হাদীস সহীহ হলেই কী আমলযোগ্য?!
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রত্যেকটি কথা ও কাজ আমাদের চোখে ও মাথায় রাখার উপযুক্ত। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এমন কিছু হাদিস আছে যেগুলোর উপর উম্মতের আমল বৈধ নয়। এগুলো হয়তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ আমল। কিংবা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন করেছেন কিন্তু পরবর্তীতে রহিত হয়ে গেছে।
একটি সহীহ হাদিসের উপর আমল করতে হলে তিনটি বিষয় লক্ষণীয়।
১. এটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ কোনো আমল কীনা? যেমন একসাথে এগারো বিবি রাখার হাদিস।
২. এটি মানসুখ বা রহিত কী না? যেমন নামাজে কথা বলার হাদীস।
৩. সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈগণ সকলেই কিংবা তাদের মধ্য হতে কেউ এটার উপর আমল করেছেন কীনা?যদি সকলেই এর উপর আমল পরিত্যাগ করেন তাহলে এটার উপর আমল করা যাবেনা। কারণ সাহাবী তাবেঈগণ অবশ্যই এটার উপর আমল করা যাবেনা জেনেই আমল পরিত্যাগ করেছেন।
এই তিনটি শর্তের ভিত্তিতেই কোনো সহীহ হাদিসের উপর আমল বৈধ। অন্যথায় নয়। সহীহ হাদিসের উপর আমলের নাম দিয়ে অনেকেই শায বিচ্ছিন্ন মতের অনুসরণ করেছেন, উম্মতের সর্বসম্মত আমলের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন। নিকট অতীতে এর বহু প্রমাণ আছে।
পুনশ্চ: এখানে সহীহ হাদিস দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, বাস্তবিকঅর্থে সহীহ’র শর্তে উন্নীত হওয়া হাদিস। অনেক সময় সহীহ হাদীসের নাম দিয়ে মারাত্মক দুর্বল এবং মুনকার বর্ণনার উপর অনেকে আমল করে ফেলে। যেমন পুরুষের জন্য বুকে হাত বাঁধার হাদীস। হাদিসটি মূলত মুনকার এবং আমলযোগ্য নয়। পাশাপাশি চার মাযহাবের কোনো মাযহাবেই বুকে হাত বাঁধার আমল নেই।চৌদ্দশো বছরের ইতিহাসে কেউ (সম্মিলিত ভাবে) বুকে হাত বাঁধে নাই। ইমাম নববী রহ. এর আগে এই হাদিস কেউ গ্রহণ পর্যন্ত করেনি।
আল্লাহ্ তাআলা আমাদেরকে উম্মাহর স্বীকৃত আমলের বিপরীতে শুযুয বা বিচ্ছিন্নতা থেকে বেঁচে থেকে জীবনযাপনের তাওফীক দিন। আমীন।
© আব্দুল আজিজ মাহবুব