বিজ্ঞান ও ধর্মের সংঘাত
——————————————-
ইউরোপ ‘ধর্ম’ বলতে ভিন্ন একটা জিনিস বোঝে বা বুঝায়। তাদের কাছে ‘ধর্ম’ মানে হল দুনিয়ার সাথে নিঃসম্পর্ক আধ্যাত্মিকতা। যেজন্য খৃষ্টবাদ হল তাদের চোখে ‘পিওর ধর্ম’। ইসলাম ও ইহুদিবাদ ‘পিওর ধর্ম’ না। এতে পারিবারিক, সামাজিক, বিচারিক, রাষ্ট্রীয় কথাবার্তা আছে বলে। সেন্ট পলের খৃষ্টবাদ (ইউরোপীয় খৃষ্টবাদ) ইউরোপের চোখে ধর্মের যে ছবি এঁকে দিয়েছে তা হল—
দুনিয়া ও ধর্ম পৃথক জিনিস। একসাথে মেলানো যাবে না ‘Render unto GOD that is GOD’s. And render unto Caeser that is Caeser’s. কিংবা ‘My kingdom is not of this world’. ধর্ম দুনিয়া নিয়ে মাথা ঘামাবে না। সমাজ-রাষ্ট্র এগুলো ধর্মের টপিক না। বর্তমান সেক্যুলারিজমের জন্মের পিছনে খৃষ্টবাদের দায় অনেক।
দুনিয়ার কাজ আর ধর্মের কাজ আলাদা আলাদা। ধর্মের কাজ করতে হয় দুনিয়া থেকে বেরিয়ে। মঠবাসী সন্ন্যাসী হয়ে।
ধর্মে কোনো যুক্তি নেই, যুক্তির স্থান নেই। মানবিক বুদ্ধিতে ধর্ম ধরে না। নিরেট বিশ্বাসে ধর্মের অস্তিত্ব।
ধর্ম মানে অবৈজ্ঞানিক, অযৌক্তিক সাধনা। দুনিয়ার সম্পর্ক-সম্পদ-মোহ ত্যাগ, মঠবাসী জীবন, লাগাতার উপবাস, নিজেকে নানাভাবে অকারণ কষ্ট দেয়া, অবৈজ্ঞানিকভাবে মানবিক চাহিদাকে বঞ্চিত করা। এগুলোই ধর্ম।
এই চোখে ইসলামকে দেখলে তাই পছন্দ হয়না। বরং রুমীর ‘সুফিজম’ এই চোখে বেশ। ধর্ম যে যৌক্তিক হতে পারে, মানবীয় যুক্তিকে পরাস্ত করতে পারে, ধর্ম যে বিজ্ঞানসম্মত হতে পারে, চোখের দেখা-অন্তরের যুক্তিবোধ-পর্যবেক্ষণ দিয়ে যে ধর্মের সত্যতা অনুভূত হতে পারে— এটা ইউরোপীয় ধর্মের সংজ্ঞায় পড়ে না। ধর্ম ও বিজ্ঞান, ধর্ম ও যুক্তি, ধর্ম ও দুনিয়ার এই সেপারেশন খাঁটি ইউরোপীয় এনলাইটেনমেন্টীয় দৃষ্টিভঙ্গি।
এজন্যই ইসলামকে কখনও ইউরোপীয় দার্শনিকেরা বলেছে ‘বস্তুবাদী ইহুদিবাদের আধ্যাত্মিক সংস্করণ’, কখনও বলেছে ‘এটা কোনো ধর্ম না, এটা একটা socio-politico-economic system’। কেননা ইসলাম তাদের পরিচিত ‘পিওর ধর্ম’ খৃষ্টবাদের মত না। এখানে যুক্তির জায়গা আছে (কিয়াস)। এখানে পর্যবেক্ষণের স্থান আছে। এখানে মানবীয় আকল/ জ্ঞানবোধ খাটানোর তাগিদ আছে। ইন্দ্রিয়-বেক্ষণের উৎসাহ আছে, না খাটালে ভর্ৎসনা আছে। তোমরা কি আক্কেল কর না? তোমরা কি দেখো না? তোমরা কি চিন্তাভাবনা করো না? চিন্তাভাবনা করে, আকল খাটিয়ে, বীক্ষণ করে মানে দেখে (সেটা হতে পারে দূরবীক্ষণ, হতে পারে অণুবীক্ষণ) এই ধর্মে সৃষ্টিকর্তাকে চিনে নেয়া যায়। ফিতরাতের এই দীন মানবীয় আকলী ফিতরাতের সাথে যায়। জোর করে যুক্তিবুদ্ধি-হিসাব অস্বীকার করে ‘একে তিন, তিনে এক’ মেনে নিতে হয় না।
অদৃশ্যে বিশ্বাসের বিষয়গুলো (গায়েব) নিপাট চোখ বুঁজে বিশ্বাসের জিনিস। কেননা এখানে জ্ঞানতত্ত্ব একমাত্র ‘ওহী’। এখানে না যুক্তি খাটে, না পর্যবেক্ষণ। কিন্তু কুরআনে আল্লাহ বার বার নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছেন পর্যবেক্ষণের ভিতরে। বলছেন, বিশ্বজগতের সৃষ্টির ভিতর আমার চিহ্ন রয়েছে, দিবারাত্রির পরিবর্তনে আমার আয়াত রয়েছে। জীবজগতের ভিতর, তোমার নিজ শরীরের ভেতর, দিগন্তে উদয়াস্তের ভিতর, পানিবণ্টনের ভিতর আমার নিদর্শন, আমার চিহ্ন রয়েছে। তোমরা কি দেখো না?
তোমরা কি ভাবো না? এগুলো চিন্তাশীলদের জন্য, যারা ভাবে। আর নবীজীর সত্যতার বুঝার ব্যাপারেও আল্লাহ আকল-যুক্তিকে ভর্ৎসনা করেছেন— তাদের জন্য তাদেরই মধ্য থেকে তাদেরই ভাষায় একজন নিরক্ষর নবী পাঠিয়েছি। যে তাদেরই মাঝে জন্ম নিয়েছে, ৪০টা বছর তাদেরই সাথে ওঠাবসা করেছে, ৪০টা বছর তারা তার মুখ থেকে একটাও মিথ্যে শোনেনি, তারাই তার নাম দিয়েছে আল-আমীন, তাদেরই ভাষায় পাঠালাম যাতে তারা ভাষাশৈলীর মুজিযা বুঝে হয়রান হয়ে যায়, তাদের বড় বড় কবিরা স্বীকারও করেছে ‘এটা কোনো মানুষের কথা না’। আর তারাই এখন তাকে মিথ্যেবাদী বলছে, স্রেফ স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলে। আরবদের যুক্তিকে-বোধকে আল্লাহ ভর্ৎসনা করলেন। আল্লাহ নিজের আর রাসূলের সত্যতার ব্যাপারে মানুষের জ্ঞানতত্ত্বকে দায়িত্ব দিয়েছেন, ফিতরাতগতভাবেই মানুষ এই দুই বিষয়ে ঈমান আনতে পারে, যদি ফিতরাত দূষিত না হয় । আর এই বিশ্বাস এসে গেলে গায়েবের বিষয়ে বিশ্বাস আপনাতেই এসে যায়, কেননা বাকিগুলো unthinkable।
আর বিধিবিধানের ব্যাপারে আমরা সব মেনে নিই আল্লাহর হুকুম বলে। কিন্তু এখানে যুক্তি ও অভিজ্ঞতার স্থান আছে। আল্লাহ-রাসূলের টেক্সট ধরে নতুন বিধান নির্ধারণের ক্ষেত্রে যুক্তি ও অভিজ্ঞতার মূল্য রয়েছে। এবং আল্লাহর হিকমাহ (প্রজ্ঞা) বুঝার ক্ষেত্রে যুক্তি-পর্যবেক্ষণ প্রয়োজনীয়, যা ঈমানের উপর আরও ঈমান বৃদ্ধি করে। আল্লাহর একেকটা বিধানের অন্তর্নিহিত প্রজ্ঞা অনুধাবন আমাদেরকে আরও আল্লাহর সর্বব্যাপী জ্ঞান, ভবিষ্যতের প্রজ্ঞার ব্যাপারে দৃঢ়বিশ্বাস (ইয়াকীন) প্রদান করে। যেমনটি পিতা [1] ইবরাহীম আলাইহিস সালাম চেয়েছিলেন আল্লাহর কাছে। তিনি আল্লাহকে প্রশ্ন করলেন—
– রাব্বী, মৃত্যুর পর দেহ তো বিশ্লিষ্ট হয়ে যাবে। পোকা মাকড়ের পেটে। পানি-মাটি-বাতাসে মিশে কোথায় কোথায় চলে যাবে। সেগুলোকে আবার তুমি একত্রিত করে পুনর্জীবন দেবে। পুনর্জীবনে তো আমি বিশ্বাস করিই, কিন্তু কীভাবে তুমি সব একখানে আবার গুছিয়ে পুনর্জীবন দেবে সেই ‘প্রক্রিয়া’টা দেখতে সাধ হয়। দেখাবে?
– বন্ধু, তবে কি তুমি আমার খবরে বিশ্বাস কর না।
– না না মালিক, বিশ্বাস তো আলবৎ করি। কিন্তু কেমন করে তুমি করবেসেইটা দেখতে চাইছি। আর স্বচক্ষে দেখার সাথে তুমি অন্তরের যে তৃপ্তি রেখেছো, সেটা চাইছি, মালিক। বেয়াদবি নিও না।
এরপর আল্লাহর আদেশে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম যেটা করলেন, সেটাকে এক্সপেরিমেন্ট বললে কি ভুল হবে? ৪ প্রজাতির ৪ টি পাখি নিলেন। তাদেরকে পোষ মানালেন। এতটাই ন্যাওটা করে তুললেন যাতে ডাকলেই ছুটে আসে। এরপর তাদেরকে জবাই করলেন, টুকরো টুকরো করলেন, কিমা বানালেন। সেগুলো কে ভালোভাবে মিশালেন একসাথে। এরপর সেই মিশানো কিমা পাহাড়ে পাহাড়ে রেখে আসলেন। এবার আল্লাহর আদেশমতো পাখিগুলোকে নাম ধরে ডাক দিলেন। পাখিগুলো উড়ে উড়ে নয়, বরং মাটি দিয়ে ‘দৌড়ে’ এলো, যাতে তাদের পুনর্গঠন প্রক্রিয়াটা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিলেন। [2]
অর্থাৎ ঈমান আনার পর আল্লাহর প্রজ্ঞা বুঝে ঈমানকে আরও দৃঢ় করতে মানা নেই। তবে কেন ইউরোপীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে ধর্ম আর পর্যবেক্ষণকে আলাদা করা কথা বলি আমরা? একটা হুকুম তো আমরা মানি ‘আল্লাহর হুকুম’ বলেই, বিনা প্রশ্নে। কিন্তু যদি বিজ্ঞানের গবেষণা আমাদেরকে সেই হুকুমটার ব্যাপারে, আল্লাহর ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার ব্যাপারে, আল্লাহর সর্বজ্ঞানের ব্যাপারে আমাদেরকে অন্তরের তৃপ্তি জোগায় পিতা ইবরাহীম আ. এর মত, তাহলে তাকে কেন আমরা পৃথক রাখতে বলি? কেন পশ্চিমা সভ্যতার সুরে সুর মিলিয়ে আমরা ইসলামকেও খৃষ্টবাদের পর্যায়ে নামাই?
তবে সমস্যা আছে, সেটা হল বর্তমান বিজ্ঞান ‘পশ্চিমা বিজ্ঞান’। এর সমস্যা দুটো—
১. বর্তমান বিজ্ঞানের লক্ষ্য ‘চূড়ান্ত সত্যে পৌঁছনো’ নয়। এর লক্ষ্য সব ঘটনার একটা বস্তুবাদী দুনিয়াবি ব্যাখ্যা দেয়া, যা দ্বারা ঘটনাটাকে বুঝা যায়। ফলে এই বিজ্ঞানের দ্বারা ‘চূড়ান্ত সত্যে’ পৌঁছানো সম্ভব না। যদি কেউ এই বিজ্ঞানের দ্বারা চূড়ান্ত সত্যে যেতে চায়, তাকে আগেই বিশ্বাস করতে হবে ‘এই বস্তুগত জগতের বাইরে কোনো সত্য থাকতে পারে না’। এই অন্ধবিশ্বাস আগে করে নিয়ে এরপর বিজ্ঞানের ফলাফলকে সে চূড়ান্ত সত্য ভাবতে পারে। সুতরাং বর্তমান পশ্চিমা বিজ্ঞান চূড়ান্ত সত্যে পৌঁছোবার রাস্তা নয়।
২. বিজ্ঞান এই সমাজেরই অংশ, সমাজের বাইরে না। বিজ্ঞানের জ্ঞানও একটা সামাজিক জ্ঞান। সুতরাং এই বিজ্ঞান পশ্চিমা সমাজ প্রভাবিত। পশ্চিমা কৃত্রিম অ-ফিতরাতী সমাজ-ধারণার বাইরে এমন কোনো গবেষণা, এমন কোনো ফলাফল তারা এলাউ করবে না, যা তাদের সংস্কৃতিকে, তাদের চিন্তাজগতকে, তাদের অনুভূতিকে আঘাত করে। এমন কোনো রিসার্চ ফান্ডিং পাবে না, জার্নালে আসবে না, পিয়ার রিভিউয়ে টিকবে না, একাডেমিয়ায় ঝড় উঠবে, পশ্চাদপদ-সেকেলে বলে তাকে ডাউন করে দেয়া হবে। বহু উদাহরণ দেয়া যায়। (বইয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ) বিশেষ করে psychology academia-র scientific dishonesty তো পুরো একাডেমিয়াতে মশহুর। হস্তমৈথুন, সমকাম, নারীবাদের অধিকাংশ গবেষণা সাইকোলজিস্টরা করেছে।
সাইকোলজিস্টদের এসব ‘এসি রুমে বসা’ থিওরির সাথে ডাক্তারদের (যারা ফিল্ডে কাজ করে) বহু বিষয়ে ইখতেলাফ রয়েছে। অনেক আর্টিকেল পাবেন যেখানে পরস্পর পরস্পরকে ধুয়ে দিচ্ছে।
যার কারণে আল্লাহর হুকুমের প্রজ্ঞা, আল্লাহর নিদর্শন এই পশ্চিমা বিজ্ঞানের দ্বারা বুঝা সম্ভব না। মুসলিমদের এই মেথডোলজি ঠিক রেখে স্বতন্ত্র বিজ্ঞান-কাঠামো, পৃথক বিজ্ঞান-দর্শন তৈরি করতে হবে। মধ্যযুগের মুসলিম বিজ্ঞান এক্ষেত্রে সামনে রাখা যায়। তারা গবেষণা করেই আল্লাহর পরিচয় দৃঢ়ভাবে পেতেন। [এমন একটা আলোচনার একটা নোট কমেন্টে। বইতেও বিস্তারিত থাকবে ইনশাআল্লাহ।] তবে এখন পশ্চিমা বিজ্ঞান থেকে আমরা কিছুই নেবনা? হ্যাঁ, নেব। যা তাদের সমাজ-প্রভাবিত না, পুঁজিবাদকে পুষ্টিদাতা না, ফিতরাত-বিধ্বংসী না, সেগুলো। বুঝবেন কীভাবে কোনোগুলো। যে গবেষণাগুলো আমাদের ওহীর সাথে যায়, আমরা শুধু সেগুলোকেই সঠিক বলে নেব। কেননা, ওহী নির্ভুল। পশ্চিমা বিজ্ঞান বায়াসড, ওহী বায়াসড না। ওহী সকল মানুষের কল্যাণে, আর পশ্চিমা বিজ্ঞান পুঁজিপতিদের কল্যাণে। এটুকু মাথায় রেখে পশ্চিমাবিজ্ঞান চর্চা, আল্লাহর হুকুমের হিকমাহ বুঝার জন্য উল্লেখ করা-কে অপরাধ কেন বলছেন? হুকুম মানা হবে বিনা প্রশ্নে, দৃঢ়বিশ্বাসের জন্য ব্যবহার করা হবে পর্যবেক্ষণলব্ধ বিজ্ঞান।
এটা কি প্রতারণার মাধ্যমে দীনপ্রচার? পুঁজিবাদের প্রতারণা চোখে পড়ে না, বিজ্ঞানীদের প্রতারণা চোখে পড়ে না। মুসলিম ভাইয়ের কর্মপদ্ধতি প্রতারণার ফিল্টারে ধরা পড়ে? জি না, এটা প্রতারণা না। শুরু থেকে পড়ে আসলে এটা বুঝার কথা। যেহেতু পশ্চিমা বিজ্ঞানের মাপকাঠি আমাদের মাপকাঠি না। ওদের মাপকাঠিকে যদি ইউনিভার্সাল মেনে নিতাম, এরপর যদি কিছু মানতাম কিছু মানতাম না, তাহলে হত প্রতারণা। আমাদের মাপকাঠি আমাদের শরীয়া। শরীয়ার সাথে যেটুকু মিলবে, সেটুকুই ঠিক আছে বলে গণ্য হবে ও আমাদের মাঝে চর্চিত হবে ঈমান বৃদ্ধির জন্য। বাকিটুকু হবে না। এটা মুসলিম মননে বুঝতে এতো কষ্ট কেন?
ফিকহের উসুল হল, আমভাবে সব জায়েয, যদি না হারাম করা হয়। হালাল জিনিসই বেশি, হারাম জিনিস হাতেগোণা। আল্লাহ যেহেতু আমাদেরকে একটা জীবন-বিধান দিচ্ছেন, তাই এটাই যুক্তির দাবি যে, জীবন-যাপনের জন্য ক্ষতিকর জিনিসই তিনি নিষেধ করবেন। নির্দোষ বা কল্যাণকর কিছু তিনি অহেতুক আমাদের নিষেধ করবেন, এটা তাঁর শানের সাথে যায় না। অনেকে বলবেন, কই, মিথ্যা বলে তো কোনো ক্ষতি হয় না। মিথ্যা বললে যদি ক্ষতি না হয়, আর কীসে ক্ষতি? পারিবারিক, সামাজিক, আর্থিক ক্ষতি কি হয় না মিথ্যায়? মিথ্যাবাদী নিজেও তো বেইজ্জতির মধ্যে পড়ে যায় মিথ্যার কারণে, আত্মমর্যাদা নষ্ট হয়। হারাম সবকিছুই আবশ্যিকভাবে ক্ষতিকর, কোনো না কোনোভাবে, ব্যক্তিক বা সামষ্টিক। এই ক্ষতি বুঝতে পারা আল্লাহর প্রজ্ঞার ব্যাপারে আমাদের ঈমানকে বাড়ায়।
সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ে যারা মানদণ্ড হিসেবে পশ্চিমও নেয়, আবার ইসলামও নেয়। এই বেচারারা আছে মহাজ্বালায়। কী করবে, কী বলবে, এটা না ওটা। ইউরোপ ইউনিভার্সালি বলছে হস্তমৈথুন খারাপ না, নরমাল। আবার এদিকে দীন বলছে হারাম। বেচারারা আছে দোটানায়। অনেকটা মধ্যযুগের খৃষ্টবাদীদের মত। ব্রেন বলছে ‘একে তিন, তিনে এক’ হওয়া অসম্ভব। ওদিকে মানতে হচ্ছে চোখ বুঁজে। শরীর বলছে বিয়েশাদী করা উচিত, আবার উঁচা মাকাম পেতে চাইলে বিয়ে করা যাবে না। আগে মানদণ্ড ঠিক করেন ভাই। ওহী না পশ্চিম। দুটোই সত্য হতে পারে না। আর আমাদের দীন দুর্বোধ্যও না। আলহামদুলিল্লাহ।
রেফারেন্স:
[1] “তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহিমের মিল্লাতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক। তিনিই তোমাদের কে ‘মুসলিম’ নাম রেখেছেন পূর্বেও আর পরেও”। [ সূরা হাজ্জ, ২২:৭৮]
[2] সূরা বাকারার ২৬০ নং আয়াতের তাফসীর, তাফসীরে মাআরেফুল কুরআন, মুফতী মুহাম্মদ শফী রহ. (ইফা)