কিছু বিষয়ের মুহাসাবা করে নিলে মন্দ হয় না। প্রশ্নগুলোর উত্তর আমাকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করুন। বিবেকের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সবগুলোর কৈফিয়ত দেওয়ার চেষ্টা করুন।
১. আপনি কি সর্বপ্রকার শিরক, বিদআত ও কবিরা গুনাহ থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারছেন?
২. আপনি কি রাসুলুল্লাহ সা.-এর সুন্নত দ্বারা নিজেকে সজ্জিত করতে পেরেছেন? বিশেষত, আপনি কি ঘোড়ার রাইডিং ও গাড়ির ড্রাইভিং পারেন? আপনি কি পারেন আপনার প্রিয়নবির মতো তির ও তরবারি চালাতে? সর্বযুগেই এই সুন্নতগুলো আপন অবস্থায় বহাল থাকবে। যুগ যতই উন্নত হোক না কেন, এগুলোর ফজিলত হারিয়ে যাবে না। সুতরাং এগুলো শুধু আমাদের ঐতিহ্যের অংশই নয়; ইবাদতেরও অংশ।
৩. আপনার দেহ কি একজন সাহসী সৈনিকের মতো, নাকি অলস দুনিয়াদারদের মতো? যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনি কি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন? নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট শক্তিশালী মুমিন, দুর্বল মুমিন অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও অধিক প্রিয়।
৪. আপনি কি সুন্নতের অনুসরণে নিয়মিত শরীরচর্চা করে নিজেকে ফিট ও শক্তিশালী রাখেন, নাকি খেতে খেতে ভুঁড়ি বানিয়ে অলস হয়ে পড়ে থাকেন? আত্মরক্ষার কৌশলাদি রপ্ত করতে পেরেছেন তো?
৫. আপনি কি জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী? ইসলামের যেসকল প্রতীক, বিধান ও ঐতিহ্য আমাদের গাফিলতিতে হারিয়ে গেছে, আমলিভাবে না হলেও ইলমিভাবে আপনি কি সেগুলোকে জিন্দা রেখেছেন নাকি সেগুলোর মৃত্যুই আপনাকে আনন্দিত করেছে?
৬. বাবা-মা ও সন্তানের প্রতি আপনার যে ভালোবাসা, আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা কি তারচে বেশি নাকি কম? নারীদেহের প্রতি আপনার যে আকর্ষণ, শাহাদাতের প্রতি আপনার আকর্ষণ তারচে অধিক নাকি স্বল্প?
৭. আপনি কি সর্বদা আল্লাহকে স্মরণ রাখেন? রাগের সময়, অহংকারের সময়, গিবতের সময়, মিথ্যাবাদিতা ও মিথ্যাচারের সময়, কুদৃষ্টির সময়, কুভাবনার সময়, মুমিনদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সময় আল্লাহকে স্মরণ থাকে তো?
৮. পূর্ণাঙ্গ দীনের দাওয়াতের জন্য নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিগৃহীত, রক্তাক্ত ও অপমানিত হওয়ার বিরল সৌভাগ্য রাসুলুল্লাহ সা. ও সাহাবিদের মতো আপনার হয়েছে তো?
খুব বেশি প্রশ্নের দরকার নেই। নীরবে নিভৃতে বসে এই আটটা প্রশ্নের উত্তর বের করুন। হোম কোয়ারিন্টাইনের সময়কে কাজে লাগানোর জন্য এরচে উত্তম কিছু হতে পারে না। সবগুলোর উত্তর যদি আশাব্যঞ্জক হয়, তাহলে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন এবং আমলে আরও বেগবান হোন। আর কোনোটার উত্তর যদি নিরাশাব্যঞ্জক হয়, তবে সময় থাকতেই নিজেকে সংশোধন করুন। সফল তো সেই ব্যক্তি, যে নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছে, সময় থাকতেই পরিশুদ্ধ হয়েছে।
উস্তাজ আলি হাসান উসামা (হাফি.)