মাওলানা মামুনুল হকের “দরকার হলে আবার শাপলা চত্বরে যাব” কথাটা নিয়ে মাহবুবুল হক হানিফ বিদ্রূপ করে বলেছে- শাপলা চত্বর কি আপনাদের সফলতার প্রতীক? লজ্জা করে না আবার শাপলায় যাওয়ার নাম নিতে?
তার এই বক্তব্যকে অনেক দীনি ভাই সমর্থন করেছেন। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, শাপলা যদি হেফাজতের সাফল্য না হয়, তাহলে কারবালার ব্যাপারে কী বলবেন? কারবালা কি তাহলে সাফল্যের কিছু? কথায় কথায় যে আমরা বলি- দীন জিন্দা হোতা হ্যা হার এক কারবালা কি বা’দ! তখন লজ্জা করে না কারবালার কথা মুখে আনতে? তখন কেন বলি না- এটা কি হোসাইন রা. এর সাফল্য ছিল?
আসলে একজন প্রকৃত মুসলিমের কোনো লস নেই। কোনো পরাজয় নেই। হয় সে দীনের জন্য ত্যাগ দেয়, নিজেকে বিলিয়ে দেয়, জান্নাত পায়। না হয় বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। আমরা দীনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ দিয়ে হেরে গেলেও জিতে যাই৷
বাংলাদেশের মুসলমানগণ দীনের জন্য সেদিন সর্বোচ্চ ত্যাগটা দিয়েছিল শাপলায়। তাই কথায় কথায় যে আলেমগণ বলেন- “দরকার হলে আবার শাপলা চত্বরে যাব”, তখন এর মানে হল দীনের জন্য আমরা আবার সর্বোচ্চ ত্যাগটা দিব! তবু ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করবই।
হুযাইফা রা. এর কথা মনে নেই? রোমের বাদশাহ যখন তাকে গরম তেলে ফেলে দিতে যাচ্ছিল, তখন তিনি কাঁদছিলেন। বাদশাহ জিজ্ঞেস করলেন কাঁদছ কেন? মৃত্যুকে ভয় পাও? তিনি বললেন,
“না। মোটেও না। আমি তো কাঁদছি আমার জীবন মাত্র একটা। আমার জীবন যদি হতো পশম পরিমাণ, প্রতিটা জীবন এভাবে দীনের জন্য উৎসর্গ করতাম!
কই, ঐ বাদশাহ তো বললেন না- এভাবে মরে যাওয়াটা কি সফলতা? লজ্জা করে না এভাবে মরার জন্য আরও জীবন চাও!
দীনের জন্য যারা শহীদ হয়, তারা কিন্তু বিজয় দেখে যেতে পারেন না। তবু জান্নাতে প্রতিটা শহীদের কামনা, “আল্লাহ যেন তাকে দশ বার দুনিয়াতে পাঠান, তারা দীনের জন্য আবার শহীদ হবেন।”
[ সহিহ মুসলিম]
নবী নিজেও বলেছেন,
“আমার মন চায় যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হয়ে যাই, আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই৷ আবার জীবিত হই, আবার শহীদ হই…”
[ সহিহ বুখারী]
অথচ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সেনাপ্রধান!
আসলে দীনের জন্য বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াটা বেশি গৌরবের।
মিজান হারুন