের পতিতাদের পাশে দাড়াই না যারা বেচে থাকার জন্য পুরুষের **** ও টাকার উপর নির্ভর করে, পুরুষের দয়ায় বেঁচে থাকে।”
এছাড়া ভার্জিনিটি বলে কিছু নেই, ভার্জিনিটির ধারণা পুরুষের তৈরি – এগুলো অতি পুরোনো নারীবাদি কথা। (রেফারেন্স-১৯)
সেই নারীবাদিরাই আবার ভার্জিনিটি বিক্রির বেলায় বলছে, “কিছু জিনিস আছে যা পুরুষের ফ্রি পাওয়া উচিত নয়।” মানে এখানে টাকার পরিমাণ বেশী তাই সুর উল্টে গেছো। (রেফারেন্স-২০)
আরো মজার ব্যাপার হলো, নাটালি ডিলান নামে একজন ফেমিনিস্ট তার ভার্জিনিটি বিক্রি করেন ৩.৮ মিলিয়ন ডলারে। এরপর একটি নারীবাদি ফোরামে তার এই বিক্রির স্বপক্ষে যুক্তি দেন। (রেফারেন্স- ১৬)
এছাড়া গত কয়েকদিন আগে ইউক্রেনের একজন ফেমিনিস্ট তার ভার্জিনিটি বিক্রি করেন এবং তা জাস্টিফাই করতে ফেমিনিস্ট লজিক ব্যবহার করেন। (রেফারেন্স-১৭ )
আর এভাবেই টাকার সামনে নারীবাদের হিপোক্রেসির ব্যাপারটা আরো একবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
৫। সুগার বেবী ও ফেমিনিজম
এই প্রসঙ্গে বলতে গেলে আগেই আমাদের ব্যাকডেটেড, মোল্লা ইত্যাদি ট্যাগ দিয়ে দেওয়া হয়, তাই আমি কানাডিয়ান ফিলোসফার ও ফ্রিডোমেইন ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা স্টেফান বাসিল মলিনিউক্সের বক্তব্য তুলে ধরছি-
“সেই সৃষ্টির শুরু থেকেই পুরুষেরা টাকা আয় করে আনছে আর নারীরা ঘরে থেকে সন্তান মানুষ করছে। এভাবেই যুগের পর যুগ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম পৃথিবীর সব দেশে সব কালচারে চলে আসছে। নারীরা ঘরে থেকেছে, কারণ মানুষ ‘মানুষ’ হওয়ার জন্য এরকমটার প্রয়োজন রয়েছে। এখানে ফেমিনিস্টদের একটা স্টুপিড প্রশ্ন, তাহলে পুরুষেরা কেন সন্তান পালন করবে না? নারীদেরকেই কেন করতে হবে? সোজা উত্তর, পুরুষেরা ব্রেস্টফিডিং করাতে পারে না। আর তাই ‘পুরুষেরা নারীদের ঘরে আটকে রাখতে চায়’ এই থিওরী পুরোপুরি অযৌক্তিক ও হাস্যকর। কিন্তু নারীবাদ নারীদের এরকমটা বোঝাতে সমর্থ হয়েছে যে , ঘরের বাইরে আসলেই নিশ্চিত চাকরী, ক্যারিয়ার। কিন্তু বাস্তবতা হলো খোদ পুরুষদের জন্যই পর্যাপ্ত কর্মসস্থানের ব্যবস্থা নেই। তাই এর ফলে সস্তায় শ্রম পাওয়া গেছে আর একই পরিবারে দুইবার ট্যাক্স ধার্য করা গেছে .
ফেমিনিজম তাই নারীদের জন্য বেস্ট অপশন দিয়েছে বেশ্যাবৃত্তি। কিন্তু একটু রংচং লাগিয়ে, অন্য নামে। সুগার বেবী টার্মটাকে বলা হচ্ছে স্বাধীন , আধুনিক ধারার রিলেশনশীপ। But, come on, whatever you name it, you got this money from your Va**na rental তো এখানে কোথায় গেলো সেই নারীশক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন? নারীবাদ এমন একটা মেন্টালিটি তৈরী করে দিয়েছে, যার কারণে আমাদের মেয়েরা আজকে হাউজওয়াইফ, স্ত্রী, মা হবার পরিবর্তে বেশ্যা হওয়াকেই বেশী পছন্দ করছে।” পুরো বক্তব্যটি রেফারেন্স-৪ এ আছে।
সুগার বেবী কন্সেপ্টটা নারীবাদের সাথে সাংঘর্ষিক কিনা এই প্রশ্নে আগে নারীবাদিদের মতামত ছিলো, অবশ্যই সাংঘর্ষিক। কারণ এটা একরকম বেশ্যাবৃত্তি, পুরুষের দয়া ও দেয়া পয়সায় বেঁচে থাকা।(রেফারেন্স- ১৪,১৫)
সেই সুর বদলেছে। এখন আর একজন নারীবাদিকেও এরকম কথা বলতে শোনা যায় না। বরং একে কিছু ফ্যান্সি নাম দিয়ে টীনেজ মেয়েদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলার তীব্র চেষ্টা দেখা যাচ্ছে। উপরন্তু এটা প্রচার করা হচ্ছে, এই সুগার বেবীরাই আজকের দিনের আসল নারীবাদি!! কারণ? কারণ তারা একটি ‘স্বাধীন’ পেশার সাথে যুক্ত স্বাধীন ক্ষমতাবান নারী। (রেফারেন্স-৩ )
অবশ্য কেমন স্বাধীন তা সাবেক সুগার বেবীদের বক্তব্য শুনলেই বোঝা যায়। সুগার ড্যাডির টাকায় চলছেন মানে তার কথাই সব। তার কথামত সাজগোজ, সেক্সুয়াল অ্যাক্ট, কস্মেটিক সার্জারি এমনকি *স্ট ইমপ্লান্ট পর্যন্ত। আর পানসে হয়ে গেলে টিস্যুর মত ছুড়ে ফেলার অভিজ্ঞতা সব সুগার বেবীর ক্ষেত্রেই কমন। স্বাধীনতার নমুনা বটে!
এসবের পরেও নারীবাদিদেরকে ব্যাপারটা গ্লোরিফাই করতে দেখা যাচ্ছে। কারণ পয়সা পাওয়া যাচ্ছে।
রেফারেন্স-২ এ একটা লিঙ্ক দিচ্ছি, এখানে রিয়েল লাইফ ফেমিনিস্ট সুগার বেবীদের বক্তব্য দেখতে পাবেন।
হিপোক্রেসির লেভেলটা দেখুন, একদিকে এরা বলছে আমরা পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কম নই, আমাদের পুরুষের দরকার নেই, পুরুষ মাত্রই ধর্ষক । আবার এরাই শেখাচ্ছে কিভাবে পুরুষের কাছে শরীর বেচতে হয়, ফেমিনিস্ট সুগার বেবীরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে রীতিমত ট্রেনিং দিচ্ছে।
পয়সাওয়ালা পুরুষ দেখে ফেমিনিজম জলে ধুয়ে গেছে। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার সুগার ড্যাডির টাকায় চলে নির্লজ্জভাবে পুরুষের বিরুদ্ধে বিষেদাগার ছড়াচ্ছে। আর লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হলে #metoo তো আছেই।
আর এভাবেই নারীবাদ সফলভাবে একটা প্রজন্মকে সম্মানজনক জীবনযাপন থেকে ছিনিয়ে এনে বেশ্যায় পরিণত করতে পেরেছে। তার সাথে এমন একটা মানসিকতা তৈরী করতে পেরেছে , যার ফলে মেয়েরা কারো বউ হওয়াকে দাসত্ব মনে করলেও বেশ্যা হওয়াকে স্বাধীনতা মনে করছে।
৬। সুগার বেবীদের করুণ পরিণতি
অধিকাংশ সুগার বেবীদের শেষটা সুখের হয় না। কেউ টাকার প্রয়োজনে কিংবা ‘আধুনিক ধারার রিলেশনশিপে’ বিশ্বাসী হয়ে এই পথে নামলেও কাজ সবার ঐ একই। কেবল পয়সা দিচ্ছে তাই বৃদ্ধ কারো সমস্ত আবদার মেনে নেওয়া, না নিয়ে উপায়ও নেই। লাখ লাখ মেয়ে লাইনে আছে, তাই একজনকে ছুড়ে ফেলতে এসব পয়সাওয়ালা সুগার ড্যাডিরা দুইবার ভাবে না।
স্বামী দুরের কথা, একজন বেশ্যাকে কে গার্লফ্রেন্ড হিসেবেও মেনে নেবে? আর তাই বাজারে চাহিদা শেষ হবার পর এইসব সুগার বেবীরা নিজেদের আবিস্কার করে ঘর-সংসারহীন, নিঃসন্তান ডিপ্রেসড কেউ হিসেবে। অনেকের চল্লিশেই জীবন শেষ হয় আত্মহত্যায়। আর এটাই নারীবাদের বাতলে দেওয়া প্রথাগত নিয়ম ভাঙ্গা আধুনিক ধারার রিলেশনশীপের বাস্তবতা। (রেফারেন্স-৫,৬ )
৭। কে-পপ, নারীবাদ ও সুগার বেবী
কে-পপ বা কোরিয়ান পপের প্রভাব এখন বিশ্বজুড়ে। প্রভাবশালী এই ইন্ডাস্ট্রি থেকে নারীবাদ প্রমোট না করা হলেই বরং আশ্চর্য হবার কথা ছিলো। ‘কনজারভেটিভ’ কোরিয়ান সমাজে এই কে-পপ তাই নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক ও নারীবাদ প্রচারের মাধ্যম হিসেবে ধরা হচ্ছে। যারা এগুলো বলছেন তাদের বক্তব্য হলো, একটা মেয়ে আইডলের জন্য লাখ লাখ ক্রেজি ফ্যান, এটি নারীর ক্ষমতায়ন নয়তো কি? তা ঠিকই, কারণ কোরিয়ার অন্তত ৩০% মেয়ে তাদের পছন্দের আইডলদের মতো করে কসমেটিক সার্জারি করায়।
এখানে আমি কে-পপ ও নারীবাদের সম্পর্ক নিয়ে দুটো পয়েন্ট উল্লেখ করছি।
ক) লিরিকসঃ কে-পপ গানগুলোর লিরিকের মাধ্যমে শক্তভাবে নারীবাদ প্রচার করা হচ্ছে। নিচে কিছু উদাহরণ দিচ্ছি
➤ মিস এ ব্যান্ডের গান- I don’t need a man (টাইটেল দেখেই বুঝে গেছেন নিশ্চয়)
লিরিক-
“Boy don’t say
‘I am your future, trust and lean on me’ no no
Boy don’t play
If you’re not gonna respect me”
➤ রেড ভেলভেট ব্যান্ডের গান- Bad Boy
লিরিক-
“Oh he don’t, he don’t, he don’t know
I can take ‘em head to head, go toe to toe
Oh, if you play I fight back, I fight back
I’ll show you who’s in control”
➤ মামামু ব্যান্ডের গান- Yes I Am
লিরিক-
“If I were to describe myself
I’m a confident woman
To put it in words, a woman of feeling
If you think you can do it, you can follow me (You can)
Follow me, follow me”
আরো কিছু লিরিক দেখতে রেফারেন্স-৭ এ দেওয়া লিঙ্ক এ যান।
খ) সুল্লিঃ আমার দ্বিতীয় পয়েন্ট হলো গতবছর আত্মহত্যা করা চৈ জিন রি বা সুল্লি। তিনি f(x) ব্যান্ডের একজন আইডল ছিলেন। এর বাইরেও তার একটা বিরাট পরিচয় আছে। তিনি ছিলেন ফেমিনিস্ট ও নো ব্রা মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা। একজন কে-পপ আইডল হয়ে বিশ্বজুড়ে চলা একটা নারীবাদি আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনি। একইসাথে তিনি আধুনিক ফেমিনিস্ট কে-পপ আইডলদের অন্যতম অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন। সুল্লি গলায় দড়ি দেবার পর নারীবাদিদের ভিন্ন সুর প্রচার করতে দেখা যায়। ধন্যি মেয়ে, কে-পপের কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো নারীশক্তির প্রতীক। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সুল্লি নিজেই SMTOWN এর অধীনে ছিলেন, যেটা কিনা কোরিয়ার সবচেয়ে বড় এন্টারটেইনমেন্ট কোম্পানি। আর তাদের অধীনে থেকেই তিনি নারীবাদ প্রচার করছিলেন। তার চার-পাঁচ বছর আগের ইন্টারভিউগুলো দেখলেই ব্যাপারটা বুঝতে পারবেন।
আশা করি কে-পপের মাধ্যমে নারীবাদ প্রচারের বিষয়টা পরিস্কার করতে পেরেছি।
তবে এখানে অনেকে চা জি অনের Escape the corset আন্দোলনের কথা আনতে পারেন। এটা ছিলো কে পপের অপ্রাকৃতিক বিউটি স্টান্ডার্ডের বিরুদ্ধে মেকআপ বক্স ভেঙ্গে ফেলার আন্দোলন। কয়েকদিন ইন্সটাগ্রাম ছেয়ে গিয়েছিলো ভাঙ্গা মেকআপ বক্সের ছবিতে। এই আন্দোলনের কথা তুলে বলতে পারেন, কোরিয়ান ফেমিনিস্টরা তো কেপপের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হলো, এটি ছিলো একজন ব্যক্তি নারীবাদির আন্দোলন। কোরিয়াতে মূলধারার যে নারীবাদ প্রমোট করা হচ্ছে তা কে-পপের মাধ্যমেই করা হচ্ছে। আর কোরিয়ান টিনেজ মেয়েরা কে-পপ আইডলই হতে চায়, চা জি অন নয়।
এবার পিছনের চিত্রে আসা যাক। কে-পপের বাস্তবতা নিয়ে আপনি যদি এক প্যারাও পড়ে থাকেন তাহলে তাদের স্লেভারি কন্ট্রাক্টের ব্যাপারে জানার কথা। স্লেভারি কন্ট্রাক্ট বলতে বোঝানো হচ্ছে প্রায় ১০-১২ বছরের একটা চুক্তি যে, তারা ওই সময়ের মধ্যে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের আন্ডারে মিউজিক করতে পারবে না, এমনকি অন্য কোনো পেশায়ও যেতে পারবে না। একেকজন আইডলকে ডেব্যু করানোর আগে অন্তত ২-৭ বছরের ট্রেইনিংইয়ে রাখা হয়। একবার ডেব্যু হয়ে গেলে আসল ব্যাপার শুরু, তারা একরকম দাসে পরিণত হল। গার্ল ব্যান্ডের মেম্বারদের দিয়ে বেশ্যাবৃত্তি করানো ওপেন সিক্রেট। এখানে সুগার বেবী টার্মটা খুব ভালোভাবে যায়। কারণ কে-পপের গার্ল আইডল হতে হলে তার একটা ডিফল্ট বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে, সেটা হলো, ফেসটা হবে বাচ্চাদের মতো কিন্তু দেহের বাকী অংশে সেক্সুয়াল অ্যাপিলের কোনো ঘাটতি থাকবে না। সেরকম না থাকলে কসমেটিক সার্জারি করে বানিয়ে নেওয়া হবে। এখানে উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়া কসমেটিক সার্জারির আন্তর্জাতিক রাজধানী। এরপর এই আইডলরা ‘খাবারে’ পরিণত হয় ম্যানেজার, প্রডিউসার কিংবা বিত্তশালী কর্পোরেট ব্যাক্তিত্বদের। (রেফারেন্স- ৮,৯)
কখনো কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে কন্ট্রাক্ট পেতে কেপপ আইডলদের ভাড়া করে পাঠানো হয় তাদের খুশি করতে, এমনকি বিদেশেও। কেপপের এই অভারসীজ বেশ্যাবৃত্তির ব্যাপারটা ব্যাপকভাবে মিডিয়ায় আসে ২০১৫ সালে, যখন লস অ্যাঞ্জেলেস এয়ারপোর্টে ‘ওহ মাই গার্ল’ নামের একটি গার্ল ব্যান্ডকে আন্ডারএজ প্রস্টিটিউট সন্দেহে অ্যারেস্ট করা হয়। পরে বলা হয় যে, ভুলক্রমে অ্যারেস্ট করা হয়েছে, কিন্তু ততক্ষণে ব্যাপারটা পুরোপুরি পরিস্কার হয়ে যায়। কারণ ব্যান্ডের মেম্বারদের কয়েকজনের বয়স ১৮ বছরের কম ছিলো, প্রাপ্তবয়স্ক হলে সমস্যা ছিলো না! এছাড়া একেকজন মেয়ের পিছনে মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা ঢেলে তাদের দিয়ে কেবল ‘নাচগান’ করানো হবে , ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য। (রেফারেন্স- ১০)
এরপর ব্যাপারটা আরো একবার সামনে আসে গতবছরের সাড়া জাগানো ‘বার্নিং সান’ স্ক্যান্ডালের মাধ্যমে যাতে অনেক কেপপ তারকাই ফেঁসে যান। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো একসময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যান্ড বিগব্যাংয়ের সিউং রি। যার বিরুদ্ধে আনা অন্যতম অভিযোগ হলো তিনি কেপপ আইডলদের দিয়ে একটা প্রস্টিটিউশন ব্রাকেট চালাতেন, এমনকি তাইওয়ানের এক ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কাজ পেতে প্রস্টিটিউট সাপ্লাই দিয়েছিলেন। এই ঘটনা একটা ব্যাপার স্পস্ট করে দেয়, বাইরের দুনিয়া এসব গার্ল আইডলদের আকাশছোয়া খ্যাতি, ক্রেজি ফ্যানবেজ, লাক্সারি লাইফ আর হাসিমুখ দেখলেও তারা আসলে কর্পোরেট সেক্স স্লেভ ছাড়া কিছুই না। (রেফারেন্স- ১১)
একইসাথে, কেপপে সামচুন-ফ্যান (삼촌 팬) বা আজুস্শি-ফ্যান (아저씨 팬) নামে একটা কালচার রয়েছে। কোরিয়ান ভাষায় সামচুন মানে আংকেল। অর্থাৎ কেপপের গার্ল আইডলদের বয়স্ক ফ্যান। ব্যাপারটা খুবই সিম্পল। এসব গার্ল আইডলদের ডাই-হার্ড ফ্যান অল্পবয়সী ছেলেরা, কিন্তু এরা বড়জোর একটা অটোগ্রাফ কিংবা সেলফি পায়। আর বেড পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে ওই আজুস্শিরাই। কারণ এটা অসম্ভব পরিমাণ টাকার ব্যপার যা ওইসব হাইস্কুল পড়ুয়া ছেলেদের নেই কিন্তু বয়স্কদের আছে। (রেফারেন্স-১২,১৩ )
এখনকার সবচেয়ে জনপ্রিয় গার্ল ব্যান্ড ব্লাকপিঙ্কের একটা লিরিকেও কিছুটা আভাস পাওয়া যায়, এরকম-
” I don’t want a boy, I need a male”
এর বাইরে বলতে গেলে, অতিরিক্ত কাজ, এক্সট্রিম ডায়েট, নো প্রাইভেসী, বন্দী জীবন, আত্মহত্যা- সবমিলিয়ে এটা অত্যন্ত ট্রাজিক ইন্ডাস্ট্রি।
ঠিক এই ইন্ডাস্ট্রিকেই দেখানো হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে, মেয়েদের জন্য চরম অনিরাপদ এই ইন্ডাস্ট্রিকে দিয়ে প্রচার করানো হচ্ছে আধুনিক নারীবাদ। এককথায় বলতে গেলে নারীশক্তির প্রকাশ দেখানোর লোভ দেখিয়ে এনে এসব টিনেজ মেয়েদের পরিণত করা হচ্ছে সেক্স স্লেভে।
অবশ্য এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই, এটা নারীবাদিদের অত্যন্ত পুরোনো স্বভাব।∷∷∷∷টিনেজ পর্ন ও নারীবাদ∷∷∷∷∷∷
২০০৮ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত টানা ৬ বছর পর্নের একটা বিশেষ ক্যটাগরি সার্চ লিস্টের শীর্ষে ছিলো। এমনকি ২০১৮ সালে এই ক্যটাগরির পর্ন সার্চ করা হয়েছে ‘৩৩.৫ বিলিয়ন’ বার। সেই বিশেষ ক্যটাগরির নাম টিনেজ পর্ন। টিনেজ পর্ন বলতে এখানে লিগাল বয়সী অর্থাৎ ১৮-২১ বয়সীদের পর্ন কে বোঝাচ্ছি। এই পর্ন এতোটাই পপুলার যে , প্রায় প্রত্যেক পর্ন সাইটেই টিনেজ পর্নের জন্য আলাদা সেকশন আছে। এছাড়া শুধু টিনেজ পর্নের জন্যই সাইট আছে কয়েক ‘মিলিয়ন’। আর ব্যবসায়ের কথা বলতে গেলে, ২০১৬ সালের একটা হিসাব অনুযায়ী, টিনেজ পর্ন বানায় এরকম তিনটা সাইটের কেবল সাবস্ক্রিপ্শন থেকে আয় ছিলো ৫০ মিলিয়ন ডলার—এক বছরে। এতো কাগজ-কলমের হিসাব, এর বাইরে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক আয় রয়েছে পপুলার এই পর্নের। (রেফারেন্স-২১,২২)
টিনেজ পর্ন কেন এত পপুলার তা বুঝতে কষ্ট হয় না। মানুষ স্বভাবতঃই নিষ্পাপ ও অনভিজ্ঞ কারো সেক্সুয়াল অ্যাক্ট দেখতে পছন্দ করে। এছাড়া কেউ পয়সা খরচ করে নিশ্চয় মাঝবয়স পেরোনো চামড়া কুঁচকে যাওয়া মহিলাকে দেখতে পছন্দ করবে না। আর তাই এটাই একমাত্র ক্যাটাগরি যার চাহিদায় কখনো ভাটা পড়ে নি।
এখানে একটা বিরাট প্রশ্ন রয়েছে। সেটা হলো, এতো বিপুসঙ্খ্যাক অল্পবয়সী মেয়ে এরকম একটা ইন্ডাস্ট্রিতে কিভাবে আসলো? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আধুনিক ইন্টারনেট পর্নের শুরুর ব্যাপারে হালকা জানতে হবে। শুরুতে কেবল পেশাদার বেশ্যাদের দিয়ে পর্ন তৈরী করা হত। কিন্তু এতে যে সমস্যা ছিলো— বয়স্ক, একঘেয়েমী, সৌন্দর্যের ঘাটতি। স্বাভাবিকভাবেই নতুন ও অল্পবয়সী মেয়ের চাহিদা তৈরী হল। কিন্তু সাপ্লাই আসবে কোত্থেকে? যে সময়টাতে ইন্টারনেট পর্নের শুরু, সেই সময়ে কোনো মেয়ে প্লেবয় টাইপের ম্যাগাজিনের মডেল হলেও তাকে বাকা চোখে দেখা হত, স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হত। সেখান থেকে আজকের টিনেজ পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে উপচে পড়া সাপ্লাই, কিভাবে হলো? খুব সিম্পল একটা টুল, নারীবাদ ব্যবহার করে।
ইন্টারনেটে পাঁচ ধরণের টিনেজ পর্ন পাওয়া যায়।
১। স্বেচ্ছায়ঃ নিজের ইচ্ছায় টাকা বা খ্যাতির জন্য যারা মেইনস্ট্রিম পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়েছে।
২। পাচারকৃত বা বিক্রিতঃ যাদেরকে জোর করে পর্নে অভিনয় করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এরকম পর্নের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
৩। অ্যামেচার বা ক্যামগার্লঃ যারা সরাসরি ইন্ডাস্ট্রিতে না ঢুকে নিজেদের মত ফ্রিলান্স পর্ন বানায়।
৪। রেভেঞ্জ পর্নঃ এগুলো নিজের ক্যামেরায় তোলা পর্ন, যা পরবর্তিতে বয়ফ্রেন্ড বা অন্য কেউ অনলাইনে ছেড়ে দিয়েছে।
৫। স্পাই ক্যামঃ এই নোংরা ক্যাটাগরির শিকার যে কেউ হতে পারে। এগুলো গার্লস টয়লেটে বা ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরা দিয়ে তোলা।
প্রথম তিন ক্যাটাগরি টিনেজ পর্নের অধিকাংশই দখল করে আছে। আর এই তিন ক্যাটাগরির পর্নের সাপ্লাইয়ের জন্য নারীবাদ সরাসরি জড়িত। এটাই এই লেখার আলোচ্য বিষয়। চলুন শুরু করা যাক।
➤ স্বেছায় ও অ্যামেচার টিনেজ পর্ন
অন্ততঃ ৩০% টিনেজ মেয়ে স্বেচ্ছায় পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে আসে। এর বাইরে ক্যামগার্ল পর্নের বিশাল একটা পরিসর রয়েছে। তবে দুই জায়গাতেই সাপ্লাইয়ের কারণ সিমিলার। যারা স্বেচ্ছায় আসে তারা মুলতঃ পয়সা আর খ্যাতির জন্যই আসে। একটা টিনেজ পর্নে অভিনয়ের জন্য একজনকে ১,০০০+ ডলার দেওয়া হয় যা এই বয়সী কারো জন্য সত্যিই অনেক টাকা। মুলতঃ সুগার বেবী হওয়া ও পর্নে অভিনয় করতে আসার কারণ প্রায় একই রকম।
তবে এই বয়সীদের পর্নে সবচেয়ে বেশী ড্রাইভ করছে নারীবাদ, স্বাধীন নারী কন্সেপ্ট। পকেটে পয়সা আসছে , কারো কাছে হাত পাততে হচ্ছে না, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাধীন নারীর পারফেক্ট প্রতিচ্ছবি, সেটা পর্নে অভিনয় করেই হোক না কেন।
ব্যাপারটা বুঝতে আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি। ২০ বছর একজন টিনেজ ফেমিনিস্ট পর্ন অভিনেত্রী (সঙ্গত কারণেই নাম বলছি না), একটা সাক্ষাতকারে বলেন, “আমি লোন করার চেয়ে বরং পর্নে অভিনয় করে আইপ্যাড কিনেছি, পার্স কিনেছি, কারো কাছে হাত পাতা লাগছে না, এটা যদি নারীর ক্ষমতায়ন না হয় তাহলে কোনটা? আমি একজন স্বাধীন নারী এবং আমার বাবা আমাকে নিয়ে গর্বিত হবেন।”
তার এই ব্যাপারে অনেকে অভিযোগ করে যে, একজন একইসাথে কিভাবে ফেমিনিস্ট আর পর্নস্টার হন? এর জবাবে একাধিক নারীবাদি সাইটে তার পক্ষে বক্তব্য দেওয়া হয়। একইসাথে এটাও স্পষ্ট করা হয়, একজন নারীর যেকোনো পেশা বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে, এবং পর্নগ্রাফি এখনকার সময়ের অন্যতম স্বাধীন পেশা। পাশাপাশি আরো মেয়েদের পর্নে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য উৎসাহিত করা হয়।
এভাবেই ফেমিনিজম টিনেজ পর্নের জন্য বিরাট একটা পজিটিভ গ্রাউন্ড ও সাপ্লাই তৈরী করে দিয়েছে।
পর্ব ৬/২ , পর্ন ইন্ডাস্ট্রি ও নারীবাদ, এই লেখায় এই বিষয়ে বিস্তারিত বলেছি।
➤ নারী পাচার, নারীবাদ ও টিনেজ পর্ন
পর্নের Escalation Effect নামে একটা ইফেক্ট আছে। এর মানে হলো, একজন পর্ন আসক্ত ব্যক্তি আগে দেখা পর্নে পুনরায় আগ্রহ বোধ করে না, তার আরও এক্সট্রিম কিছু দরকার। টিনেজ পর্নের ক্ষেত্রেও তাই। এমন কিছু অ্যাক্ট যা সুস্থ মানুষের পক্ষে ভাবা কঠিন। তো স্বাভাবিকভাবেই স্বেচ্ছায় কোনো মেয়ে ওগুলো করতে চায় না। অতএব তাকে বাধ্য করা হয়। একটা পরিসঙ্খ্যানে দেখা যায়, ৬৩% টিনেজ পর্নে মেয়েকে জোর করা হয়, যেটা সাধারণ পর্নের ক্ষেত্রে ৪৯%। এগুলোর কিছু করা হয় স্বেছায় আসা মেয়েদের আগে থেকে না জানিয়ে, আর অধিকাংশের জন্যই সাহায্য নেওয়া হয় পাচারের। (রেফারেন্স-২৩)
এই মেয়েগুলো যখন তাদের সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ার শেষ করে ইন্ডাস্ট্রি থেকে বেরোচ্ছে তখন তাদের শরীরে থাকছে স্থায়ী ক্ষত, ইন্টারনাল অর্গান ড্যামেজ, আর জীবনের কিছু বুঝে ওঠার আগেই শরীরে অন্তত ২/৩ টা এসটিডি। অনেকেরই জীবন শেষ হচ্ছে আত্মহত্যায়। নিউইয়র্ক টাইমসের একটা খবরের শিরোনাম ছিলো এরকম, কেনো পর্নস্টাররা আশংকাজনক হারে আত্মহত্যা করছে? আর আত্মহত্যা করা অধিকাংশই টিনেজ বয়সী।
টিনেজ পর্নের একটা বড় অংশ সহিংস পর্ন। এর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি। শুধু সহিংস টিনেজ পর্নের সাইটই রয়েছে হাজার হাজার। ২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ি এরকম একটা সাইটের রেগুলার ভিজিটর ছিলো ৬ কোটি—প্রতি মাসে। চুড়ান্ত মাত্রার শারীরিক নির্যাতনে ভরপুর এসব ভিডিওগুলো কোনো বিহাইন্ড দ্যা সিন নয়, বরং এগুলোই মুল কন্টেন্ট। এই সহিংস পর্নের প্রায় সবটাই করানো হয় পাচার হয়ে যাওয়া মেয়েদের দিয়ে। আমেরিকাতে প্রতি বছর প্রায় ৩০০,০০০ টিনেজ মেয়ে পর্ন ইন্ডাস্ট্রির জন্য পাচার হয়ে যায়। (রেফারেন্স-২৪, ২৮)
আর এই পাচারের জন্য সরাসরি দায়ী করা হচ্ছে নারীবাদকে।
কেন?
এরজন্য আমাদের জানতে হবে পাচার কিভাবে হচ্ছে। ম্যাক্সিমাম পাচারের ঘটনা ঘটছে কোনো ক্লাব , পার্টি অপরিচিত কারো সাথে ডেট থেকে। পাচারকারীকে বলা হয় ‘প্রেডিটর’।
এই টিনেজ মেয়েদেরকে নারীবাদ চরম মিথ্যা কিছু জিনিস বুঝিয়েছে। একটা ছেলে রাতে বাসার বাইরে গিয়ে বিয়ার খেতে পারলে তুমি কেন পারবে না, মাই বডি মাই চয়েস। খুব সুন্দর যৌক্তিক কথা । কিন্তু এটা খুব ভুল সময়। বয়স অল্প হওয়ায় প্রেডিটরের হাত থেকে বাচার ক্ষমতা যেমনি নেই, না আছে ফিনান্সিয়াল স্থিতিশীলতা, না আইনের মারপ্যাচ সম্পর্কে কোনো ধারণা। বলা হচ্ছে তোমার বয়সী একটা ছেলে থেকে তুমি কি কম শক্তিশালী? আর এগুলো ব্যাপক চর্চা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইয়াং ফেমিনিস্ট ডটকম টাইপের সাইটগুলোতে গেলে এর বাস্তব চিত্র দেখতে পাবেন। অসংখ্য মেয়ে এই এম্পাওয়ারমেন্টের প্রকাশ দেখাতে গিয়ে প্রেডিটরের খপ্পরে পড়ছে আর চালান হয়ে যাচ্ছে পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে।
সবশেষে এই মেয়েদের সুরক্ষা দিতে পারতো পরিবার, অন্ততঃ প্রেডিটরদের হাত থেকে বাচাতে পারতো। কিন্তু একটা মেয়ে যা ইচ্ছে তাই করবে, আপনি কথা বলার কে? আপনি তার জন্মদাতা, মালিক নন—এই স্লোগানগুলো কাদের? কারা বাবা তার মেয়ের খোঁজ রাখবেন, এই ব্যাপারটাকে পর্যন্ত ব্যাক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের নাম দিয়েছে, আন্দোলনের ইস্যু বানিয়েছে, আইন পাশ করিয়েছে? নারীবাদিরা নিশ্চয়।
আর তাই স্রেফ নিজেদের আন্দোলনকে জিইয়ে রাখার জন্য উস্কে দিয়ে এসব মেয়েদেরকে চুড়ান্ত মাত্রার ভালনারেবল করে প্রেডিটরদের হাতে তুলে দেওয়ার দায় কি নারীবাদ কোনোদিন এড়াতে পারবে?
এখানে একটা স্টুপিড প্রশ্ন আসতে পারে ,প্রেডিটরদের কী কোনো দোষ নেই? এর উত্তরে একটা সিনারিও দেখাই। ধরুন, কেউ বেশ দামী একটা জিনিস চোরের জন্য সহজতম জায়গায় রাখলো এবং চুরি হয়ে গেল। স্বাভাবিকভাবেই সবাই যে জিনিসটা সেখানে রেখেছে, তাকে বকাবকি করবে। তারমানে কি তারা এটা বলছে যে, চোর নির্দোষ?
(তেমনিভাবে ধর্ষণের কার্যকারণ নিয়ে কথা বললে একদল নারীবাদিকে তেড়ে আসতে দেখা যায়- সব যেন মেয়েটার দোষ, ধর্ষকের যেন কোনো দোষ নেই ইত্যাদি। আসলে কেউ বলেনি ধর্ষক নিরাপরাধ। ধর্ষণ অপরাধ, ধর্ষক অপরাধী এবং অবশ্যই শাস্তির যোগ্য-এটা মেনে নিয়েই সবাই ধর্ষণের কারণ , সমাধান ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতে আসে। ) এখানে প্রেডিটরদের নিরাপরাধ কেউ বলছে না, কিন্তু যেই নারীবাদিরা ব্যাক্তিস্বাধীনতার স্লোগান তুলে টীনেজ মেয়েদেরকে পরিবার থেকে ছিনিয়ে এনে একরকম প্লেটে সাজিয়ে পর্ন ইন্ডাস্ট্রির হাতে তুলে দিলো, তারাও কি সমান অপরাধী নয়? অন্তত পশ্চিমা পুরুষেরা এটাই মনে করে। আর মনে করে বলেই তারা এখন ‘ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের’ মাধ্যমে নিজেদের মেয়েদেরকে নিরাপত্তা দিতে শুরু করেছে, ঘরে আটকে রাখছে। উদাহরণস্বরূপ, রেফারেন্স-২৭ এ একটা ভিডিও দিয়েছি।
এতসংখ্যক নিষ্পাপ মেয়েদের এই নোংরা ইন্ডাস্ট্রিতে আসা দুঃখজনক। আর নারী অধিকারের ঠিকাদারী নিয়ে রাখা নারীবাদই যখন তাদের এই অন্যায় পরিণতির কারণ হয় সেটা আরো বেশী দুঃখজনক।
➤ স্পাইক্যাম পর্ন ও কোরিয়া
স্পাইক্যাম পর্নের কথা বলতে গেলে সবার প্রথমেই আসবে দক্ষিণ কোরিয়ার নাম। দেশটাতে এটা পুরোপুরি একটা ইন্ডাস্ট্রি। কোরিয়ার অধিকাংশ হোটেল কিংবা গার্লস টয়লেটে স্পাইক্যামের ঝুকি রয়েছে, রীতিমত একটা মহামারী। বলার অপেক্ষা রাখে না, এর সবচেয়ে বড় ভিকটিম টিনেজ মেয়েরাই। এর জন্য আলাদা সাইটও রয়েছে, যার কোনোটির কেবল রেজিস্টার্ড মেম্বারের সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন। গতবছরের My life is not your porn আন্দোলনের সময় ব্যপারটা বিশ্ব মিডিয়ায় হইচই ফেলে দেয়। গতবছর এরকম একটা সাইটের প্রতিষ্ঠাতা একজন ‘মহিলাকে’ চার বছরের সাজা দেওয়া হয় ও ১২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
কিন্তু কেন এরকম হল? কেন সবচেয়ে বেশী খোজা পর্নের তালিকায় কোরিয়ান স্পাইক্যাম পর্ন উপরের দিকে থাক? এর উত্তর দিয়েছেন কোরিয়াতে স্পাইক্যাম পর্নের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশী অ্যাক্টিভ থাকা সন হায়ে ইয়ং।
সন হায়ে ইয়ং এর মতে, “কোরিয়ান ওয়েভ তথা কে-পপ, কে-ড্রামা আর কে-মুভির তুমুল জনপ্রিয়তার কারণে মানুষ কেবল তারকাদেরই নয়, কোরিয়ান মানুষদেরকেই পছন্দ করতে শুরু করেছে। আর এই কারণেই কোরিয়াতে স্পাই ক্যামের এরকম ‘মহামারী’ শুরু হয়েছে।”
এখানে ব্যাপারটা লক্ষনীয়, কোরিয়ান ফেমিনিজম প্রচারের টুলগুলোই এখন কোরিয়ার সাধারণ মেয়েদের জন্য চরমতম ভীতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। কে-পপের কথা তো আগেই বলেছি। কে-ড্রামার মাধ্যমে নারীবাদ প্রচার অত্যন্ত সাধারণ ব্যাপার। পরিসরের সীমাবদ্ধতা থাকায় এখানে একটা উদাহরণ দিচ্ছি। এখানে একটা কে-ড্রামায় মুসলিম নারীদের পোশাক বোরখা-নিকাবকে অবমাননা করা হয়েছে, যেটা করতে নারীবাদিরা অত্যন্ত পছন্দ করে। (রেফারেন্স-২৬ )
এর বেশী মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
পরিশেষে বলা যায়, আধুনিক পুজিবাদি অর্থব্যবস্থায় সবকিছুই পণ্য, আর সব ইন্ডাস্ট্রিতেই মেয়ে দরকার। আর সবচেয়ে বেশী মেয়ে কোথায় আছে? উত্তর হলো, নারীনেত্রীদের কাছে। আর তাই সবগুলো মিডিয়া আর কর্পোরেশনগুলো থেকে একযোগে নারীবাদের প্রচারণা মোটেও কাকতালীয় ব্যাপার নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় , পিরিয়ড নিয়ে ব্যাপক মাত্রার নির্লজ্জ প্রচারণা। তাদের উদ্দেশ্য যাই থাকুক, স্যানিটারি ন্যাপকিনের একটা বিরাট মার্কেট তৈরী হয়েছে, যা নতুন একটা মার্কেট এবং ফল সব উঠেছে ঐ কর্পোরেশনগুলোর ঘরেই। ফেমিনিজম এখানে একটা মার্কেটিং টুল মাত্র।
আমাদের দেশের নারীবাদিরা কিভাবে স্বাবলম্বী করার নামে আমাদের কিশোরীদেরকে এনজিও আর কর্পোরেট কর্মকর্তাদের ‘খাবারে’ পরিণত করেছে, সামান্য খোজ নিলেই জানা যাবে। ব্যাপারটা অত্যন্ত সংবেদনশীল, তাই বেশী কিছু বলা যাচ্ছে না। রেফারেন্সে ১৮ তে লিঙ্ক দিয়েছি দেখে নিতে পারেন। তবে বাংলাদেশী নারীবাদ নিয়ে কেউ গবেষণা করলে ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন আশা করি।
আজ এখানে শেষ করছি।
কিছু কথাঃ
১। লেখার আকার অনেক বড় হয়ে যাওয়ায় “কিছু কমেন্টস” সেকশনটি বাদ দেওয়া হলো।
২। সংবেদনশীল বিষয়বস্ত যেমন পর্ন অভিনেত্রীর নাম, অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট আছে এরকম কোনো লিঙ্ক রেফারেন্সে দেওয়া হবে না। তবে কারো রিসার্চের প্রয়োজনে আমাকে নক করতে পারেন।
৩। এই লেখার দ্বিতীয় অংশ “পর্ন ইন্ডাস্ট্রি ও নারীবাদ” পড়ার অনুরোধ রইলো। কিছু ইন্টাররিলেটেড তথ্য রয়েছে।
যারা চার হাজার শব্দের এই লেখাটি পড়লেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মাআ’সসালাম।
রেফারেন্সঃ১। https://www.geek.com/…/chinese-girl-offers-virginity…/
২। https://www.sugardaddy.world/sugar-talks/sugar-baby-feminist/page1
৩। https://en-volve.com/…/are-sugar-babies-the-new-face…/
৪। https://www.youtube.com/watch?v=Fyf5GGNEpjI
৫। https://www.edp24.co.uk/…/sugar-baby-student-dark-side…
৬। https://www.dailymail.co.uk/…/Student-reveals-dark...
৭। https://preen.ph/…/feminism-in-k-pop-women-are-using…
৮। https://www.bloomberg.com/…/k-pop-s-dark-side-assault…
৯। https://www.cheatsheet.com/…/the-shocking-dark-side-of…/
১০। http://www.bbc.co.uk/…/k-pop-group-oh-my-girl-detained…
১১। https://www.dw.com/…/sex-videos-and…/a-47915273
১২। https://thegrandnarrative.com/…/girl-groups-samchon…/
১৩। https://onehallyu.com/…/41624-korean-man-says-k-pop…/
১৪। https://babe.net/…/im-sorry-im-not-buying-feminist…
১৫। https://www.feministcurrent.com/…/sugar-sisters-third…/
১৬। https://jezebel.com/natalie-dylan-continues-to-believe…
১৭। https://pluralist.com/girl-auctions-virginity/
১৮। https://bit.ly/3bVvH7M, https://bit.ly/2wIoJD5
১৯। https://www.hercampus.com/…/feminism-virginity-isnt-real
২০। https://www.dailydot.com/irl/virginity-auctions/
২১। https://fightthenewdrug.org/this-years-most-popular…/
২২। http://www.globalwomenconnected.com/…/the-american…/
২৩। https://fightthenewdrug.org/how-teen-girls-get-tricked…/
২৪। https://socialwork.asu.edu/sites/default/files/Teen%20Sex%20Trafficking%20Awareness%20Training%20Brochure.pdf
২৫। https://archive.attn.com/…/rashida-jones-documentary…
২৬। https://www.youtube.com/watch?v=ardvihXuvF8
২৭। https://www.youtube.com/watch?v=jEurSO3nQE4
২৮। https://www.youtube.com/watch?v=97XPsxz3hl8
