?ধর্ষকের ধরনঃ রেপ মিথে বিশ্বাস (২৫% ধর্ষকেরা সাধারণত এসব মিথ্যা কথাগুলোতে বিশ্বাস করার কারণে ধর্ষন করে থাকে।)
.
ধর্ষণ সম্পর্কে আমাদের সমাজে বা ছেলেদের মনে কিছু ভুল ধারণার জন্ম নেয়। যেগুলো বলা হয় রেপ মিথ (Rape Myth)। এই ছেলেগুলো আগের ৮% এর মত বিকৃত রুচির না, স্বাভাবিক। কিন্তু কোন কারণে রেপ সম্পর্কে কিছু ভুল ধারণা তাদের মনে বিশ্বাসের পর্যায়ে চলে গেছে। প্রথমে দেখা যাক কি কি রেপ মিথ আমাদের মধ্যে প্রচলিত।
.
কিছু রেপ মিথ (Rape Myth)
1. পোশাক এবং ভাবভঙ্গিতেই বুঝা যায় যে, মেয়েটি সেক্স চায়।
2. মেয়েরা ধর্ষণ এনজয় করে।
3. মেয়েরা যদি চায়, রেপ নাও করতে দিতে পারে। করতে দিয়েছে বলেই করেছি।
4. রেপ বলে কিছু নেই, মেয়েরা জাস্ট শোধ নিতে রেপের দাবি তোলে। আসলে তখন সম্মতিই ছিল।
5. রেপ একবার করতে পারলে মেয়েটা তার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়বে।
6. সেক্স একবার করে ফেলতে পারলে সম্পর্কটা আর নষ্ট হবে না। মেয়েটা তাকে ছেড়ে আর কোথাও যাবে না। ইত্যাদি।
7. মেয়েটা যদি পরিচিত হয়, তাহলে এটা রেপ না।
8. মেয়ে শুরুতে ‘না’ ‘না’ করেই, একটু মজা পেতে শুরু করলেই আর বাধা দেয় না।
9. মেয়েদের ‘না’ আসলে ‘না’ নয়, মনে সায় ঠিকই আছে।
10. ছেলেদের সেক্স যদি হয় ৬ তাহলে মেয়েদের থাকে ৯; শুধু বারুদে আগুন দেওয়াটা কাজ।
২০১৪ সালে Psychology Today-তে Otterbein University-র মনোবিদ্যার অধ্যাপক Norm Shpancer সাহেব ধর্ষণের মনস্তত্ত্ব নিয়ে এক আর্টিকেলে লেখেন, কিছু লোকের মনে এক বিকৃত সামাজিক নিয়ম জেঁকে বসে যে, যেকোন মেয়ের সাথে ফ্লার্ট এবং ফোরপ্লে করলে তারা মিলনে রাজি হয়। ফলে যখন তারা এগুলো করে এবং মেয়েটির কাছে বাধা পায় তখন তারা রেগে গিয়ে ধর্ষণ করে। (some men internalize a pervasive social norm that flirting and foreplay lead to intercourse)
তো এই অবাস্তব মিথ আমাদের মধ্যে তৈরি হবার কারণ কি?
?কারণ
১. পর্নোগ্রাফির শুরুতে ছোট্ট একটু ড্রামা থাকে, যেখানে এসব জিনিস দেখানো হয়। কখনো দেখানো হয় টাকা বাড়িয়ে দিলে একজন অপরিচিত মেয়ে মুখমেহনে রাজি হয়ে যাচ্ছে, যে কিনা আসলে বেশ্যা নয়, সাধারণ মেয়ে। এডাল্ট মুভিগুলোতে কাহিনীর ফাঁকে এটাই দেখানো হয় যে, ডেটিং মানেই ডিনারের পর এলকোহল, একটু মিউজিক এবং বিছানা; এবং এটা প্রথম ডেটিং –এই। তারা সব ডেটিং-এ এটাই কামনা করে। কোথাও দেখানো হচ্ছে মেয়েরা রাফ সেক্স (কষ্ট দিয়ে মিলন) বেশি পছন্দ করছে। মোদ্দাকথা, পর্নোগ্রাফিই …[ঘ] একটা সুস্থ চিন্তার মানুষের মাঝে এসব মিথকে বিশ্বাসের পর্যায়ে নিয়ে যায়। বার বার নারীকে সস্তা ভোগ্যপণ্য রূপে উপস্থাপন দেখে দেখে সে সব নারীকেই পর্নো অভিনেত্রীর মত মনে করে।
.
২. ফিল্ম/মুভি তে সেক্স দৃশ্য কম থাকে, কিন্তু সেক্সের আগের কেমিস্ট্রি আরও বিশদ দেখানো হয়। ফলে এই কেমিস্ট্রি তারা বাস্তব মনে করে এবং বাস্তবে পেতে চায়। কখনো ধর্ষণদৃশ্যও দেখানো হয়। যা ধীরে ধীরে রেপ পর্নে আকর্ষণ তৈরি করতে পারে, ভালোই তো। হলিউড বলিউড মুভিগুলো এই রেপ মিথের পিছনে দায়ী…
.
ধর্ষকদের ব্যাপারে আরো জানতে এবং কারণ জানতে পড়ূন এখানেঃ https://islamicaudiobook.wordpress.com/2021/01/10/tyoes-of-rapist/