আদরের মেয়ে বড় হয়ে গেছে। সেই ছোট্ট মেয়েটি এখন বালেগা হয় গেছে। দ্বীনের আদেশ নিষেধগুলো মেনে চলা এখন ওর উপর ফরয। কিন্তু এক বছর গেল, দুই বছর গেল, মেয়ে পর্দা করছে না। আপনি কেন মেয়ের সাথে এখনো এ নিয়ে কথা বলছেন না? ‘ওর পর্দা করার নিয়্যাত আছে, আমি জানি। তবে আমি এখনই ওকে জোর করতে চাই না। আপনি জোর করতে চান না?! আচ্ছা যখন ওকে টীকা দেওয়ার সময় হয়েছিল তখনো কি একই কথা বলেছিলেন? এইভাবে চিন্তা করেছিলেন? নাকি তখন ‘জোর’ করেছিলেন? বসন্ত, চিকেনপক্স, পোলিও – এগুলো কি জাহান্নামের আগুনের চেয়েও ভয়ংকর? মেয়েকে টীকা দেওয়া আপনার দায়িত্ব, কিন্তু জাহান্নামের আগুন থেকে তাকে বাঁচানো আপনার দায়িত্ব না? মহান আল্লাহ্ কি বলেন নি, “হে ঈমানদারগণ,তোমরা নিজেদের ও তোমাদের পরিবার পরিজনকে আগুন থেকে বাঁচাও,যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর।” [সূরা আত-তাহরীম:৬] দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা কোনো ঘরের দিকে মেয়েকে এগিয়ে যেতে দেখলে আপনি কি তাকে থামাবেন না? নাকি তখনো বলবেন, ‘আমি ওকে “জোর” করতে চাই না।” অথচ জাহান্নামের আগুনের তুলনায় পৃথিবীর আগুন তো কিছুই না। মনে করুন, আপনার আদরের মেয়েটা কোনো অসুখ হয়েছে। আপনি ওর কাছ ছাড়া হলেই অসুখ বেড়ে যাবে। এমন অবস্থায় আপনি কি তাকে চোখের আড়াল করবেন? আপনি কি দু এক বছরের জন্য ওর কাছ থেকে দূরে চলে যাবেন, “যাতে ও নিজে নিজে সুস্থ হতে শেখে”? তাহলে পর্দার ক্ষেত্রে কেন ও’ নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নেয়া ‘র জন্য অপেক্ষা করছেন? নাকি আপনি মনে করেন, আজ যেসব গুনাহ সে কামাচ্ছে আল্লাহর সামনে সেগুলোর হিসেবে দেয়ার চেয়ে দুনিয়ার সামান্য অসুখ বিসুখ বেশি গুরুতর? আসলে বাস্তবতা কি জানেন? আল্লাহর হুকুমকে আপনি ছোট করে দেখেছেন, তাই আপনার সন্তানও ছোট করেই দেখবে। আল্লাহর আদেশ ও বিধানের তেমন কোনো গুরুত্ব আপনার কাছে নেই। তাই আপনার মেয়েও গুরুত্ব দিচ্ছে না। মা বাবা যদি ছোটবেলা থেকে সঠিকভাবে লজ্জাবোধ ও শালীনতা এর শিক্ষা নিতে,মেয়েকে আল্লাহর আনুগত্য করা শিখাতো, ইসলামের বুঝের উপর ওকে বড় করতো, তাহলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর সে নিজে থেকেই পর্দার ব্যাপারে সচেতন হতো। কিন্তু তা করা হয়নি। তাই না?