বাংলাদেশের শীর্ষ কয়েকজন ধনী ও
তাদের বর্তমান মোট অর্থের সাথে এক বছরের যাকাতের পরিমানঃ [২.৫%]
••• মূসা বিন শমসেরঃ
মোট সম্পদ প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার !
বা ১২৭ হাজার কোটি টাকা প্রায় !
যাকাতের পরিমাণঃ ৩১৭০ কোটি টাকা প্রায় !
••• সালমান এফ রহমানঃ
মোট সম্পদ প্রায় ১.৩ বিলিয়ন ডলার !
বা ১১১ হাজার কোটি টাকা প্রায় !
যাকাতের পরিমাণঃ ২৭৫০ কোটি টাকা প্রায় !
••• আহমেদ আকবর সোবহানঃ
মোট সম্পদ প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার !
বা ৫০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা প্রায় !
যাকাতের পরিমাণঃ ১১৭০ কোটি টাকা প্রায় !
••• তারেক রহমানঃ
মোট সম্পদ প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার !
বা ১১৮ হাজার কোটি টাকা প্রায় !
যাকাতের পরিমাণঃ ২৯৬৭ কোটি টাকা প্রায় !
••• সজীব ওয়াজেদ জয়ঃ
মোট সম্পদ প্রায় ১.১ বিলিয়ন ডলার !
বা ৯৩২ হাজার কোটি টাকা প্রায় !
যাকাতের পরিমাণঃ ২৩৩১ কোটি টাকা প্রায় !
★ এম এ হাশেমঃ
পারটেক্স গ্রুপ ও UCBL ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
মোট সম্পদ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার।
(৩৯ হাজার কোটি টাকা প্রায়) !
যাকাতের পরিমাণ ২.৫% হারে
(৯৭৫ কোটি টাকা প্রায়)
★ আজম জে চৌধুরীঃ
ইস্ট-কোস্ট গ্রুপের মালিক, প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং মবিল যমুনা লুব্রিক্যান্টের সোল এজেন্ট ।
মোট সম্পদ প্রায় ৪১০ মিলিয়ন ডলার।
(৩১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা প্রায়)
যাকাতের পরিমাণ ২.৫% হারে
(৭৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রায়)
এবারে কিছু কথা…
____________________
[১]
একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বুঝবেন যে সবাইকে দরকার নেই, শেষের স্পেশ্যাল দুজনও বাদ, অন্তত প্রথম জনও যদি কয়েক বছর একাধারে নিয়ম মোতাবেক যাকাত আদায় করে, তাহলেই এদেশের দারিদ্রতা শূন্যের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকা অস্বাভাবিক কিছু হবে না !!!
এক বছরে প্রথম তিনজনের মোট যাকাত আসে প্রায় ৮০০০,০০,০০,০০০ টাকা ! সঠিক ব্যবস্থাপনায় দেওয়া গেলে যা এক বছরের মধ্যে এই বাংলার দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা দুই কোটি মানুষকে টেনে অনেকাংশে উপরে তুলতে সক্ষম !!!
অন্তত রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যদি এদের গলাটিপেও কিছু পরিমাণ যাকাত বের করা যেত, তাহলে কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের চেহারা সম্পূর্ণরূপে পাল্টে ফেলা অসম্ভব কিছু ছিল না !
তো উনাদের লেভেলের ধনী রয়েছে আরো ১০-১২ জন, আর উনাদের কাছাকাছি মানের ৫-১০ জন করে “রাঘব বোয়াল” প্রতিটি জেলা-উপজেলায়-ই আছে ! তাদের উপর নির্ধারিত ফরজ ‘যাকাত’ যদি তারা ইসলাম নির্ধারিত সুন্নাহ পন্থায় রাষ্ট্রীয় মাধ্যমে বন্টন করে দিতো, তবে একজন লোকেরও এদেশে গরিব থাকা অসম্ভব হয়ে যেত !
আর এটাই ইসলামী অর্থব্যবস্থার সৌন্দর্য ! বিশেষ দিক ! যা কিনা পুঁজিপতি-পুঁজিবাদী ও দুনিয়ালোভিদের চোখের বিষ ! বাস্তবতা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য যত কিছুই করা হোক… পুঁজিবাদি-ধণতন্ত্রিক, কমিউনিস্ট-সমাজতান্ত্রিক, কিংবা রাজতন্ত্রিক-গণতন্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় তা কখনোই সম্ভব নয় ! এটা সম্ভব একমাত্র শরীয়াহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ! আর এজন্যই আমি পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, লিবারেলিজম বা গণতন্ত্র চাই না… চাই এগুলো সমূলে ধ্বংস করে সরাসরি ইসলাম প্রতিষ্ঠিত করতে !!!
[২]
বাংলাদেশ কোন ইসলামী রাষ্ট্র না হলেও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ! এই দেশ ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক হলেও বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের মুসলিম পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ! সে হিসেবে এদেশে দারিদ্রতা বিমোচনে যাকাত-ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দৃশ্যমান প্রভাব থাকার কথা ! কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে না, কারণ— যাকাত জালিয়াতি !
যাকাত দিতে অস্বীকার করলে একজন সরাসরি মুরতাদ হয়ে যায়(আবু বকর রা. প্রথম যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তারা শুধু আবু বকর রা. এর নিকটে জাকাত দিতে অস্বীকার করেছিলো!), তারপরও অনেকেই এ-কাজ করে নিজেদের মুসলিম দাবীতো করেই ! যারা নিয়মিত যাকাত দেয় তারাও দিচ্ছে অধিকাংশই ভুল পদ্ধতিতে !এদেশের মানুষ সত্যিই খুব অদ্ভুত ! এদেশে অধিকাংশই এরা যাকাত দেয় ফিতরার নিয়মে ! ফিতরা যাকাতের নিয়মে ! যেন কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই ! আলিম নই বলে এবিষয়ে বেশি কিছু বলবো না অবশ্য…।
সদকাহ বা দান ও যাকাতের মধ্যে হাজার হাত পার্থক্য, অথচ এদেশে দুটোর মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ! যাকাত নিয়ে শো-অফ বা রাজনীতির কথা বাদ ! এদেশে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ যেভাবে যাকাত দেয় সেভাবে দেওয়া জায়েয হলেও কতটুকু সুন্নাহসম্মত-ইসলামী তা নিয়ে কোন সন্দেহ থাকার কথা না !
••• সুন্নাহ অনুযায়ী দিতে চাইলে যাকাত দেওয়ার সময় এমনভাবে দিতে হয় যাতে করে এই বছর কেউ যাকাত নিলে পরবর্তী বছর আর তার যাকাত নেওয়ার প্রয়োজন না হয় ! সম্ভবত কোনো এক আলেম বলেছিলেন, “কেউ যদি পরপর দু’বছর আপনার কাছে যাকাত নিতে আসে তাহলে বুঝবেন আগেরবার আপনার যাকাত দেওয়া ত্রুটিপূর্ণ ছিল !”
সাধারণ শাড়ি-লুঙ্গি-কাপড় দেওয়া কিংবা অনেককে কয়েক হাজার করে করে টাকা দেওয়ার যাকাত পদ্ধতি জায়েজ হলেও মোটেও সুন্নাহসম্মত নয় ! এর সাথে সদকার কোন পার্থক্য নেই ! বরঞ্চ যাকাত দেওয়ার উদ্দেশ্য হতে হবে একজনের দারিদ্র বিমোচন, বা তার উপার্জনের ক্ষেত্র তৈরী করে দেওয়া, যাতে করে পরবর্তীতে তাকে আর যাকাত নিতে না হয় ! অর্থাৎ সহজ কথায় একজনকে স্বাবলম্বী করে দেওয়া !
এতো এতো লোককে দিয়ে লোক দেখানো ইবাদত না করে আপনি শুধু একজনকেই যাকাত দিন, কিন্তু তারপরও যেন সেটা পরিপূর্ণরূপে যাকাত হয় ! শুধু রমজান মাস বা নির্দিষ্ট সময়ে যাকাত দিতে হবে এমন কোন কথা নেই শরীয়তে ! তাই যাকাত নিয়ে জালিয়াতি বন্ধ করুন… যাকাতকে ‘দান’ বা ‘দিতে হবে’ না ভেবে একেকজনের দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যম বানিয়ে দিন।
[৩]
দারিদ্রতা বিমোচনে বর্তমান বিশ্বের পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থা বা আমাদের দেশের মিশ্র-অর্থব্যবস্থার বিপরীতে ইসলামী অর্থব্যবস্থা বা সামগ্রিক শরীয়াহ আইনের উপযোগিতা অস্বীকারের কোনো সুযোগ নেই !!!
••• সালাফদের সময় আমাদের মত এভাবে বিচ্ছিন্নভাবে যাকাত না দিয়ে যাকাত দেওয়া হতো বায়তুল মালের মাধ্যমে, বা রাষ্ট্রীয়ভাবে সমস্ত যাকাত একত্রিত করে গরিবদের দারিদ্র বিমোচন করে দেওয়া হতো ! ফলে খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজের সময় এমন একটা সময়ে এসে ছিল যখন পুরো রাষ্ট্রেও যাকাত নেওয়ার মত কাউকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি ! ফলে বাধ্য হয়ে সমস্ত যাকাত একত্রিত করে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রসমূহে প্রেরণ করতে হয়েছিল !
আর দারিদ্রতা কোন একক সমস্যা নয়, এটি হাজারো সমস্যার জন্মদাতা। মাদকাসক্তি, খুন-খারাবি, চুরি-ডাকাতি-রাহাজানি, চাঁদাবাজি অসংখ্য সমস্যার পেছনে একটি বড় কারণ এই দারিদ্রতা। আর এই দারিদ্রতাকে গোড়া থেকে মূলোৎপাটন করে ফেলতে পারে বলেই ইসলামী রাষ্ট্রে স্বাভাবিকভাবেই অপরাধের পরিমাণ অনেকাংশে কমে আসে ! আর এজন্যই অপরাধী বিশ্ব ইসলামী শরীয়াহ কায়েমের চিন্তাকে এতটা ভয় পায় !!!
এই বাংলার বুকে যদি আজ শরীয়াহ প্রতিষ্ঠিত থাকতো, তবে উপরে উল্লেখিত ধনীদের মধ্যে প্রায় সবারই হয়তোবা এতোক্ষনে হাত কাটা পড়ে যেতো ! কেবলই ‘চুরি’ বা সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার কারণে ! আর যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানালে একজনের বিরুদ্ধে সরাসরি জিহাদ ঘোষণা করার পরোক্ষ আদেশ কথা তো হাদীসেই পাওয়া যায় ! [আবু বুকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ)-এর হুমকির ঘটনা !]
[৪]
অনেকেই আফসোস করেন, আমাদের দেশের অর্থব্যবস্থা [হারাম] সুদভিত্তিক না হয়ে যাকাত ভিত্তিক হলে কতই না ভালো হতো ! কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আংশিক ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে আপনি পরিপূর্ণ ইসলামের ফ্লেভার কখনোই পাবেন না ! তাই শুধু ইসলামী অর্থব্যবস্থার একটি উপকরণ, বা ইসলামী অর্থব্যবস্থা নয়, সম্পূর্ণ ইসলামের কথাই ভাবতে হবে !
পুঁজিবাদী চিন্তা কাঠামোর ভেতরে ঢুকে সেটার ইসলামীকরণ করার ব্যর্থচিন্তা বাদ দিয়ে পুরো কাঠামোটাকেই বদলে ফেলার চিন্তা করতে হবে ! তেমনি ব্যাংকব্যবস্থার ইসলামীকরণ বাদ দিয়ে পুরো ইসলামী অর্থব্যবস্থার কথা চিন্তা করতে হবে !
‘সুদ’ ইসলামী অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথে সবচাইতে বড় বাধা গুলোর একটি ! অথচ শয়তানি পশ্চিমা বিশ্ব আজ আমাদের দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলার প্রতিটা ব্যবসা ও উপার্জন পদ্ধতির মধ্যে কোন না কোন হারে সুদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে ! পশ্চিমাদের অর্থায়নে এনজিও ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম গুলোতে পৌঁছে গেছে সুদি অর্থব্যবস্থার কালো থাবা !
এনজিও বা ব্যাংকের কথা বাদ, আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহার্য আবশ্যক প্রযুক্তি ফোনের মধ্যেও যে নিজেদের অজান্তে সুদী কারবার শুরু হয়ে গেছে সেটা অনেকেই জানিনা ! আমরা যে অপারেটরগুলো থেকে ২.৪৪ টাকা সুদ দিয়ে ইমারজেন্সি ব্যালেন্স নেই, সেটাও যে হারাম হতে পারে, এটা অনেকের ধারণাতেও নেই ! তিরমিজির হাদিস, সুদের সংজ্ঞা জিজ্ঞাসা করা হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
••• “অন্যকে দেওয়া ঋণ যে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে আসে, সেটাই সুদ।” [হাদিসের মান সহীহ]
সুদ হারাম হওয়া, কিংবা ‘সুদকে হারাম-নাজায়েয মনে না করা’ কুফরী হওয়ার ব্যাপারে কিছু বলার প্রয়োজন নেই ! তাই ব্যক্তি পর্যায়ে সতর্ক হোন, আপনজনদের সতর্ক করুন।
— অন্তত স্পষ্ট করে জানুনঃ
• সুদ দেওয়া-নেওয়ার সাথে জড়িত থাকা হারাম !
• সুদ থেকে আসা অর্থ সম্পূর্ণ হারাম !
• উপার্জনে হারাম কিছু থাকলে যতো আমল-ইবাদতই করেন না কেন, কিছুই কবুল হবে না ! কেননা যেকোন ইবাদত কবুল হওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত রিজিক সম্পূর্ণরূপে হালাল হওয়া !
••• আর যে নামেই হোক, যেভাবেই হোক, সুদকে সুদ বলে বিশ্বাস না করা… বা সুদকে হারাম-নাজায়েয মনে না করা সরাসরি কুফরী…!!!
তাই ব্যবসার জন্য ইন্টারেস্ট-লোন, কিংবা ফোনের জন্য ইমারজেন্সি ব্যালেন্সের নামে নিতে থাকা হারাম সুদ থেকে নিজে বাঁচুন, অন্যকে বাঁচান ! আমার কোন কথায় বিশ্বাস না হলে নিকটস্থ আলেমের কাছে বিস্তারিত জানুন…। সর্বনিম্ন পর্যায়ে আমার-আপনার থেকেই তৈরি হোক ক্ষুদ্র প্রতিরোধ !
[৫]
চারিদিকে যথাসম্ভব ‘করজে হাসানাহ’ বা সুদবিহীন ঋণের প্রচার ঘটান ! হোক ২-৩ হাজার টাকা করে ! আল্লাহর রহমতে দেশের অনেক জায়গাতেই দ্বীনদার ভাইয়েরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করজে হাসানার ছোট ছোট ফাউন্ডেশন গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন ! এই সামান্য করজে হাসানার ব্যবস্থাই হতে পারে সুদী অর্থব্যবস্থার উপর ক্ষুদ্র পর্যায় থেকে আপনার চপেটাঘাত !
সামর্থ্য থাকলে আজই তাই কিছু অনুদানের মাধ্যমে যোগদান করতে পারেন এই আন্দোলনে ! অথবা নিজের পাড়া-মহল্লা, গ্রাম-ইউনিয়নেই গড়ে তুলতে পারেন স্বতন্ত্র করজে হাসানা ফাউন্ডেশন… হোক তা মসজিদকে কেন্দ্র করে !
[৬]
‘ইসলাম’ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থা ! এখানে নেই কোনো বাড়াবাড়ি বা ছাড়াছাড়ির সুযোগ ! এখানে অপরাধ নির্মূলে আইন যেমন কঠোর করা হয়েছে, তেমনি সর্বোচ্চ লক্ষ্য রাখা হয়েছে মানুষের অধিকার রক্ষায় !
এখানে কারো গরিব থাকা সম্ভব না, আবার হারাম টাকার পাহাড় গড়াও অসম্ভব ! কেউ উপার্জনে অক্ষম হলে তার দায়িত্ব ইসলামী সরকারের ! আবার সম্পদের ব্যক্তি মালিকানা স্বীকৃত বলে হালাল উপার্জনে বিত্তবান হওয়াও ইসলামের দৃষ্টিতে নেতিবাচক কিছু নয় !
কেউ যদি পরিস্থিতির শিকার হয়ে অপরাধ করে, বাধ্য হয়ে অপরাধ করে… সেখানে রয়েছে হদ-কিসাস-কতলের মতো শক্ত বিধান সাথে সাথে শিথিল হয়ে যাওয়ার নিয়ম ! যেমন কেউ ক্ষুধার জ্বালায় চুরি করলে, পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিজের অনিচ্ছায় চুরি করলে সেখানে তার কোনো সাজা নেই ! উল্টো জবাবদিহিতা ও সাজা হবে ইসলামী সরকার প্রধানের ! আবার কেবল লোভ, লালসা, মোহ, বা ইচ্ছাকৃত চুরি করলে তার হাত কাটা পড়বেই ! হোক সে দেশের গভর্নর, কিংবা নেতার ভাতিজা !!! এটাই শরীয়াহ !!!
ইসলামী জীবনব্যবস্থা এমন এক আজব জিনিস— যেখানে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও তার নির্ধারিত বেতনের বাইরে হারাম উপার্জনের সুযোগ রাখে না ! আবার একজন অশিক্ষিত-মূর্খ লোকও তার পরিশ্রমী-যোগ্যতার বলে হতে পারে লাখপতি ! যেখানে নেই কারো ইগো, অহংকার বা রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে ভেটো দেওয়ার সুযোগ ! আপনার কি মনে হয়, এই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শরীয়াহ এরই প্রয়োজন নয় কি ???
[৭]
পুঁজিবাদী সুদী অর্থব্যবস্থাতে গরিবরা কেবল দিনকে দিন গরিবই হয়, আর ধনীরা কেবল দিন দিন ধনীই হয় ! যদিও সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় জিডিপিতে উন্নয়ন হচ্ছে বলে মনে হয় ! আর বাংলাদেশেও বাস্তবে এটাই ঘটছে এখন !
কেবল বস্তুগত হিসেবে, বা জিডিপি দিয়ে কোন দেশের উন্নতি হিসাব করার মূল সমস্যা এখানেই ! কিছু ধনকুবের আল্ট্রা লেভেল উপার্জনের জন্য জিডিপিও অল্প সময়ে উচ্চমাত্রায় চলে গেলেও বাস্তবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান থেকে যায় আগের মতন, কিংবা হয় আরো নিচুঁ ! আর বহির্বিশ্বে প্রচারিত হয় মহৎ উন্নয়ন হিসেবে !
তাই এই পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার কোন বড় ক্ষতি করতে না পারলেও অন্তত মনে মনে এর প্রতি রাগ পুষে রাখুন ! পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, লিবারেলিজম— ইত্যাদি মানবরচিত জীবনব্যবস্থা ও সমস্ত মানবরচিত কুফরী সংবিধানের প্রতি মন থেকে ঘৃণা রাখুন ! কেননা এটিই প্রমাণিত সত্য যে, “ইসলাম ব্যতীত মানবরচিত কোন মতবাদ-ই মানুষকে অতীতে শান্তি দিতে পারে নি, আর ভবিষ্যতেও শান্তি দিতে পারবে না !”
আর এই পুরো সিস্টেমের বিরুদ্ধে চলমান বিদ্রোহে নিজেকে কখনোই ক্ষুদ্র ভাববেন না ! নিজে এই বাজে জীবনব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিন, নিজের এই মনস্তত্ত্বকে ছড়িয়ে দিন আরো একশোজনের মাঝে ! মনে রাখবেন, “একজন একা আন্দোলন করে কখনো পুরো সমাজকে বদলে দিতে পারে না, কিন্তু সমাজটাকে বদলে দেওয়ার মতপ আন্দোলনগুলো একজন থেকেই শুরু হয় !”
আল্লাহু আ’লাম !!!
জাযাকাল্লাহু খাইরান !!!
আল্লাহ আমাদের সঠিক পথের দিশা দান করুন৷ আমীন।
© লেখাটা অবশ্যই কপি করুন ! (আদিত)