আমার প্রিয় ভাই,
দ্বীনের বুঝ পাবার পর কিংবা ইলম অর্জনের পথে প্রবেশের পর,
তুমি শুধু বিদায়াতি দের বাতিল করে গেলে,
শুধু কে সহীহ আকীদার আর কে বাতিল তা খুঁজে গেলে,
শুধু খারেজি দের চিনে চিনে ট্যাগ দিয়ে গেলে,
কোনটা বিদায়াত কোনটার রেফারেন্স নেই খুঁজে গেলে,
কে কুফরি আকীদা পোষণ করে তা বের করে খন্ডন করে গেলে,
কে ফ্রেন্ডলিস্টে গাইরে মাহরাম রেখেছে ধোলাই করে গেলে,
শুধু বিপরীত ঘরোয়াকে নিয়ে বিদ্বেষ মূলক পোস্ট দিয়ে গেলে।
.
এভাবেই তোমার মৃত্যু চলে আসল। তুমি আমল করার সময় পাওনা। অনেক ব্যস্ত তুমি এসব কাজে।
তুমি বাতিল কে বাতিল করতে এতই ব্যস্ত যে নিজের নফসের মধ্যকার কুপ্রবৃত্তি, অন্তরের গুনাহ গুলো বাতিলের সময় পাওনা !
.
হয়না অনেক সময় এমন যে, তুমি সালাতে দাঁড়িয়েছ অথচ মনে চিন্তা আসছে ফেসবুকে বিপরীত ঘরোয়ার কোন মানুষ একটা ভুল হাদিস প্রচার করছে তাকে যেয়ে খন্ডন করতে হবে? সালাতে খুশুর থেকে এটাই বরং তোমার ঈমানি দায়িত্ব।
.
ফরজ সালাত কোনরকম শেষ করলা। সুন্নত নফল এর সময় নেই। ফেসবুকে যুদ্ধে নামতে হবে। বাতিলদের বাতিল করতে হবে।
.
.
সব ঠিক আছে। বাতিলদের তো বাতিল করতেই হবে। মানুষদের চিনিয়ে দিতে হবে ‘হক’ টা।
কিন্তু চব্বিশ ঘন্টাই কি তোমার হাতে এসব করার মত সময়?
তুমি কি আরবি ভাষা জানো? না জানলে সেটা শেখার কথা ভেবেছ?
তোমার কোরআন তিলাওয়াত কি সহীহ?
তুমি কি গত রাতে সূরা মুলক পড়েছ?
গত শুক্রবারে কাহাফ পড়েছ?
ফরজ সালাতের পরের আমল গুলো করেছ?
.
আচ্ছা তোমাকে কবরে কি অন্যকে নিয়ে প্রশ্ন করা হবে?
তোমাকে কি বলা হবে অমুকের রব কে? অমুকের দ্বীন কি ছিল?
বরং তোমাকে তো প্রশ্ন করা হবে, ‘তোমার রব কে?’ ‘তোমার দ্বীন কী?’
.
হাশরে বিচারের দিন কি তোমাকে বলা হবে যে কে বিদায়াতী, কে খারেজি, কার আকীদাহ কুফরি, কার সালাত সহীহ হয়না?
অথচ তোমাকে ব্যক্তি “তুমি” নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। তোমার আমল নিয়ে তোমাকে বিচার করা হবে। কার সালাত সহীহ ছিলনা সেটা নিয়ে নয়, বরং তোমার সালাত সহীহ হয়েছে কিনা, সেটা কবুল হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে।
.
ইলম অর্জন করছ আলহামদুলিল্লাহ্। তুমি রহমত প্রাপ্ত। কিন্তু
ইলম অর্জনের থেকে আমল জরুরী। আমল এর সাথে আদবও জরুরী।
.
তুমি তো কোরআন হাদিসের জ্ঞান রাখো। তুমি তো জানো যে, ইতিহাস সাক্ষী দেয় ইলমওয়ালা অনেক বুজুর্গই অহংকার ঔদ্ধত্য কিংবা শয়তানের ফিতনায় পরে জাহান্নামী হয়েছে।
অথচ সামান্য ‘আমলওয়ালা’ অনেকে জান্নাতী হয়েছে।
.
নিজের সংশোধনে মন দাও। কেয়ামতের দিন তুমি শুধু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। হাশরের দিন তুমি বলবে ইয়া নাফসি ইয়া নাফসি। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।
তবে আজ কেন অন্যকে নিয়ে এত ব্যস্ততা?
এখন থেকেই অভ্যাস করো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার।
.
তোমার ইলম যেন তোমাকে অহংকারী না বানায়।তোমার ইলম অর্জনের নিয়ত যেন হয় নিজে সঠিকটা জানার, অন্যকেও সঠিকটা জানানোর, কিন্তু এমন যেন না হয় যে অন্যের সামনে নিজেকে জাহির করা। তুমি যে জানো, সে যে জানেনা এটা প্রমাণ করার।
.
আল্লাহ তোমাকে, আমাকে, আমাদের সবাইকে যেন হেদায়াতের উপর অটল রাখেন এবং আমাদের গুনাহ গুলো সওয়াব দ্বারা প্রতিস্থাপন করে দেন। আমীন।