মাদখালিদের কমন বৈশিষ্ট্য, তারা যাকে তাদের জঘন্য উর্বর মস্তিষ্কের ইজতিহাদ দ্বারা বিদআতি বা খারেজি মনে করে, তাকে যে বিদআতি বা খারেজি মনে করে না, তাদের দৃষ্টিতে সে-ও বিদআতি বা খারেজি। এরপর এই দ্বিতীয় শ্রেণিকে যারা বিদআতি বা খারেজি মনে করে না, তাদের দৃষ্টিতে তারাও বিদআতি বা খারেজি। এরপর এই তৃতীয় শ্রেণিকে যারা বিদআতি বা খারেজি মনে করে না, তাদের দৃষ্টিতে তারাও বিদআতি বা খারেজি। এভাবে চেইন তাবদি ও ইখরাজ চলতে থাকে। তারা নিজেরা আহলুস সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত না হয়েও আহলুস সুন্নাহর ঠিকাদারি নিয়ে বসে থাকার ভান করে। এরপর নিজেদের ছাড়া সবাইকে আহলুস সুন্নাহ থেকে খারিজ করা ও বিদআতি বলে ফাতওয়া দেওয়াই তাদের একমাত্র ব্রত।
তাদের তাওহিদের চর্চা মানে হলো, আল্লাহ কোথায়। তার হাত-পা আছে কি না। তিনি সাকার নাকি নিরাকার। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ ও আল-ওয়ালা ওয়াল-বারা’র আদর্শবাহীদের ইভটিজিংয়েও তাদের জুড়ি পাওয়া ভার! গিবত-পরনিন্দায়ও তাদের দৃষ্টান্ত শুধুই তারা। তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য, আলে সৌদের পদলেহন করা আর ময়দানের মানুষগুলোর বিরুদ্ধে ফাতওয়া উদগীরণ করা।
তারা খারেজিফোবিয়ায় ভোগে। ঘুমালেও খারেজি, জাগলেও খারেজি, খেতে বসলেও খারেজি, ফেবুতে আসলেও খারেজি। তারা সারাজীবনে আল্লাহর নাম যতবার জপে, খারেজি নাম এরচে কয়েকশ গুণ বেশি জপে। তাদের অনেকের কাছে খারেজিদের অবস্থা মুরতাদদের চেয়েও জঘন্য। তারা খারেজি ফাতওয়া দিয়ে এদের রক্ত হালাল মনে করে। তাদের প্রতিটা সদস্যই একেকজন কিবোর্ড যোদ্ধা ও ব্ল্যাংকিট ওয়ারিয়র। যাদের সারাজীবনের সাধনা, তাগুতের পা চাটো, পেট্রোডলার খেয়ে জীবন ধারণ করো আর খারেজি ফাতওয়া দিয়ে আল্লাহর পথের প্রতিটা পথিকের রক্ত হালাল করো।
নিঃসন্দেহে এদের চাইতে গ্রামের সহজ সরল একজন চাষিও সুদৃঢ় ইমানের অধিকারী। অবস্থা দেখলে মনে হয়, এদের অধিকাংশের অন্তরে মোহর পড়ে গেছে আর চোখের ওপর আবরণ টেনে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তাদের খুব কম লোককেই ফেরানো সম্ভব। তাদের চাইতে আটরশি ও রাজারবাগীর মুরিদদের ফেরানোও তুলনামূলক সহজ। তাদের প্রতিটা সদস্য ব্যক্তিপূজার ধোঁয়া তুলে ইমামগণের অনুসরণ পরিত্যাগ করলেও নিজেদের মূর্খ শায়খদের অন্ধ পূজারী। তাদের অনেকের কাছে আল-কুরআনের চাইতেও ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ বা ভ্রান্তির বেড়াজালে ইক্বামতে দ্বীন অধিক মর্যাদা রাখে; যেন এগুলোই তাদের ধর্মগ্রন্থ।
© শাইখ আলি হাসান উসামা