অলিগলি কোন মানুষই এই সিম্বলের বাইরে না।

অলিগলি
কোন মানুষই এই সিম্বলের বাইরে না। সিম্বল একটা ব্যাপক টার্ম। ‘যা কিছু’ মানুষের যৌন আগ্রহের সুইচ হিসেবে কাজ করে সবই সিম্বল। সেটা অতিস্বাভাবিক প্রেমের প্রতিফলন হতে পারে, আবার অত্যন্ত ভয়াবহ যৌনবিকৃতিও হতে পারে। আবার কেবল ‘সুস্থ যৌন অনুভূতির সূচনাকারী’ এবং ‘মিলনের সহায়ক’ হতে পারে। এ থেকে শুরু করে ‘সুস্থ যৌনমিলনের বিকল্পও’ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে যদি কী কী জিনিস প্রতীক হতে পারে তা আগে দেখে নিই।

পূর্বের পর্বের লিংকঃ https://www.youtube.com/channel/UCYd5_xGSA-9WEwh7vUbJQdA/community?lb=UgyaBqhUfo5sZZbJ-il4AaABCQ

সুবিধার জন্য ৩ টি প্রধান শ্রেণীতে আমরা সিম্বলগুলোকে ভাগ করে নেবঃ[7]

১. জীবন্ত/ শারীরিকঃ
ক. স্বাভাবিকঃ হাত, পা, স্তন, নিতম্ব, কেশ, গায়ের গন্ধ, লালা, ঘাম, যৌনকেশ।
খ. অস্বাভাবিকঃ খোঁড়া, কুঁজো, প্রস্রাব, পায়খানা, বসন্তের দাগ, শিশু, বয়স্ক, সমলিঙ্গ, মৃতদেহ, পশু।
২. জড় পদার্থঃ
ক. মানুষের সাথে সম্পর্কিতঃ হাতমোজা, জুতো, রুমাল, অন্তর্বাস, চশমা।
খ. মানুষের সাথে সম্পর্কহীনঃ মূর্তি
৩. কার্য ও প্রবণতাঃ
ক. সক্রিয়ঃ অত্যাচার করা, নিষ্ঠুরতা, যৌনাঙ্গ প্রদর্শন, চুরি করা, অঙ্গচ্ছেদ, হত্যা।
খ. নিষ্ক্রিয়ঃ নির্যাতিত হওয়া, সুগন্ধ ও কণ্ঠ শোনা।
গ. দৃশ্যের প্রতি আকর্ষণঃ পোষাক পরিবর্তন, মলমূত্রত্যাগকর্ম, জানোয়ারের মৈথুন।

যেটা বলছিলাম, স্ত্রীর পা দেখে কামার্ত হওয়া যতটা স্বাভাবিক ও সুন্দর, যেকোন নারীর পা দেখে কামার্ত হওয়া তার থেকে একটু ‘কেমন যেন’ হলেও স্বাভাবিক। কিন্তু কারো সিম্বল যখন শিশু বা পশু, তা তখন বিকৃতির মধ্যে চলে গেল। এগুলো সবই সিম্বল। একজনের জন্য যা সিম্বল, আরেকজনের জন্য তা কিছুই না, বা হাস্যকর। স্তন কমবেশি সব স্বাভাবিক পুরুষের জন্যই সিম্বল, কিন্তু জুতো সবার জন্য সিম্বল না। চুল কারো উত্তেজনার সূচনা, কারো কাছে কিছুই না। নিজ স্ত্রীর পোশাক বা অন্তর্বাস দেখে কাম জাগতে পারে, আবার সব নারীর পোশাক দেখেও উত্তেজনা আসতে পারে; কিংবা পোশাক না, জাস্ট থানকাপড় বা ফেব্রিক দেখেও (সিল্ক, সাটিন, ল্যাটেক্স, ফার) কামভাব আসতে পারে কারও। এগুলোর কিছু স্বাভাবিক মিলনে সহায়ক, যেমন স্ত্রীর পোশাক দেখে মিলনের আগ্রহ আসা। স্ত্রীর পোশাকই যদি স্ত্রীকে বাইপাস করে ফেলে মুখ্য আকর্ষণ হয়ে যায় তা হয়ে পড়ে অস্বাভাবিক। এভাবে একদম নির্দোষ সিম্বলও হয়ে যেতে পারে বিকৃতির কারণ।

অনেকে ভাবছেন কীসব বাকওয়াস শুরু করেছি। না বন্ধু এগুলো আসলেই বাস্তবে রয়েছে।
– ডার্কওয়েবে গেলে দেখবেন হাজার হাজার টেরাবাইট শিশুপর্নো। এগুলো কারা দেখে?
– পর্নোসাইটে শতশত ল্যাটেক্স, স্প্যান্ডেক্স, লেগিংস, জিন্স, সিল্ক, সাটিন, ফার ফেটিশ পর্নো আমার কথার বাস্তবতাকে প্রমাণ করে।
– পশুর সাথে সেক্স করাকে বলা হয় Bestiality. হাজারো ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে ঘোড়া-কুকুর-শূকর- ছাগলের। এগুলো কেউ না কেউ তো দেখে।
– যৌনসঙ্গীকে প্রহার-ব্যথা দেয়া-ছ্যাঁকা দেয়া-কেটে দেয়া এবং এর ফলে কামোত্তেজনা অনুভব করাকে বলে Sadism.
– আর নিপীড়িত হয়ে যে কাম অনুভব করে সেটাকে বলে Masochism.
– নিজ লিঙ্গ আরেকজনকে দেখিয়ে উত্তেজনা আসাকে বলে Exhibitionism.
– মৃতদেহের সাথে মিলনেচ্ছাকে বলে Necrophilia, যেখানে মৃতদেহের শীতলতা কাম জাগিয়ে তোলে। ডার্কওয়েবে ছড়িয়ে আছে এসব পর্নো ভিডিও, কোথায় চলে গেছে পশ্চিমা সভ্যতা আমাদের ধারণাই নেই।
– পায়ুমিলনের ফলে এক পর্যায়ে বেরিয়ে আসে রেক্টাম (Prolapse), এটিও কিছু মানুষ আছে যারা উত্তেজিত হয় দেখে, একে বলে Rosebudding.
– সেক্সের শেষে পায়খানা বা পেশাব করে দেয় সঙ্গী, সেগুলো গায়ে মেখে বা খেয়ে উত্তেজনার নির্বাপিত হয় কারো। একে বলে Coprophilia। কী, খারাপ লাগছে শুনতে? পর্নোসাইট এসবে ভর্তি। এগুলোই মানবমনের অলিগলি, যার শেষে নর্দমা আর ডাস্টবিনের পচা গন্ধ।
– হাজারো ভিডিও রয়েছে Footjob এর যারা পা দেখে কামার্ত হয় তাদের জন্য।
– কিংবা Hairjob, চুলের প্রতি যাদের আকর্ষণ তাদের জন্য।
– লুকিয়ে লুকিয়ে কাউকে দেখে উত্তেজিত হওয়াকে বলে Voyurism
– আর কাউকে পেশাব করতে দেখে উত্তেজিত হওয়াকে Uranism বলে।
– ফেসবুকেই আছে বহু আইডি যারা বিপরীত লিঙ্গের পোশাক দিয়ে উত্তেজনা প্রশমন করে ভিডিও দেয়। কিংবা পিছন থেকে মহিলাদের হাঁটা ভিডিও করে।
– কেউ আছে বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরে কামের শীর্ষে চলে যায় (Transvestism)। এগুলো অধিকাংশই আমরা পড়েছি ফরেনসিক মেডিসিনে।
– কিছুদিন আগে আমরা ফেসবুকে দেখলাম এক লোক বাসে নারীদের পোশাক কেটে আনন্দ পায়।
– বহু আইডি আছে যারা মেয়েদের চকচকে বোরকার ছবি কালেক্ট করে, বোরকার বা পোশাকের শাইন/ গ্লস দেখে উত্তেজিত হয়। যাবেন কোথায়?

বিচ্যুতি বাদ দিলেও স্বাভাবিক যৌনচর্চার মাঝেই রয়েছে অগণিত প্রকারভেদ। ফ্রয়েডীয় ঘরানার বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী হ্যাভলক এলিস। তাঁর ৭ খণ্ডের বই Studies in the Psychology of Sex. এই বিশাল কিতাবের সংক্ষেপায়ন The Psychology of Sex-এ তিনি বলেন, প্রতীক বনে যাওয়া এমন বস্তুর সংখ্যার কোন ব্যবহারিক সীমা নেই, যাতে কেবল শরীরে অঙ্গই নয়, বরং নির্জীব বস্তুও এসে যায়। [1] তবে এসবের স্বাভাবিকতার সীমারেখা কি? তাঁর মতে ২ টি শর্ত পেলে আমরা সিম্বলিজমকে বিচ্যুতি বলব—

১. যখন তা এতটা বিস্তৃত হয়ে যায় যে, যৌন সম্ভোগের কেন্দ্রীয় কার্যের (Penetration) ইচ্ছার (মিলনেচ্ছা) স্থানটা নিয়ে নেয় [2]।
2. স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকার জন্য সমস্ত প্রকারান্তরগুলোর জন্য এটা আবশ্যক যে, সেগুলোর মধ্যে প্রজননতত্ত্ব সম্মিলিত থাকে, যার জন্যই সেক্সের অস্তিত্ব। এমন কার্যকলাপ উচিতরূপে মস্তিষ্কবিকৃতির সূচক বলে মনে করা যেতে পারে যাতে প্রজনন সম্ভব নয় [3]।

তাঁর মতে, যৌন আবেগের বিচ্যুতিসমূহের মধ্যে অসংখ্য প্রকারভেদ আছে, আর সেসবের সীমাও ব্যাপক। এর এক প্রান্তে আমরা পাই নির্দোষ ও সুখকর আকর্ষণ; যেমন, প্রেমিক প্রেমিকার হাতমোজা ও চপ্পল থেকে। এ এমন এক আকর্ষণ যা মার্জিত ও সুস্থতম মস্তিষ্কের ব্যক্তিটিও অনুভব করে। আরেক প্রান্তে আমরা পাই খুনী হামলা, যার তুলনা হতে পারে ‘জ্যাক দ্য রিপার’।[4]

SAGE Journals প্রকাশিত দ্বিমাসিক পিয়ার রিভিউড জার্নাল Psychological Reports এ একটা রিসার্চ রিপোর্ট প্রকাশিত হয় [5]। Hofstra University-র William J. Ruth এবং New Rochelle, New York-এর Harriet S. Mosatche এবং Passaic County Community College-এর Arthur Kramer এর প্রাপ্ত ১৯৮৫ টি ডাটা ফলো-আপ করে বেরিয়ে আসে আমি এতোক্ষণ যা বললাম। তারা ক্রেতার ক্রয় করার ইচ্ছার উপর সেক্স সিম্বলের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন। মদের কিছু বিজ্ঞাপনে তারা যৌন সিম্বল রাখেন যা যৌনমিলনকে রিপ্রেজেন্ট করে, আর কিছু বিজ্ঞাপন রাখেন সিম্বলিজম ছাড়া। ক্রেতারা সিম্বলিক পণ্য কিনতে সর্বদাই বেশি আগ্রহী হয়েছে। এই রিসার্চটি ফ্রয়েডের মনোবিশ্লেষণ তত্ত্বকে সাপোর্ট করেছে।

ফ্রয়েডের মনোবিশ্লেষণ তত্ত্ব (psychoanalytic postulate) এটাই আমাদের বলে যে, যৌন সিম্বলিজম অজ্ঞাতসারে দর্শককে তার উদেশ্যপ্রণোদিত আচরণের দিকে তাড়িত করে। (supported the psychoanalytic postulate that sexual symbolism unconsciously motivates an observer toward goal-directed behavior)
প্যারাফিলিয়া

সিম্বলিজম থেকে যৌন বিচ্যুতি, যৌনবিচ্যুতি থেকে প্যারাফিলিয়া। Diagnostic and Statistical Manual, 4th edition (DSM-IV) অনুসারে [6], কমপক্ষে ৬ মাস বার বার প্রবল যৌন উত্তেজক ফ্যান্টাসি বা কোন প্যারাফিলিক/ যৌনবিচ্যুত আচরণের তাড়না অনুভব করা যা সামাজিক/পেশাগত/ব্যক্তির অন্যান্য জরুরি কাজে এতটা বাধা ও কষ্টের কারণ হয়, যা চিকিৎসার দাবি রাখে (clinically significant); তাহলে একে প্যারাফিলিয়া বলে। ২০০০ সালে এই সংজ্ঞায় যোগ হয়, রোগী নিজে কষ্ট না পেতে পারে, রোগীর দ্বারা ‘ইচ্ছুক নয় এমন অন্য কেউ’ কষ্ট পেলে, তাও প্যারাফিলিয়া বলে গণ্য হবে। International Classification of Diseases, 10th revision –এ আরেকটু বেশি বলা আছে, যৌন উত্তেজনা ও তৃপ্তির জন্য যেসব প্যারাফিলিক আচরণ করা হয়, সবই এর অন্তর্গত [7]।

আসুন একটু সাহস করে দেখে ফেলি কী কী আচরণ এই প্যারাফিলিয়ার আওতায় পড়েঃ [8]

আবার আপনাদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই ফার্মগেট ওভারব্রীজের উপরে। হাজার হাজার মানুষ। কর্মব্যস্ততায় যাদের এসব নিয়ে ভাবার ফুরসতই নেই বলে মনে হয়। অথচ প্রত্যেকের আছে একটা মন যার কোন সংজ্ঞা নেই, যা দুইজনে কখনও এক না। সেই মনের আছে একটা গোপন গহীন কুঠুরি, কন্ট্রোল-রুম, সিম্বোলিজম। হাজার হাজার মানুষের হাজার হাজার সিম্বোলিজম। কেউ কারোটা জানে না, অনেক সময় ব্যক্তি নিজেও ততটা ওয়াকিবহাল থাকেন না। হাজার হাজার মেন্টাল সেট-আপ। যেগুলো জানা সম্ভব না, সাজানো সম্ভব না, সংজ্ঞা দেয়া সম্ভব না, নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। কে সিম্বোলিজমের কোন বিচ্যুতিতে কোন পর্যায়ে আছে জানা সম্ভব না।

আপনার মনে হতে পারে আমি বাড়িয়ে বলছি। এই হাজার হাজার মানুষ কি আর খারাপ নাকি? এদের সবাই কি ধর্ষক নাকি? এভাবে ভাবলেই তো দুনিয়াতে চলাই যাবে না। এই প্রশ্নের জবাব একটু পরে দিচ্ছি। মনে রাখবেন, নিতান্ত সহজ সরল আঁতেল ছেলেটারও আছে একটা গহীন কুঠুরি। আপনার সবচেয়ে কেয়ারিং ছেলে বন্ধুটারও (বয়ফ্রেন্ড না) আছে একটা সিম্বল। আপনার পাশের বন্ধু বা সহকর্মীটি আপনার কোন জিনিস নিয়ে ফ্যান্টাসিতে আছে আপনি জানেন না। আপনার নিকটাত্মীয়ের একটা মন আছে, যার নেই কোন সংজ্ঞা, নেই কোন পূর্বাভাস বা প্রেডিকশান। প্রেষণা সবার আছে, কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণ করাকেই আমরা মনুষ্যত্ব বলি, তা পূরণ করাকে নয়। কিন্তু একটা প্রেষণা নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই যে তা সবসময়ই নিয়ন্ত্রণেই থাকবে ব্যাপারটা কি তা-ই? না, পরিবেশভেদে ও পরিস্থিতিভেদে আপনার আমার প্রেষণাও লাগাম ছিঁড়ে বেরিয়ে যেতে পারে। কী সেই পরিবেশ আর কী সেই পরিস্থিতি সে বিষয়ে একটু পরে আসছি।

২. নির্জন
এ এক অন্য দুনিয়া। এখানে আইন চলে না। আইন আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু চিন্তাপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে না। অথচ এই চিন্তাপ্রবাহ-ই নিয়ন্ত্রণ করে আচরণকে। আইনের কারণে সে হয়ত সবার সামনে নিজের প্রেষণা পূরণ করছে না। কিন্তু তাই বলে আইন তো তার মেন্টাল সেট-আপ বদলে দিতে পারেনি। সুতরাং—

যেখানে আইন নেই,
যেখানে আইনের পৌঁছানোর সুযোগ নেই বলে তার মনে হবে,
কিংবা যেখানে চক্ষুই নেই যে চক্ষুলজ্জা থাকবে,
বা যখন সে মনে করে যে কেউ দেখার নেই, লুকিয়ে করতে পারবে, ধরা পড়বে না
তখন সে বেরিয়ে আসে, তীব্র প্রেষণা তাকে তাড়িত করে। প্রেষণার সংজ্ঞা থেকে আমরা জানি, যতক্ষণ পর্যন্ত উদ্দেশ্য পূরণ না হয় ততক্ষণ প্রেষণা চলতে থাকে। সে যেভাবেই হোক নিজের মেন্টাল সেট-আপের অনিবার্য তাড়না কে প্রশমিত করবে।
এক্ষেত্রে হয়—
– আগে থেকেই নির্জন থাকবে, উদ্দীপক নিজেই এক্সিডেন্টালি নির্জনে এসে পড়বে। (যেমন চলন্ত বাসে ধর্ষণ, ডেটিং রেপ)
– বা সে অপহরণের মাধ্যমে উদ্দীপককে নির্জন জায়গায় নিয়ে যাবে। (পোড়োবাড়ি, ক্ষেত)
University of Missouri –র মনোবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক Zoë D. Peterson সাহেব ১২০ জন ১৮-৩০ বছর বয়েসী পুরুষের উপর জরিপ করেন। তিনি পান, এরা যারা মোটামুটি নিশ্চিত যে রেপ করার পর শাস্তি এড়িয়ে পার পেয়ে যাবে, তাদের যৌন ভায়োলেন্সের সম্ভাবনা বেশি। (those who felt sure they could get away with rape without punishment were more likely to report they used coercive behavior.)[1] অর্থাৎ হয় এরা নির্জনে পেয়ে গেছে, অথবা কিডন্যাপ করে নির্জনে নিয়ে গেছে। যেখানে আইন পৌঁছবে না বলে তারা মনে করেছে।
১৯৮৭ সালে ৩১৮৭ জন কলেজপড়ুয়া মেয়েদের এক জরিপে দেখা যায় তাদের ১৫% ধর্ষিতা হয়েছে। এখন এই হার আরও বেশি। ধর্ষিতাদের ৫৬% জানিয়েছে যে, ডেটিং-এ গিয়ে তারা রেপড হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন University of Arizona Medical School এর মনস্তত্ত্ববিদ Dr. Mary Koss. দেখা যাচ্ছে এরা স্বেচ্ছায় নিজেদেরকে নির্জনে প্রেজেন্ট করেছে। [2]

৩. উদ্দীপক
উদ্দীপক আর উত্তেজক এক না।
শিশুকামীর জন্য ছোট শিশু উত্তেজক। সে বেছে বেছে শিশুই খোঁজে, শিশুই তার প্রথম চয়েস।
আর একজন নর্মাল ধর্ষকের জন্য শিশু উদ্দীপক, একটা কিছু হলেই হয়। সে শিশুর জন্য তক্কে তক্কে থাকে না। মেন্টাল সেটআপ অসহনীয় হয়ে ছিল, নির্জনে পেয়ে গেছে, এখন দরকার, কিছু একটা হলেই হয়।
আমি আগেই বলেছি ধর্ষণ সবসময় পরিকল্পিত না, কখনও কখনও ধর্ষকের জন্যও সারপ্রাইজ, আকস্মিক (impulsive)। সে তখন আর নিজের মধ্যে নেই। সে তখন প্রবেশ করেছে অন্ধকুঠুরিতে। এখন তার প্রয়োজন, তার প্রেষণা।
আগে থেকেই তার মাঝে মেন্টাল সেট-আপ ছিল। সেটা হতে পারে বিকৃত (শিশুকাম)। আবার হতে পারে স্বাভাবিক কিন্তু প্রচণ্ড অনিয়ন্ত্রিত (নির্জনে একটা শিশুই পেয়ে যাওয়া)। সামনের আলোচনাগুলোতে আরও ক্লিয়ার হবে আশা করি।

তেমনি বোরকা পরা মেয়েও হতে পারে উদ্দীপক, যদিও সে উত্তেজক না। যদি নির্জনে পাওয়া যায়। মোদ্দাকথা নির্জনে পাওয়া যে কোন কিছুই মেন্টাল সেট-আপের তীব্রতার উপর নির্ভর করে উদ্দীপক হয়ে যেতে পারে যদিও তা উত্তেজক নয়। আবার এমন এমন জিনিস মেন্টাল সেট-আপ ভেদে উদ্দীপক হয়ে যেতে পারে যা আমাদের কাছে হাস্যকর বা চিন্তায়ও আসে না। যেমনটা আমরা সেক্স সিম্বোলিজমে দেখলাম। নর্মালি পশুকামী নয় এমন লোকের জন্যও হাঁস বা গরু হয়ে যেতে পারে উদ্দীপক, নির্জনে।

বাকি অংশ আগামী পর্বে ইনশা আল্লাহ


[7] https://www.nytimes.com/2017/10/30/health/men-rape-sexual-assault.html
[8] https://www.nytimes.com/1991/12/10/science/new-studies-map-the-mind-of-the-rapist.html
[9] Craissati J, Falla S, McClurg G, Beech A. Risk, reconviction rates and pro-offending attitudes for child molesters in a complete geographical area of London. J Sex Aggress. 2002;8:22–38.
[10] Dhawan S, Marshall W. Sexual abuse histories of sexual offenders. Sex Abuse. 1996;8:7–15.
[11] https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/16871447
[12] https://www.psychologytoday.com/us/articles/199211/round-rapists
[13] https://www.nytimes.com/1991/12/10/science/new-studies-map-the-mind-of-the-rapist.html
[14] Thornton D. Constructing and testing a framework for dynamic risk assessment. Sex Abuse. 2002;14:137–51
https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/11961888
[1] https://universe.byu.edu/2017/03/07/psychologists-explain-why-men-rape-women1/
[2] https://www.nytimes.com/1991/12/10/science/new-studies-map-the-mind-of-the-rapist.html
[1] যৌন-মনোবিজ্ঞান (The Psychology of Sex), হ্যাভলক এলিস, অনুবাদ- মুহম্মদ জালালউদ্দীন বিশ্বাস, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী ,২০০৬, পৃষ্ঠা ১৩৩
[2] পৃষ্ঠা ১২৩, প্রাগুক্ত।
[3]পৃষ্ঠা ১১৭, প্রাগুক্ত।
[4] পৃষ্ঠা ১২১, প্রাগুক্ত।
[5] Psychological Reports, Volume 64 Issue 3_suppl, June 1989
http://journals.sagepub.com/doi/10.2466/pr0.1989.64.3c.1131
[6] 4th ed. Washington DC: American Psychiatric Association; 1994. American Psychiatric Association. Diagnostic and Statistical Manual of Mental Disorders.
[7] Geneva: WHO; 1992. World Health Organization. The ICD-10 Classification of Mental and Behavioural Disorders: Clinical Descriptions and Diagnostic guidelines
[8]https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_paraphilias
https://www.issm.info/sexual-health-qa/what-are-paraphilias/

https://www.webmd.com/sexual-conditions/guide/paraphilias-overview#1
ড. শামসুল আরেফিন

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *