সে তো করে না তাহলে আমি কেনো করবো? সেও তো করে তাহলে আমি করলে সমস্যা কি?

= সে তো করে না তাহলে আমি কেনো করবো?
= সেও তো করে তাহলে আমি করলে সমস্যা কি?
.
অধিকার সম্পর্কে প্রায় মানুষের মনেই এই সমস্যা দেখা যায় । প্রায় মুসলিমই অধিকার সম্পর্কে সচেতন না। তাই অনেকেই না বুঝেই অনেক কথা বলে ফেলি যা আসলে নিজের জন্যে অনেক ক্ষতিকর।
.
আমরা জানি আল্লাহ মানুষের জন্যে দুই ধরণের অধিকার নির্ধারণ করেছেন।
এক. হাক্কুল্লাহ বা আল্লাহর অধিকার।
দুই. হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার।
আমরা কথা বলবো হাক্কুল ইবাদ নিয়ে। বান্দার অধিকার এর মাঝে আমাদের মাথায় রাখতে হবে, এই অধিকার শুধু আমি অন্য থেকে পাবো এমন নয় বরং আমার থেকেও মানুষ পাবে বা অন্য বান্দারা পাবে। এখন আমরা উদাহরণে যাবো।
১. পিতামাতার অধিকারঃ পিতামাতার সাথে আল্লাহ সদ্যব্যবহারের আদেশ করেছেন। এবং তাদের আনুগত্য করতেও আদেশ করেছেন। তাই যদি কেউ পিতামাতার অধিকার আদায় না করে তাহলে সে আল্লাহর আদেশ না মানার গোনাহে গুনাহগার হবে এবং যদি আদেশ পালন করে তাহলে আল্লাহ আদেশ পালন করায় সওয়াবের অধিকারী হবে।
২. সন্তানের অধিকারঃ পিতামাতার যেমন অধিকার আছে তেমনি সন্তানেরও অধিকার আছে পিতামাতার কাছে। যেমনঃ তাদের সুন্দর নাম রাখা, তাদের ঈমান-আখলাক শিক্ষা দেয়া, তাদের ভরণপূষণ করা এবং বালেগ হলে তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করা। এখন পিতা মাতা যদি এই অধিকারগুলো পূরণ না করে তাহলে পিতামাতা আল্লাহর আদেশ না পালনের জন্যে গোনাহগার হবে। আর যদি পূরণ করে তাহলে সওয়াবের ভাগীদার হবেন।
এখন মনে করুন, একজন পিতা তার সন্তানের ভরণপূষন করেন নি তাহলে কি সন্তানের তার পিতামাতার সাথে খারাপ আচরণের অধিকার আছে? বা খারাপ আচরণে কি গোনাহ হবে? হ্যাঁ অবশ্যই গোনাহ হবে। এখানে পিতার গোনাহ হবে সন্তানের ভরণ পূষন না করার কারণে আর সন্তানের গোনাহ হবে পিতার অবাধ্য হওয়ার কারণে। এখানে বিষয়টা এমন নয় যে পিতা তার অধিকার পূরণ না করায় সন্তানের থেকে তার অধিকার পাবার হক হারিয়ে ফেলেছে। আমাদের এখানে যেটা বুঝতে হবে তা হচ্ছে আমরা না পিতামাতার জন্যে কিছু করছি আর না সন্তানের জন্যে কিছু করছি বরং আমরা যা করছি তার সবটাই হচ্ছে আল্লাহর আদেশ এবং তা আল্লাহর জন্যে আর এর জন্যে আমরা প্রতিদান চাইবো আল্লাহর কাছে। হ্যাঁ দুনিয়াবি প্রতিফলন তো আছেই, সেটা হচ্ছে বোনাস। কিন্তু এই যে অধিকার আদায় না আদায় এর মূল হচ্ছে জান্নাত আর জাহান্নাম। আল্লাহর আদেশ মানা আর না মানা। এখানে আমরা না পিতার আদেশ মানতেছি আর না সন্তাদের জন্যে কিছু করতেছি। সবটাই করছি আল্লাহর ইবাদত হিসেবে।
এমন ভাবে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর অধিকার, স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অধিকার। আমার প্রতি প্রতিবেশীর অধিকার,আত্নীয়ের অধিকার, প্রতিবেশীর বা আত্নীয়ের কাছে আমার অধিকার। এই সবই একই নিময়ে হবে। অর্থাৎ আমরা যা করছি তার সব কিছু হচ্ছে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ। কেউ আল্লাহর আদেশ অমান্য করায় তার উপর থেকে আমার অধিকার রহিত হয়ে যায়নি। সে তার অধিকার পূরণ করলে তাতে তার লাভ, আর আমি আমারটা পূরণ করলে আমার লাভ। পূরণ না করলে আমার ক্ষতি। ইনশা আল্লাহ আমরা অধিকার নিয়ে ধারাবাহিক লেখা শেয়ার করবো…

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *