আজ থেকে ঠিক ১০০০ বছর আগে এই আমার কোন অস্তিত্বই ছিল না। ঠিক ১০০০ বছর পরেও থাকবে এই দূরাশাও আমি করি না।কিন্তু কেন?? কালের এই বিশাল পরিধিতে আমার এই ক্ষুদ্র জীবন এর কি মাহাত্ত্ব? কোনোই কি মূল্য নেই এই ‘আমি’ নামক সত্ত্বার? তাহলে কি ধরেই নেব যে আমি একটি অর্থহীন, তুচ্ছ বস্তু যার চালিকাশক্তি ‘আত্না’ নামক আরেকটি অজানা সত্ত্বা?

কোথায় ছিলাম এই আমি জন্মের আগে?
কোথায় যাবো এই আমি মৃত্যুর পরে?
কি জন্য, কিভাবে আমি এখানে এসে পড়লাম?
আমার সত্ত্বার উদ্দেশ্য কি?

সত্যিই ভাবতে অবাক লাগে যখন এসব প্রশ্নের উত্তর কাউকে জিজ্ঞেস করলে পাই না কিংবা গৎ বাধা কিছু অবান্তর উত্তর পাই যা না পারে আমার মনকে প্রশান্তি দিতে না পারে আমাকে চিন্তা করার কোনো উৎসাহ দিতে। কিন্তু, এসব প্রশ্নের উত্তর না পেলে যে আমার কোনো কাজেই মন বসবেনা, সব কাজকেই মনে হবে তুচ্ছ।বাবা-মা কিংবা সমাজের প্রচলিত রীতি-নীতি ও তত্ত্বেরপ্রতি আমার কোনো আস্থা নেই কারণ এসব এর উৎস হল অন্ধ ‘বিশ্বাস’।এই অন্ধ বিশ্বাস এর কারণেই আমার মন এর সাথে বুদ্ধিমত্তার, বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজের বা কাজ করার সাথে তার মৃত্যু পরবর্তী ফলাফলের কোনো যোগসূত্র পাই না। পূর্বপুরুষের চাপিয়ে দেওয়া মতবাদ বহন করতে গিয়ে আজ আমি ক্লান্ত,পরিশ্রান্ত।এভাবে আর কতদিন?

সমাজের চাপিয়ে দেওয়া ধারণার অন্ধ সমর্থন করতে গিয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে।আমাকে শিখানো হচ্ছে যে এই বয়সে আমার কি করা লাগবে। মিডিয়া, আমি বুঝতে না চাইলেও আমাকে বুঝিয়েই ছাড়বে যে একটি গার্লফ্রেন্ড না হলেই নয়। বিবাহিতগৃহিণীকে মিডিয়া পরকিয়া করতে প্রলোভিত করবেই।তার অফিসগামী স্বামীকেও প্রতিদিন ফিমেইল কলিগের সামনে নিজেকেস্মার্ট, ড্যাশিং প্রমাণ করতেই হবে!!
কেন? অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে কি কিছুই আসে না?কেন আমি অন্ধ অনুকরণ করতে বাধ্য থাকব?আমার কি মুক্ত চিন্তা করার কোনো অধিকার নাই? যে চিন্তা হবে সত্য, বাস্তবভিত্তিক ও নিরপেক্ষ।অন্ধ,কলুষিত ও পক্ষপাতযুক্ত নয়।
আসুন, আমরা দেখি কিভাবে আমার, আপনার, আমাদের সবার এই মহা প্রশ্নের নিরপেক্ষ, সত্য উত্তর পাওয়া যায়।নিঃসন্দেহে এটিই সকল মানুষের জীবনের সবচাইতে বড় প্রশ্ন। অন্য সকল সমস্যার চেয়ে এর গুরুত্ত্ব অনেক বেশি কারণ এটি আমাকেআমার অস্তিত্ত্বের অর্থ বলে দিবে, বলে দিবে আমার সত্তার উদ্দেশ্য কি।বলে দিবে আমার পূর্বের এবং পরের সব অজানা তথ্য।এবং আমাদের আত্না তখনই পাবে মানসিক প্রশান্তি।
আমাদের প্রশ্নের জবাব পেতে প্রথমে বিজ্ঞান বা science এর দ্বারস্থ হই। কিন্তু, হতাশ।এ বিজ্ঞান নিজেই অনেক কিছুর ব্যাখ্যা দিতে পারেনা।চুম্বক আকর্ষণ বা বিকর্ষণ করে কেন? বিজ্ঞান বলে- চুম্বকত্ব নামক ধর্মের জন্য।চুম্বকত্ব কেন থাকে? এটি আর বিজ্ঞান বলতে পারছে না। ডাইনিং টেবিল কিসের তৈরি? বিজ্ঞান বলে-কাঠের।কাঠের source কি? বিজ্ঞান বলে- গাছ।গাছের আগে কি? বিজ্ঞান বলে-বীজ।তার আগে কি?বিজ্ঞান বলে- আরেক গাছের ফল।তাহলে প্রথম গাছ কোথা থেকে আসলো?বিজ্ঞান বলে-big bang এর কথা নিশ্চ্য় জানেন?ও তাহলে তার আগে কি ছিল?বিজ্ঞান বলে-শূন্য।ও তাহলে শূন্যের আগে?বিজ্ঞান বলে-“শূন্যের আগে আবার কী?বলেতে পারবো না।আমি লজ্জিতও নই।কারণ,এই প্রশ্নের জবাব আমার আওতার বাইরে।আমার কাজ কোনো পূর্ব সৃষ্ট বস্তু থেকে গবেষণা করে মানব কল্যাণের জন্য তাকে কাজে লাগানো।কাঠ থেকে table বানানো হয়েছে তা আমি বলতে পারছি,কিন্তু table টা কে তৈরি করলো তা আমি কিভাবে বলবো?কোন physical property এর জন্য কোনো বস্তু কোন আচরণ করে তা আমি বলতে পারবো।কিন্তু, physical property কেনো আসলো বা কে বস্তুর এসব ভৌত ধর্ম বা innate property দিয়েছে তা আমি বলবো কিভাবে?আমি স্বীকার করছি যে,আমার মত Limited branch of knowledge দিয়ে এইসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া অসম্ভব।”
ব্যাথিত বদনে গেলাম Logic বা যুক্তিবিদ্যার দ্বারে। সেখানে আরো সমস্যা। Logic বলে-আমি এগোই step by step। কিছু assumption এর উপর ভিত্তি করে।কিন্তু,কোন একটি assumption ভুল হয়ে গেলেই সর্বনাশ।পুরো আমি বিশ্বাস করি না অদৃশ্যে। জিজ্ঞেস করলাম—শক্তি কি? Logic বলে-আমি জানি না।এইরকম কিছু আছে নাকি? মানুষ shock খায় কেনো? Logic বলে-বিদ্যুত আছে বলে।আমি বললাম-তোমার নিজস্ব মতামত দাও।science থেকে ধার নিচ্ছ কেনো? জিজ্ঞেস করলাম, আবেগ কোথা থেকে আসে?দেখা যায়?এটার গতিপথ কেমন? Logic বলে-পারবো না।তাহলে এগুলার ব্যাখ্যা কি নেই তোমার কাছে? Logic বলে-“দেখো, আমার কাজ শুরুই হয় কিছু প্রতিষ্ঠিত সত্যের উপর ভিত্তি করে।মুক্ত ও নিরপেক্ষ চিন্তা করার কথা বলে অনেক illogical question করে আমার অনেক logical time নষ্ট করেছ।দয়া করে, প্রস্থান করো।”
এবারে ভাবলাম আবেগে আপ্লুত হয়ে কিছু একটা করেই ফেলব।কিন্তু, ভাবলাম ধূর ছাই।আবেগ দিয়ে কি হবে?আবেগ তো আসেই অন্ধ অনুকরণ থেকে।আবেগের বশবর্তী হয়ে করা কোনো অনুচিত কাজকে পরে কখনই উচিত মনে হয়নাই।কিন্তু,ক্ষাণিক সময়ে তা ধরা সম্ভব হয়নাই।আবেগ পক্ষপাতদুষ্ট।সুতরাং, আবেগের ধারে কাছেও যাওয়া যাচ্ছে না এই প্রশ্নের জবাব পাওয়ার জন্য।

রইলো বাকি একটি অস্ত্র।স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধি বা Rational Knowledge।এই rational knowledge দিয়েই কিন্তু আমরা দরজা নক করলে বুঝি ওপাশে কেউ আছে।এই Rationality দিয়ে ই নিউটন বুঝেছিলেন নিচের দিকে কিছু একটা টানে সকল বস্তুকে।এই Rationality দিয়েই Archimedes বুঝেছিলেন ঘনত্ব এর ব্যাপারটা।সকল আবিষ্কার এবং মুক্ত চিন্তার পিছনে আছে নিরপেক্ষ Rational thinking।স্বাভাবিক ঘটনা থেকে কোনো অনুসিদ্ধান্তে আসার জন্য আমরা Rationality এর দ্বারস্থ হতে পারি।দেখি Rationality দিয়ে আমাদের প্রশ্নের কি জবাব মিলে।।

বি.দ্রঃ–অনুগ্রহ করে পরের episode এর জন্য অপেক্ষা করতে অনুরধ করা হল। জায়গা এবং সময় এর স্বল্পতার কারনে একটি note এ পুরোটা দেয়া গেলো না বলে দুঃখিত।