?সালাফ কারা?
সালাফ [سلف] একটি আরবি শব্দ যার আভিধানিক অর্থ হলো যে পূর্বে গত হয়েছে কিংবা যে পূর্বে গেছে।
সালাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ নিয়ে মতামতঃ
ক.ইমাম আল-বাগাভী রাহিমাহুল্লাহর মতে সালাফ হলো বিগত বাপ-দাদাগণ।
খ.ইমাম ইবনু মনযুর রাহিমাহুল্লাহ এবং ইমাম ইবনুল আসীর রাহিমাহুল্লাহর সালাফ হলো বয়স এবং মর্যাদায় অগ্রবর্তীগণ৷
কিন্তু মূলত সালাফ বলতে আমরা বুঝি উম্মাহর প্রথম তিন প্রজন্ম, মতান্তরে প্রথম চার প্রজন্ম অর্থাৎ সাহাবীগণ, তাবি’ঈগণ, তাবে-তাবি’ঈগণ এবং তাবা-তাবি’ঈদের ছাত্রগণ।
? সাহাবীঃ
সাহাবী শব্দের বহুবচন হলো সাহাবা কিংবা আসহাব।
১.সাহাবীদের সংজ্ঞায় ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “আমার নিকট সবচেয়ে বিশুদ্ধ মতে পৌছেছে সাহাবী হলো সে, যে ঈমানদার অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাক্ষাৎ পেয়েছে এবং মুসলিম হিসেবে মৃত্যুবরণ করেছে। সুতরাং যে তার সাথে দীর্ঘসময় কিংবা অল্পসময় অবস্থান করেছে এবং যে তার থেকে বর্ণনা করেছেন কিংবা করেননি এবং তাকে দেখেছে কিন্তু তার সাথে বসেনি এবং যে অন্ধত্বের জন্য তাকে দেখেনি – তারা এর[সাহাবীদের] অন্তর্ভুক্ত।” [আল ইসাবাহ]
২.ইমাম আলী ইবনুল মাদীনি রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গ দিয়েছে কিংবা তাকে দেখেছে যদিওবা তা এক ঘন্টার জন্যেও হয়, সে সাহাবীগণের একজন।”
৩.ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “মুসলিমদের মধ্যে যে ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গ দিয়েছে কিংবা তাকে দেখেছে – সে সাহাবীগণের একজন।”
সাহাবীযুগের সময়কালঃ
১১০ হিজরিতে সর্বশেষ সাহাবী আবু তুফাইল রাদিআল্লাহু আনহু এর ইন্তেকালের মাধ্যমে সাহাবীযুগ তথা উম্মাহর শ্রেষ্ঠ যুগের পরিসমাপ্তি ঘটে।
?তাবি’ঈঃ
১.ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “তাবি’ঈ হচ্ছেন – যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন।”
২.ইমাম খতিব আল বাগদাদী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “তাবি’ঈ হচ্ছেন তিনি, যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন।”
৩.ইরাকী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, “তাবি’ঈ হচ্ছেন – যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন।”
৪.ইমাম হাকেমের মতে যিনি সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন তিনি তাবি’ঈ।
তাবিঈ যুগের সময়কালঃ
ঐতিহাসিকদের মতে এই যুগের সময়কাল ১১০ হিজরি থেকে শুরু হয়ে ১৬৪ থেকে ১৭৪ হিজরির মধ্যে। ইমাম সুয়ূতি রাহিমাহুল্লাহর মতে এ যুগের ব্যপ্তি ১০০ হিজরি থেকে ১৭০ হিজরি পর্যন্ত।
?তাবে-তাবি’ঈঃ
তাবে-তাবি’ঈ হলেন তারা যারা তাবি’ঈদের সাক্ষাৎ পেয়েছেন।
তাবে-তাবিঈ যুগের সময়কালঃ
ইমাম সুয়ূতি রাহিমাহুল্লাহর মতে এ যুগের ব্যপ্তি ২২০ হিজরি পর্যন্ত।
?তাবে-তাবিঈদের ছাত্রগণঃ
তারা তাবে-তাবিঈদের সাক্ষাৎ লাভ করেছেন।
তাদের জন্ম অবশ্যই ২২০ হিজরির আগে পর্যন্ত।
?সুতরাং সালাফ হবার শর্তঃ
১.অবশ্যই মুসলিম হতে হবে।
২.অবশ্যই ২২০ হিজরির পূর্বে জন্মগ্রহণ করতে হবে।
৩.পরবর্তী প্রজন্ম তার পূর্বের প্রজন্মের সাক্ষাৎ লাভ করতে হবে, যেমনঃ তাবি’ঈ তারা, যারা সাহাবীর সাক্ষাৎ পেয়েছেন।
অতঃপর ২২০ হিজরির পরে যারা জন্মগ্রহণ করেন তারা খালাফ।
Collected