প্রথমে অনেকে তালিবানের শান্তি আলোচনাকে তালিবানের আপোষের নীতি মনে করেছিল।

প্রথমে অনেকে তালিবানের শান্তি আলোচনাকে তালিবানের আপোষের নীতি মনে করেছিল। তারা ভেবেছিল তালিবানও তথাকথিত গণতান্ত্রিক ইসলামিক দলের মত আচরণ করবে। ইসলামের কাটছাঁট করবে, তাকিয়া গ্রহন করবে। কিন্তু তালিবানের বক্তব্য শুরু থেকে স্পষ্ট ছিল। তালিবানের বিজয়ের প্রথম ধাপ ছিল আমেরিকার সাথে পিস ডিল করা। আমেরিকা আগামীতে পুরো সেনা উত্তোলন করবে। তালিবানের বিজয়ের দ্বিতীয় ধাপ চলছে এখন। আজ কাবুল এডমিনিস্ট্রেশন এবং তালিবান প্রতিনিধিদের মাঝে আলোচনা হয়েছে। মোল্লা আব্দুল গনী বারাদার হাফিজাহুল্লাহ আলোচনা শুরু করেন কুর’আনের একটি আয়াত পাঠ করে।

يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِى الْأَمْرِ مِنكُمْ ۖ فَإِن تَنٰزَعْتُمْ فِى شَىْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْءَاخِرِ ۚ ذٰلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلًا

“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য করো, নির্দেশ মান্য করো রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। তারপর যদি তোমরা কোনো বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়ো, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি প্রত্যর্পণ করো-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর ঈমান এনে থাকো। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম।” (সূরা নিসাঃ ৫৯)

আয়াতের মাধ্যমে মহতারাম মোল্লা বারাদার সুন্দর কিছু মেসেজ দিয়েছেন। প্রথমত বুঝিয়েছেন, যদি মুরতাদ বা কাফির না হয়ে মু’মিন হয়ে থাক তবে আল্লাহ ও তার রাসুলের হুকুম মেনে নাও। আর তাদেরটা মানো যারা আল্লাহর বিধানের মাধ্যমে ফায়সালা করে।

দ্বিতীয়ত, এই আয়াতের পরের আয়াতে তাগুতের কথা বর্ণীত হয়েছে। তিনি যেন বলছেন, তোমরা তাগুতের কাছে মুকাদ্দামা নিয়ে যেও না। তাগুতের শরণাপন্ন হয়ো না।

তৃতীয়ত- তিনি বুঝিয়েছেন, আমাদের এই বিবাদ নিরসনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে ফিরে যেতে হবে। যদি তোমরা আসলে আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখো তাহলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুম মেনে নাও।

এরপর তিনি স্পষ্ট ভাষায় বললেন, “আমরা আফগানিস্তানকে একটি স্বাধীন উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই, অবশ্যই তা হতে হবে ইসলামিক নিজামে।”

তাই যারা ভাবছেন, তালিবানরা ইসলামে ছাড় দিবে, যৌথ ক্ষমতা ভাগ করে নিবে, তারা মূলত নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেন। কেননা তারা মডারেট মুসলিম লিডারদের দেখানো লিবারেল ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছেন।

মানুষ এখন মুহাম্মাদ বিন সালমান খলিফা হবে, এরদুওয়ান সুলতান হবে, ইমরান খান নবাব হবে এমনও আশা রাখে, কিন্তু তালিবান ইসলাম কায়েম করবে এই আশা রাখে না। এর কারন আমার জানতে খুব ইচ্ছে করে। অথচ তালিবানরা বার বার পরীক্ষা দিয়েছে, উত্তীর্ণ হয়েছে। কোনো তাকিয়ার নীতি গ্রহন করেনি। অন্যদিকে বাকিরা কাফিরের সাজে সজ্জিত। তাদের বাহ্যিক অবস্থা কুৎসিত, কিন্তু আশাবাদীরা এদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা ভালো এমন আশা রাখে। যুক্তি দেয়, বড় বড় কলেবরের বই প্রকাশ করে। অন্যদিকে তালিবানের প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য উভয় অবস্থা সুন্দর তবুও তাদের দ্বারা এরা কোনো আশা রাখে না। তাদের খণ্ডনে কলম ধরে না। অচিরেই সব কিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে, আল্লাহর নুসরাত নেমে আসবে। ইনশা আল্লাহ

@কাইসার আহমেদ

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *